দেশ

Indian Wrestlers Protest | কুস্তিগীরদের পাশে কপিল দেব, নীরজ! বিপক্ষে মন্তব্য পিটি উষার!

Indian Wrestlers Protest | কুস্তিগীরদের পাশে কপিল দেব, নীরজ! বিপক্ষে মন্তব্য পিটি উষার!
Key Highlights

এখনও অব্যহত কুস্তিগীরদের অবস্থান বিক্ষোভ। তারই মধ্যে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে মন্তব্য পিটি উষার। কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়ালেন কপিল দেব, নীরজ চোপড়া।

কুস্তি ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং (Brij Bhushan Sharan Singh)-এর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ। যার জেরে পথে নেমে প্রতিবাদ করছেন ভারতের গন্যমান্য কুস্তিগীররা। এই ঘটনায় দেশের খেলা জগতে পড়েছে বড় ছাপ। শুরু হয়েছে নানান তর্ক বিতর্ক। কিন্তু এবার নতুন করে এই তর্কে জড়ালেন দেশের প্রাক্তন অ্যাথলিট তথা অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান পিটি উষা (PT Usha)। প্রাক্তন অ্যাথলিটকে কটাক্ষ করলেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Maitra)।

যৌন হেনস্তা এবং ফেডারেশনে আর্থিক গন্ডগোলের অভিযোগ দায়ের করা হয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে। এরপর গত ৫ দিন অর্থাৎ ২৩ এপ্রিল থেকে যন্তর মন্তরে (Jantar Mantar) অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন  বজরং পুনিয়া (Bajrang Puniya), সাক্ষী মালিক (Sakshi Malik), ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat), সঙ্গীতা ফোগাট (Sangeeta Phogat), সত্যওয়ার্ত কাদিয়ান (Satyawart Kadian), সোমবীর রথি (Somveer Rathi) এবং জিতেন্দ্র কিনহার (Jitender Kinha) মতো প্রমুখ আন্তর্জাতিক মঞ্চে পদকজয়ী কুস্তিগীররা। এই অবস্থান বিক্ষোভ বজায় রয়েছে এখনও। গোটা ভারতকে নাড়িয়ে দেওয়ার মতো এই ঘটনার পরেও অভিযুক্ত ব্রিজ ভুষণের পাশে দাঁড়ালেন পিটি উষা।

বৃহস্পতিবার পিটি উষা বলেন, কুস্তিগীরদের এই ধরণের আচরণ একেবারে বিশৃঙ্খল। কুস্তিগীরদের বিরুদ্ধে তাঁর আরও অভিযোগ, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন তারা। রাস্তায় বসে প্রতিবাদ না করে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কমিটিতে অভিযোগ জানানো উচিত ছিল তাঁদের।

“কুস্তিগিরদের আচরণ একেবারে বিশৃঙ্খল। তাঁদের জন্যই দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। রাস্তায় বসে প্রতিবাদ না করে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কমিটিতে অভিযোগ জানানো উচিত ছিল তাঁদের। মেরি কম, শরত কমলের মতো খেলোয়াড়রা রয়েছেন এই কমিটির নেতৃত্বে।”

- পিটি উষা

এই মন্তব্যের পরেই ক্ষুব্ধ দেশের প্রথম সারির দুই মহিলা সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী (Priyanka Chaturvedi)। পিটি উষাকে কটাক্ষ করে মহুয়া মৈত্র-এর প্রশ্ন, অ্যাথলিটরা যদি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে থাকেন, তাহলে শাসক দলের যে সাংসদ দীর্ঘ বছর ধরে রেসলিং ফেডারেশনের (WFI) প্রধান পদে বসে রয়েছেন এবং যার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ,  তিনি কী দেশের জন্য ভালো কাজ করছেন?

