দেশ

West Bengal Weather | মিগজাউমের প্রভাবে প্রায় গোটা দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি! কবে থামবে বর্ষণ? ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কেমন থাকবে শীতের আমেজ?

West Bengal Weather | মিগজাউমের প্রভাবে প্রায় গোটা দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি! কবে থামবে বর্ষণ? ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কেমন থাকবে শীতের আমেজ?
Key Highlights

পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে শুক্রবার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস প্রায় গোটা বঙ্গে। আইএমডি সূত্রে খবর, চলতি বছর খুব বেশি ঠান্ডা পড়বে না।

ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম (Cyclone Michaung) রীতিমতো তামিলনাড়ু-অন্ধ্রপ্রদেশে তান্ডব চালিয়ে, প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি করে বর্তমানে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণাবর্তে। তবে এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে বুধবার থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে বঙ্গে। ৬ই ডিসেম্বর, বুধবার সন্ধেবেলা থেকেই বৃষ্টি শুরু হয় কলকাতা-সহ বঙ্গের বেশ কিছু অঞ্চলে। এরপর আজ, ৭ই ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবারও সকাল থেকেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে ভিজছে তিলোত্তমা ও বাংলার বেশ কয়েক জেলা। তবে কবে থামবে এই বৃষ্টি? কবেই বা পড়বে শীত? জানুন কী বলছে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News)!

বৃষ্টির পূর্বাভাস :

পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ বর্তমানে ছত্তিশগড়ে অবস্থান করছে। তার প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ কয়েক পশলা হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিন দিনভর কলকাতা-সহ হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়ায় বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে খবর। পাশাপাশি বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে ভিজতে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম।

 আগামী ৪৮ ঘণ্টায় কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের আকাশ মেঘলা থাকবে বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News)। আজ ও কাল পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান ও নদিয়ায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে , বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে মূলত দক্ষিণবঙ্গের ছয় জেলায়। এই ছয় জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই ছয় জেলা হল হুগলি, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান এবং নদিয়া। পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (West Bengal weather) এর খবর, একনাগাড়ে না হলেও, শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির কোনও কোনও অংশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত চলবে। এই জেলাগুলি হল দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, দুই বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া। উল্লেখ্য, এ দিন কলকাতার তাপমাত্রা ২০ থেকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে।

অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) এর খবর। বৃষ্টি হতে পারে মালদহ এবং দিনাজপুরে। আগামী ২৪ ঘন্টায় দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। আগামী তিন-চার দিন উত্তরবঙ্গের তাপমাত্রা প্রায় একইরকম থাকবে। সিকিমেও হালকা তুষারপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।

 মিগজাউম ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট :

দক্ষিণ ভারতে আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম এখন শুধু নিম্নচাপ। বিগত কয়েকদিনে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম ধ্বংসের চিহ্ন এঁকে দিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, পুদুচেরির বিস্তীর্ণ এলাকায়। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তামিলনাড়ু। তবে বৃষ্টি কমলেও, দুর্ভোগ কমেনি এতটুকু। এখনও জলের তলায় চেন্নাইয়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চল।  তিরুভাললুর সালাই অঞ্চলে ৪ দিন ধরে জমে রয়েছে জল। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে জায়গায় জায়গায় উপড়ে গেছে বিদ্যুতের খুঁটি। ফলে বিদ্যুৎ নেই চেন্নাইয়ের অনেক অঞ্চলেই। এমনকি জলমগ্ন চেন্নাইয়ের কিলপক মেডিক্যাল কলেজও। ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট (Cyclone Update) অনুযায়ী, গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণঝড় মিগজাউম। স্থলভাগে ঢুকে ধীরে-ধীরে শক্তি হারাচ্ছে সে। তেলঙ্গানা হয়ে ছত্তীসগঢ়ের দিকে সরবে এই নিম্নচাপ। তবে ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট (Cyclone Update) অনুযায়ী, এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বঙ্গের ওপর। দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মিগজাউমের জন্য।

বৃষ্টি থেমে শীতের আগমণ :

ডিসেম্বর মাসের শুরু হলেও এখনও শীতের আমেজ সেভাবে নেই পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (West Bengal weather) এ। এমনকি ঘূর্ণিঝড়ের ফলে শুরু হয়েছে বৃষ্টিও। এমত অবস্থায় প্রায় সকলেরই প্রশ্ন, কবে থামবে বৃষ্টি এবং কবেই বা পড়বে ঠান্ডা? এ প্রসঙ্গে হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবারের পর রাজ্যে উত্তুরে হাওয়ার পথ খুলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকেই ঠান্ডা উপভোগ করা যেতে পারে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ৮ তারিখ, শুক্রবার থেকে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে। আর তারপরই তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। কলকাতার তাপমাত্রা ১০ তারিখ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামার সম্ভাবনা রয়েছে। কিছুদিন তাপমাত্রা এরকম থাকবে।       

তবে শীতের আভাস দিতে গিয়ে খুব একটা সুখকর বার্তা দেয়নি ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (Indian Meteorological Department) বা আইএমডি (IMD)। চলতি বছরে শীতের তিন মাসে ঠান্ডা খুবই হালকা থাকবে। আইএমডি বলছে, চলতি শীতের মরশুমে কার্যত ফিকে হবে ঠান্ডা। পূর্বাভাস বলছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা ও তার পরিমাণও কমবে। এর আগে ২০২২ সালেও উষ্ণতর শীতের পূর্বাভাস দিয়েছিল। সেবার স্বাভাবিকের থেকে সামান্য বেশি দেখা গিয়েছিল শীতের তাপমাত্রা।  চলতি বছরের শীতের মরশুমে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশির দিকেই থাকবে বহু এলাকায়। মধ্য ও উত্তর পশ্চিম ভারত বাদে এই পরিস্থিতি তৈরি হবে। মধ্য ও উত্তর পশ্চিম ভারতে শীতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক বা তার নিচেই থাকবে বলে পূর্বাভাস। সূত্রের খবর, দেশের বহু প্রান্তে ২০২৩ এর ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকবে। অর্থাৎ যে শীতের আশায় বঙ্গবাসী বসে রয়েছে হয়তো সেরকম জাকিয়ে ঠান্ডা এ বছর অনুভব করতে পারবে না পশ্চিমবঙ্গ -সহ ভারতের অধিকাংশ।