Panchayat Election | কয়েক ঘন্টা বাদেই ভোট! লেহ থেকে এয়ারলিফ্টে আসছে বাহিনী! নিরাপত্তা নিয়ে এখনও চিন্তায় ভোটকর্মীরা!
আগামীকাল এক দফায় গোটা রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ভোটের আগের দিনই ১৫৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছেছে রাজ্যে। লেহ থেকেও উড়িয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
রাত পোহালেই পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election 2023)। ভোটের জন্য থমথমে পরিবেশ গ্রামীণ এলাকাগুলিতে। রীতিমতো ভয়ে রয়েছেন ভোটকর্মীরাও। ইতিমধ্যেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ৪৮৫ কোম্পানির মধ্যে ১৫৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছেছে রাজ্যে। জানা গিয়েছে লেহ (Leh) থেকে আসতে চলেছে কেন্দ্রিয় বাহিনীও (Central Force)।
আসন্ন ভোটের উত্তাপের জন্যই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। তবে সেই নিয়েও নানান জলঘোলা হয়। অবশেষে কেন্দ্রিয়মন্ত্রকের কাছে ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission)। চলতি সপ্তাহেই উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) থেকে রাজ্যে এসেছে ১০ কোম্পানি সশস্ত্র পুলিশ। গত রবিবার গভীর রাতে কলকাতা স্টেশনে (Kolkata Station) পৌঁছয় ভিনরাজ্যের পুলিশ বাহিনী। যা পরে যায় কুলতলি, সুন্দরবন কোস্টাল, বারুইপুর-সহ একাধিক এলাকায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি, ১২টি রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী থাকবে। সেই মতোই উত্তরপ্রদেশ থেকে আনা হয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী।
এছাড়াও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, আজই লেহ্ থেকে এয়ার লিফটিং (Air Lifted) করে আনা হচ্ছে ৫ কোম্পানি এবং ২ প্লাটুন কেন্দ্রীয় বাহিনী। যারা পৌঁছবে পানাগড়ে (Panangad)। সেখান থেকেই তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় মোতায়েন করা হবে। জানা গিয়েছে, ১ থেকে ২টি বুথে মোতায়েন থাকবে ৪ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। ৩ থেকে ৪টি বুথ আছে এমন জায়গায় মোতায়েন থাকবে ৮ জন জওয়ান। ৫ থেকে ৬টি বুথ আছে এমন জায়গায় থাকবে ১২ জন জওয়ান। ৭ এবং ৭-এর অধিক বুথে মোতায়েন থাকবে ১৬ জন জওয়ান। স্ট্রং রুমে মোতায়েন থাকবে ১ কোম্পানি অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৮০ জন জওয়ান।
ইতিমধ্যেই, গত সোমবার স্পর্শকাতর বুথের তালিকা আদালতে জমা দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আসন্ন নির্বাচনে মাত্র ৪ হাজার ৮৩৪ টি বুথ স্পর্শকাতর বলে হাইকোর্টে জানাল তারা। যা মোট বুথের মাত্র ৭.৮৪ শতাংশ। তবে বাংলায় নির্বাচনের এতো কম সময়ে এতো কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের ঘটনা নজিরবিহীন বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হলেও এখনও অনেক বুথেই পৌঁছয়নি বাহিনী। ফলে নিরাপত্তা নিয়ে বেশ চিন্তায় ভোটকর্মীরা। ইতিমধ্যেই ভোট কর্মীরা এসে পৌঁছেছেন রাজ্যের সব জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রগুলিতে। সেখান থেকে নিজেদের দায়িত্বভার বুঝে নিয়ে, প্রয়োজনীয় ব্যালট পেপার বক্স (Balot Paper Box) সহ একে একে পৌঁছে যাচ্ছেন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে। সব ভোটকর্মীরই একটাই বক্তব্য, কোনওরকমে ভালোয় ভালোয় ভোট মিটিয়ে বাড়ি ফিরতে চান তাঁরা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই রাজ্য জুড়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এর আগেই সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে একাধিকের। নির্বাচনের আগের দিনেও খুনোখুনির ঘটনা। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ওকরাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ২ কংগ্রেস কর্মীকে মারধর ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপ মারা হয়। এই ঘটনার অভিযোগের আঙ্গুল ওঠে শাসক দল তৃণমূলের (TMC) দিকে। অন্যদিকে দিনহাটার ভিলেজ ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের অস্থায়ী কার্যালয়ে ভাঙচুর ও বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে। পাশাপাশি দিনহাটাতে বিজেপি কর্মী-সহ ৩জনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে জোরকদমে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হলেও এখনও নিরাপত্তা নিয়ে থেকেই যাচ্ছে প্রশ্ন।