Covid-19 | রাজ্যে পরপর ৩ দিনে করোনায় মৃত্যু ৩ জনের! আবার কি ফিরে আসছে করোনা আতঙ্ক?
পরপর তিনদিনে বর্ধমানের হাসপাতালে করোনায় মৃত্যু ৩ জনের। তবে ওই ৩ জনের কেউই জানতেন না তারা কোভিড আক্রান্ত। অন্য সমস্যার চিকিৎসা করাতে গিয়ে ধরা পরে করোনা।
বর্ষাকাল আসতেই ডেঙ্গু (Dengue), ম্যালেরিয়া (Malaria), কনজাংটিভাইটিস (Conjunctivitis) নিয়ে আতঙ্কিত গোটা পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)। এবার নতুন করে ভয় ধরাতে আবার ফায়ার এলো করোনা (Corona)! রাজ্যে ৩ দিনে ৩জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু! এই ঘটনা রীতিমতো ২০২০-২১ এর করোনাকালের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে চলেছে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের।
সূত্রের খবর, বর্ধমান মেডিক্যালে (Burdwan Medical) ৩ দিনে ৩জন কোভিড (Covid-19) আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, মৃত ৩ জনের একজনের বাড়ি ভাতারে (Bhatar), একজনের কীর্ণাহারে (Kirnahar), আরেকজনের দেওয়ানদিঘিতে (Dewandighi)। একেই করোনায় মৃত্যু নিয়ে বেশ উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে হাসপাতাল চত্বরে, এমনকি গোটা রাজ্যে। তবে সব থেকে আশ্চর্যের বিষয়, মৃতদের কেউই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সেটা জানতেন না।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, অন্য সমস্যার চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ওই তিন ব্যক্তি। এনসেফ্যালাইটিসের (Encephalitis) সমস্যা নিয়ে ২ জন ভর্তি হয়েছিলেন এবং আরেকজন কিডনির সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বর্ধমান মেডিক্যালে। চিকিৎসার মাঝে সিসিইউ (CCU) ভর্তির জন্য করোনা পরীক্ষা করা হয়। আর তাতেই ধরা পরে করোনা আক্রান্ত তারা। মৃত ৩ জনের ডেথ সার্টিফিকেটেই করোনার উল্লেখ রয়েছে। যদিও করোনায় নয়, ওই ৩ জনের নিউমোনিয়ায় (Pneumonia) মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন বর্ধমান মেডিক্যালের অধ্যক্ষ। এই বিষয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তভ নায়েক বলেন, মৃতদের সবার অ্যান্টিজেন টেস্ট (RTPC) পজিটিভ ছিল। আরটিপিসির পজিটিভ না হলে কোভিডে মৃত্যু বলা যাবে না।
তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় ভাতারের ৬০ বছরের বাসিন্দার মৃত্যু হয়। সোমবার সকালে মারা যান দেওয়ানদিঘি থানা এলাকার বাসিন্দা ৬১ বছরের এক বৃদ্ধ। এরপর মঙ্গলবার সকালে ২৫ বছর বয়সী যুবকের মৃত্যু হয়। এই তিনজনেরই কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ ছিল। উল্লেখ্য, চারিদিকে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার কারণে জ্বর, সর্দি কাশিতে ভুগছেন অসংখ্য মানুষ। জ্বর নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বেশ কয়েকজন। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১০৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন ডেঙ্গিতে। তার মধ্যে জুলাই মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন। জেলায় আক্রান্ত ১০৯ জনের মধ্যে ভাতারে ২৩ জন, জামালপুরে ১২, কাটোয়া-১ নম্বর ব্লকে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ জন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বর্ধমান মেডিক্যালে খোলা হয়েছে ২০ বেডের ডেঙ্গি ওয়ার্ড। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫ জন ডেঙ্গি রোগী। তবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নতুন করে করোনায় মৃত্যুর ঘটনা বেশ ভয় ধরাচ্ছে চিকিৎসকদের মধ্যে।
উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের মে মাসে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) অর্থাৎ হু (WHO) ঘোষণা করে, কোভিড ১৯ আর 'আপৎকালীন স্বাস্থ্য বিপর্যয়’ নয়'। হু এর তরফ থেকে জানানো হয়, কোভিড টিকাকরণ দ্বারাই কোভিডকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে সেটাই কি সত্যি? বর্ধমানের হাসপাতালে কোভিডে মৃত্যুর ঘটনার পর এই প্রশ্ন সকলের।