স্বাস্থ্য

Typhoid diet: টাইফয়েড থেকে সেরে ওঠার পর কি খাবেন আর কি খাবেন না, সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা

Typhoid diet: টাইফয়েড থেকে সেরে ওঠার পর কি খাবেন আর কি খাবেন না, সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা
Key Highlights

টাইফয়েডের মতো জটিল অসুখ প্রাথমিক ভাবে সেরে গেলেও, তার রেশ অনেকদিন থেকে যায়। তাই বেশ কিছু দিন খাওয়াদাওয়া নিয়ম মেনে করতে হবে।

ডেঙ্গি ম্যালেরিয়া বা করোনা ছাড়াও ক্ষনে ক্ষনে জ্বর হওয়া টাইফয়েডের এক অন্যতম উপসর্গ। বিশেষত বর্ষা এলেই ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণজনিত টাইফয়েড জ্বরের ঘটনা প্রায়শই দেখা যাচ্ছে। গা-হাত-পা ব্যথা, মাথাব্যথা ছাড়াও টাইফয়েড হলে পেটে ব্যথা ও খিদে কমে যাওয়া ও পেটের গোলমাল হওয়ার মত উপসর্গ দেখা যায়। একটা সময় ছিল, যখন টাইফয়েড হলে কমপক্ষে মাস দেড়েক গৃহবন্দি থেকে বার্লি আর গলা ভাত খেয়ে থাকতে হত। 

কিন্তু বর্তমান সময়কালে চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। ওষুধ দিয়ে চটপট টাইফয়েডের মতন রোগ সারানো গেলেও খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে কিছু সাবধানতা মেনে চলতে হয় বলে জানালেন গ্যাসট্রোএনটেরোলজিস্ট সুনীল বরণ দাস চক্রবর্তী। 

যাঁরা টাইফয়েড থেকে সদ্য সেরে উঠেছেন, তাঁদের কিছু দিন বিশ্রাম নেওয়া উচিত। অফিসে ছুটি না পেলে দরকার হলে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করতে পারেন। এই ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত অসুখে ওজন কমে যাওয়ার পাশাপাশি দুর্বলতা বাড়া ও হজম ক্ষমতা কিছুটা কমে যাওয়াও অন্যতম উপসর্গ।

টাইফয়েড থেকে সদ্য সেরে ওঠার পর খাদ্য তালিকা :-

কি কি খাবার খাবেন না 

টাইফয়েড সেরে গেলেও হজম ক্ষমতা স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগে এবং কিছু দিন খাবারে বিধিনিষেধ থাকে। তাই খাবারের ব্যাপারে নিয়ম মেনে চলা ভাল।

১। হাই ফাইবার ফুড খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। কিছুদিনের জন্য স্যালাড জাতীয় খাবার একদমই খাওয়া যাবে না। 

২। কাঁচা পেঁয়াজ, বাঁধাকপি, ব্রকোলি খাওয়া চলবে না।

৩। ব্রাউন রাইস, কিনোয়া, বাজরা, ওটস না খাওয়াই ভাল।

৪। মুসুর ডাল, রাজমা, ব্ল্যাক বিনস, ঘুগনি খাবেন না।

৫। ভাজাভুজি বিশেষ করে ডিপ ফ্রাই একেবারে মানা। পট্যাটো চিপস, ডোনাট, তেলেভাজা, সিঙ্গাড়া বাদ।

৬। ফ্ল্যাক্সের বীজ, চিয়ার বীজ, কুমড়োর বীজ বন্ধ।

৭। শুকনো লঙ্কা বা লঙ্কা দিয়ে রান্না করা খাবার খেলে হজমের সমস্যা হবে। অল্প কাঁচা লঙ্কা ও সামান্য গোলমরিচ চলতে পারে। 

কী কী খাবার খাবেন

১। এই সময়টায় পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাওয়া দরকার। ভাত হজম হয় সহজে। তাই হালকা মশলায় রান্না মাছ, চিকেন ও সব্জি দিয়ে ভাত খাওয়া ভাল।

২। মুগ ডালের খিচুড়িও যথেষ্ট সহজপাচ্য। মুখ বদলাতে খিচুড়ি খাওয়া যায়।

৩। আলু সেদ্ধ নুন গোলমরিচ ও সামান্য মাখন দিয়ে জলখাবারে খেতে পারেন।

৪। মুগ ডালের দোসাও ভাল পথ্য।

৫। ডিম সেদ্ধ বা ডিমের পোচ খাওয়া যায়।

৬। মধু দিয়ে ফলের কাস্টার্ড পুষ্টিকর এবং উপাদেয়।

৭। পরিজ, ইডলি জাতীয় খাবারও টাইফয়েডের পর দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে।

৮। জলীয় খাবারের পরিমাণ বেশি হলেই ভাল।

৯। ডাবের জল, পাতিলেবু-পুদিনার শরবত, টাটকা ফলের রস, দইয়ের ঘোল বা বাটার মিল্ক খেতে হবে নিয়ম করে। টাইফয়েডে এক দিকে জ্বর ও পেটের সমস্যায় ডিহাইড্রেশন হয়, অন্য দিকে প্রচুর ঘাম হয় বলেও শরীর থেকে জল বেরিয়ে যায়। তাই বেশি জলীয় খাবার খাওয়া দরকার।

১০। পর্যাপ্ত জল আছে এমন ফল খেতে হবে। তরমুজ, মোসাম্বি বা বাতাবি লেবু, শসা, জামরুল-সহ সময়ের ফল খাওয়া উচিত।

১১। দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া ভাল। তবে অনেকের দুধ সহ্য হয় না। তাঁরা দই, ইয়োগার্ট, লস্যি, ছানা ও পনির খেতে পারেন।

১২। চিকেন ক্লিয়ার স্যুপ, মাশরুম স্যুপ, গাজর, বিনস স্যুপ, মুগ ডালের স্যুপ খাওয়া যেতে পারে।

১৩। মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হলে শুধুমাত্র মধু দিয়ে বাড়িতে তৈরি পুডিং ও কাস্টার্ড খাওয়া যেতে পারে।

১৪। চটজলদি ক্যালোরির জোগান দিতে পারে পাকা কলা।

টাইফয়েড থেকে সেরে উঠতে প্রোটিন ভিটামিন ও পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট-সহ খাবার খাওয়া দরকার। সুষম ও সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে মাস খানেক। তবে বেশির ভাগ মানুষেরই অরুচি হয় ও বেশি খেতে ভাল লাগে না। এঁদের অল্প অল্প করে বারে বারে খাওয়া উচিত।