লাইফস্টাইল

World Hypertension Day | নিয়ন্ত্রণে রাখুন রক্তচাপ, জানুন হাইপারটেনশন হলে কী করবেন কী করবেন না!

World Hypertension Day | নিয়ন্ত্রণে রাখুন রক্তচাপ, জানুন হাইপারটেনশন হলে কী করবেন কী করবেন না!
Key Highlights

উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ৪ জনের মধ্যে ভুগে থাকেন অন্তত একজন। হাইপারটেশন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ১৭ই মে পালন করা হয় বিশ্ব হাইপারটেনশন দিবস।

বর্তমান যুগে বয়স যেমনই হোক না কেন প্রায় সকলেই ভুগছে হাই ব্লাড প্রেশার (High Blood Pressure) অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপে। ফলে হাই ব্লাড প্রেশার নিয়ে সাধারণ মানুষদের সতর্ক করতে এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করতে আজ অর্থাৎ ১৭ই মে বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় ওয়ার্ল্ড হাইপারটেনশন ডে’তে (World Hypertension Day)।

একটি গবেষণাযা দেখা গিয়েছে,  ভারতবর্ষে প্রতি চারজনের মধ্যে অন্তত একজন  উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভোগেন। আগে এই রোগকে বার্ধক্যজনিত কারণের রোগ বলে মনে করা হলেও বর্তমানে দেখা যায় তরুণ তরুণীদের মধ্যে হাই ব্লাড প্রেশার অত্যন্ত সাধারণ। তবে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সময় মতো ঠিক না করলে বা নিয়ন্ত্রণ না করলে পরবর্তীকালে হতে পারে হৃদরোগ (Heart Disease) বা স্ট্রোক (Stroke)। যার ফলে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে গোটা বিশ্বে প্রতি বছর এই দিন বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস পালন করা হয়।

বিশ্ব হাইপারটেনশন দিবসের ইতিহাস | History of World Hypertension Day :

২০০৫ ১৪ই মে পালন করা হয় বিশ্বের প্রথম বিশ্ব হাইপারটেনশন দিবস। পরবর্তী বছরে অর্থাৎ ২০০৬ সাল থেকে এই দিবস পালন করা হয় ১৭ই মে। এই দিবস পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয় ওয়ার্ল্ড হাইপারটেনশন লীগ (World Hypertension League) এর তরফ থেকে।

হাইপারটেনশনের উপসর্গ | Symptoms of Hypertension :

 উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব,  মাথা ঘোরা এবং শ্বাস নিতে অসুবিধা। কিছু ক্ষেত্রে নাক থেকে রক্তপাত, অস্পষ্ট দৃষ্টির মতোও অসুবিধা হয়ে থাকে।

  • তীব্র মাথাব্যথা
  •   বুক ব্যাথা
  •   শ্বাসকার্যের সমস্যা
  •   মাথা ঘোরা
  •   দুশ্চিন্তা ও বিভ্রান্তি
  •   বমি বমি ভাব ও বমি
  •   অস্পষ্ট দৃষ্টি
  •   নাক দিয়ে রক্তপাত
  •   অনিয়মিত হৃদস্পন্দন

হাইপারটেনশনের কারণ | Causes of Hypertension :

সিডিসি অর্থাৎ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (Centers for Disease Control and Prevention) মতে,  উচ্চ রক্তচাপ সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিকশিত হয়। এটি অস্বাস্থ্যকর জীবন পরিচালনার জন্য হয়ে থাকে। এছাড়াও  যেমন অপর্যাপ্ত দুর্বল খাদ্যাভ্যাস, শরীর চর্চা না করলেও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে। অন্যদিকে বেশ কিছু রোগের ক্ষেত্রে যেমন স্থূলতা (Obesity) এবং ডায়াবেটিসের (Diabetes) মতো রোগের কারণেও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপও হতে পারে।

হাইপারটেনশন  হলে কী করবেন কী করবেন না ? | Do’s and Don'ts If You Have Hypertension : 

  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন। শরীর সহ্য করতে পারবে এমন ওজন রাখবেন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন সকালে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ (Free Hand Exercise) করুন অথবা রোজ অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটুন। বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই (Body Mass Index) রাখতে হবে ২৫-এর কম। বিএমআই হল, একজন ব্যক্তির ওজন কিলোগ্রাম বা পাউন্ডকে, মিটার বা ফুট উচ্চতার বর্গ দিয়ে ভাগ করে যে পরিমান পাওয়া যায় তা ওই ব্যক্তির উচ্চ শরীরের চর্বি নির্দেশ করে।
  • যে সকল ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের নুন নিয়ন্ত্রণে খেতে বলেন ডাক্তাররা। হাই প্রেশারের (High Pressure) রোগীদের সারা দিনে ২ গ্রামের থেকে বেশি নুন খাওয়া উচিত নয়। তাও সর্বোচ্চ ৫ গ্রাম পর্যন্ত নুন খেতে পারেন। নুন ধমনীর ভিতরে জমা হয়ে ধমনী মোটা করে বন্ধ করে দেয়। যার ফলে হাইপারটেনশন রোগীদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ মেনে নুন খেতে বলা হয়। যদিও রান্না করার সময় নুন  সেভাবে মেপে দেওয়া যায়না, ফলে রান্নায় নুনের পরিমান স্বাভাবিক রাখতে পারেন। কিন্তু ভুলেও খাবারের সঙ্গে আলাদা করে আবার কাঁচা নুন খাবেন না।
  • যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় আক্রান্ত তাদের মদ (Alcohol) এবং সিগারেট (Cigarettes) থেকে দূরে থাকাই ভাল। এই ধরণের নেশা থেকে হাইপারটেনশন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি।
  • রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাবারে ভারসাম্য রাখা অত্যন্ত জরুরি। ফলে আপনার ডায়েটে রাখুন উদ্ভিজ্জ ফ্যাট (Vegetable Fat), অলিভ অয়েল (olive oil), ওমেগা অয়েল (Omega Oil), ভেজিটেবিল অয়েল (Vegetable Oil)। অতিরিক্ত ফ্যাট (Excess Fats),  প্রাণীজ ফ্যাট (Animal Fats), তেলজাতীয় খাবার (Oily Foods) ও কার্বোহাইড্রেট (Carbohydrates) এড়িয়ে চলুন।

এছাড়াও ৪০ বছরের উর্ধে বয়স হলে অবশ্যই কিছু মাস অন্তর অন্তর ব্লাড প্রেসার মাপুন। প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন অর্থাৎ হু (WHO) - এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে ৩০ থেকে ৭৯ বয়সীদের মধ্যে প্রায় ১.২৮ বিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপে। ফলে আমাদের সকলকেই উচ্চ রক্তচাপ সচেতনতা আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। যার জন্যই আজকের দিন অর্থাৎ বিশ্ব হাইপারটেনশন দিবস অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।