অন্যদিকে প্রাক্তন অ্যাথলিটকে সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীর তোপ, একজন যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত সাংসদ যখন নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়, তখন দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় না! এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সংসদ আরও বলেন, ভীষণ দুঃখিত! কিন্তু এখন সকল মহিলা অ্যাথলিটদের হয়ে আওয়াজ তোলা উচিত। কারণ তারাই দেশের জন্য পদক জয় করে দেশবাসীকে গর্বিত করেন।

একজন যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত সাংসদ যখন নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়ায়, তখন দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। আমি ভীষণ দুঃখিত ম্যাডাম, কিন্তু আমাদের সকলের উচিত মহিলা অ্যাথলিটদের হয়ে আওয়াজ তোলা, কারণ এরাই দেশের জন্য পদক জিতে আমাদের গর্ববোধ করার সুযোগ করে দেয়।

প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী

প্রসঙ্গত, শুক্রবার অ্যাথলিটদের পাশে দাঁড়ালেন অলিম্পিক সোনাজয়ী নীরজ চোপড়া (Neeraj Chopra) শুক্রবার টুইট করে নীরজ লেখেন, অ্যাথলিটরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কড়া পরিশ্রম করেন। সেখানে দেশের সেরা কুস্তিগিরদের সুবিচারের দাবিতে পথে নামার ঘটনা দুঃখজনক। ঘটনার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও করেন নীরজ। সঙ্গে নির্যাতিতদের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন তিনি।

অ্যাথলিটরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কড়া পরিশ্রম করেন। সেখানে দেশের সেরা কুস্তিগিরদের সুবিচারের দাবিতে পথে নামতে দেখে খারাপ লাগছে। নির্যাতিতদের পাশে আছি। বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই কর্তৃপক্ষের উচিত এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। অ্যাথলিটদের সুবিচার দিতে হবে। অ্যাথলিট হোন বা সাধারণ মানুষ, প্রত্যেকের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা দরকার।

নীরজ চোপড়া

 বুধবারেই আন্দোলনরত কুস্তিগিরদের সমর্থনে সরব হয়েছিলেন ভারতের আরেক সোনাজয়ী অভিনব বিন্দ্রাও। অন্যদিকে কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়িয়ে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি করেছেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেবও। ইনস্টাগ্রামে প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের ছবি পোস্ট করে কপিল দেব লেখেন, “ওরা কি কোনওদিন বিচার পাবেন?”

প্রসঙ্গত, ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং-এর বিরুদ্ধে নাবালক সহ সাতজন মহিলা কুস্তিগীরকে শ্লীলতাহানি, নির্যাতন এবং শোষণ করার অভিযোগ জানান দেশের কুস্তিগীররা। কিন্তু সাংসদ পদ যাওয়া তো দূর, তার বিরুদ্ধে প্রথম্মে এফআইআর (FIR) পর্যন্ত নেয়নি দিল্লি পুলিশ। যার ফলে ঘটনার বিরুদ্ধে ধরনায় বসেন মহিলা কুস্তিগীররা। পাঁচদিন ধরে বারবার পুলিশে অভিযোগ জানায় ফেডারেশনের ৭ জন মহিলা কুস্তিগীর। পরে অবশেষে বৃস্পতিবার দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) জানানো হয়, এফআইআর নিতে প্রস্তুত তারা। ভারতীয় অলিম্পিক্স কমিটির তরফে আপাতত বক্সিং ফেডারেশনে কাজ চালানোর জন্য গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের অ্যাড-হক (Ad HOC) কমিটিও। ৪৫ দিনের মধ্যেই বক্সিং ফেডারেশনের নির্বাচন আয়োজন করতে চলেছে এই কমিটি। তবে মাথা নত করতে নারাজ অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ। অন্যদিকে নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে অব্যাহত কুস্তিগীরদের প্রতিবাদ সভাও। সেখানেই তাঁরা রাত্রিযাপনও করছেন ভারতের গন্যমান্য অ্যাথলিটরা।