Zepto Company | করোনাকালে পড়াশোনা ছেড়ে বন্ধুর সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন ১৯ বছরের যুবক! বর্তমানে রিলায়েন্স-টাটাকে টেক্কা দিচ্ছেন কোটিপতি Zepto-র সিইও আদিত!

Friday, January 12 2024, 1:35 pm
highlightKey Highlights

মাত্র ১৯ বছর বয়সে পড়াশোনা ছেড়ে বন্ধু কৈবল্য ভোহরার সঙ্গে ভারতে অনলাইন গ্রোসারি ডেলিভারি কোম্পানি জেপ্টো খোলেন আদিত পলিছা। বর্তমানে কোটিপতি সেই যুবক। জানুন জেপ্টো কোম্পানির সাফল্যের কাহিনী।


জামাকাপড় থেকে প্রিয় রেস্তোরাঁর খাবার এমনকি মুদি খানা-বাজারের জিনিসপত্রও বর্তমানে এক ক্লিকে পাওয়া যায় বাড়িতে বসে। ব্লিনকিট (Blinkit) এর মতো একাধিক অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে চাল-ডাল থেকে শুরু করে সাবান শ্যাম্পু যাবতীয় অর্ডার করা যায় যেখানে ইচ্ছা বসে। এমনকি এই সামগ্রীগুলির ডেলিভারি পাওয়া যায় সেদিনই। এরকমই এক অ্যাপ্লিকেশন হলো জেপ্টো কোম্পানি (Zepto Company)। এই গ্রোসারি ডেলিভারি স্টার্ট-আপ জেপটো অন্যান্য কোম্পানির মতো লাগলেও একদমই কিন্তু নয়। কারণ টাটা, রিলায়েন্সের মতো সংস্থাকে কার্যত প্রতিযোগিতার মুখে ফেলে দেওয়া এই ভারতে অনলাইন গ্রোসারি ডেলিভারি কোম্পানি (Online Grocery Delivery Companies in India) জেপ্টোর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিটিও হয়তো আপনার থেকেও ছোট। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই পড়াশোনার পাট চুকিয়ে জেপ্টো প্রতিষ্ঠা করেন আদিত পলিছা (Aadit Palicha)। জানুন জেপ্টো কোম্পানির সাফল্যের কাহিনী।

জেপ্টো কোম্পানি । Zepto Company : 

Trending Updates

জেপ্টো হল মুম্বাই ভিত্তিক একটি স্টার্টআপ যা ১০-মিনিটের গ্রোসারির জিনিস পৌঁছে দেয় বাড়িতে। এই কোম্পানি আদিত পলিছা (Aadit Palicha) এবং কৈবল্য ভোহরা (Kaivalya Vohra) চালু করেছেন। জেপ্টো ২০২১ সালে তেরোটি বিভিন্ন এলাকায় ৮৬ এরও বেশি ডার্ক স্টোর মালিকদের সাথে কাজ করেছে, এক মিলিয়নেরও বেশি ডেলিভারি করেছে। বর্তমানে জেপ্টো হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়ে একাধিক শহরে কাজ করে। জেপ্টো শেয়ারের দাম (Zepto Share Price) ২,৭৫০/শেয়ার।

ভারতে অনলাইন গ্রোসারি ডেলিভারি কোম্পানি (Online Grocery Delivery Companies in India) জেপ্টো , মুম্বাই-ভিত্তিক স্টার্টআপ, সাত রাউন্ডের বেশি অর্থায়নে মোট $৫৯৭.৮  মিলিয়ন সংগ্রহ করেছে। সর্বশেষ ফান্ডিং রাউন্ড ৮ই নভেম্বর, ২০২৩-এ সম্পূর্ণ হয়েছিল যা জেপটোকে $৩১.৩ মিলিয়ন সংগ্রহ করতে সহায়তা করেছিল৷  জুন ২০২৩ পর্যন্ত, কোম্পানির মূল্য $৯০০ মিলিয়ন ছিল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে স্টার্টআপের প্রাথমিক বীজ তহবিল কনট্রারির নেতৃত্বে ছিল। আগস্ট ২০২৩-এ, জেপ্টো একটি সিরিজ ই ফান্ডিং রাউন্ডে $২০০ মিলিয়ন সংগ্রহ করে ইউনিকর্ন স্ট্যাটাস অর্জন করেছে, যার মূল্য $১.৪ বিলিয়ন। এটি ভারতের ১১ মাসের ইউনিকর্ন খরার সমাপ্তি চিহ্নিত করেছে। স্টেপস্টোন গ্রুপ গুডওয়াটার ক্যাপিটাল এবং বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে এই তহবিল রাউন্ডের নেতৃত্ব দিয়েছে। 

আদিত পলিছা ও কৈবল্য ভোহরা । Aadit Palicha and Kaivalya Vohra :

২০২০ সালে মুম্বইয়ে জেপ্টো -র পথ চলা শুরু হয়। আদিত পালিচা এবং কৈবল্য ভোহরা - দুই বন্ধু মিলে এই ব্যবসা শুরু করেন। লকডাউনের সময় মুদিখানার দোকান বন্ধ ছিল। সেই ফাঁকটা পূরণ করার ভাবনা থেকেই জেপ্টোর গোড়াপত্তন। 5স্ট্যানফোর্ডের কৃতী পড়ুয়া ছিলেন দু'জনেই। কিন্তু ব্যবসা করার অদম্য ইচ্ছা থেকে মাঝপথেই পড়াশোনা ছেড়ে দেন বছর ১৯ এর আদিত পলিছা। নিজের সংস্থা তৈরি করে নিজে রোজগার করার চেষ্টা জারি ছিল অনেক দিন ধরেই।  সেজন্যই হয়তো মাত্র ২ বছরেই জেপ্টোর  হাত ধরে কয়েকশ কোটির মালিক বর্তমান বছর ২৩ এর আদিত পালিচা ও কৈবল্য ভোহরা।

স্কুলের পাঠ শেষ করে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে যান আদিত। কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যায় ক্লাস। দূর থেকে ভার্চুয়ালি পড়াশোনা করার কোনও অর্থ খুঁজে না পেয়ে তিনি মন দেন ব্যবসায়। মাত্র এক বছরে তাঁর সংস্থার বাজারমূল্য পৌঁছেছে ৭,৪০০ কোটিতে। আর আদিতের সম্পত্তির পরিমাণ ১২০০ কোটি টাকা। আদিতের সঙ্গে কো ফাউন্ডার হিসেবে রয়েছেন তাঁর ছোটবেলার বন্ধ কৈবল্য ভোহরা (Kaivalya Vohra)।

 মাত্র ১৭ বছর বয়সেই ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করেছিলেন আদিত। গো পুল নামে একটি সংস্থা খুলেছিলেন তিনি। কিন্তু তাতে সাফল্য আসেনি। আমেরিকায় পড়ার স্বপ্ন চুকে যাওয়ার পর কৈবল্যর সঙ্গে তিনি শুরু করেন, কিরণকার্ট নামে অপর একটি সংস্থা। ১০ মাসের বেশি চলেনি সেই সংস্থাও। কিন্তু বারবার পড়ে যাওয়া আর বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর নজির তৈরি করেছেন আদিত। ২০২১ সালে তাঁরা শুরু করেন জেপটো।  অনেকটা গ্রোফার্সের মতোই বিজনেস মডেল। মাত্র ১০ মিনিটে বাড়ির দোরগোড়ায় ডেলিভারি করে এই সংস্থা। নিজের বুদ্ধিমত্তা, পরিশ্রম দিয়েই গড়েছেন সংস্থা জেপ্টো। আদিত  বুঝিয়ে দিয়েছেন, সাফল্যের কোনও বয়স হয় না। বর্তমানে অনলাই গ্রসারি ডেলিভারি সংস্থা জেপ্টো -র সিইও আদিত। ভারতের কনিষ্ঠতম সিইও-দের মধ্যে একজন তিনি। 

ভারতে ই-কমার্স স্পেসে এখনও মুদি দ্রব্যের সেগমেন্টটি ফাঁকাই রয়েছে। বর্তমানে ব্লিঙ্ক-ইট  ছাড়া সেভাবে কোনও সংস্থাই এই ক্ষেত্রে ব্যবসা করছে না। ফ্লিপকার্ট, রিলায়েন্স এই ব্যবসা বাড়ানোর চেষ্টা করলেও এখনও সেভাবে সুবিধা করে উঠতে পারেনি। সেই বাজারটাই ধরতে চাইছে জেপ্টো। এই কোম্পনিই ২০২৩ সালে ভারতের প্রথম ইউনিকর্ন হয়ে ওঠে, ১.৪ বিলিয়ন মূল্যায়নে ২০০ মিলিয়ন সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File