Weather | আগামী দুদিন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সতর্কতা! ধসের জেরে হিমাচলে গত চার দিনে মৃত ৬০!
সক্রিয় রয়েছে মৌসুমী অক্ষরেখা। দক্ষিণ বাংলাদেশের ওপর তৈরি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। যা ক্রমশ সরছে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে। এর ফলেই আগামী দুদিন গোটা দক্ষিণবঙ্গে বাড়বে বৃষ্টিপাত।
মাঝে দিন কয়েকের বিরতির পর আজ, ১৬ই অগাস্ট, বুধবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গে বাড়তে চলেছে বৃষ্টি। আলিপুর আবহাওয়া দফতর (Alipore Meteorological Department) সূত্রে খবর, বর্তমানে সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখা। অন্যদিকে, দক্ষিণ বাংলাদেশের (Bangladesh) ওপর তৈরি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। যা ক্রমশ সরছে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে। এর প্রভাবেই দক্ষিণবঙ্গের উপকূলে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে চলেছে বলে খবর। বুধ ও বৃহস্পতিবার কলকাতা (Kolkata) সহ দক্ষিণবঙ্গে প্রায় গোটা দিন জুড়েই বৃষ্টি হবে বলে সম্ভাবনা।
বুধবার হাওয়া অফিসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এদিন দু-এক পশলা ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে পূর্ব মেদিনীপুর (East Medinipur) ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (South 24 Parganas)। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই। আজ এবং আগামী কাল উপকূলের জেলাগুলিতে ও পশ্চিমের জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ দু-এক পশলা ভারী বৃষ্টিতে ভিজতে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা , পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর (East and West Medinipur) এবং ঝাড়গ্রাম (Jhargram)। দক্ষিণবঙ্গের উপকূলে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে।
জানা গিয়েছে, এদিন কলকাতাতেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বজায় থাকবে। কলকাতায় আংশিক মেঘলা আকাশ থাকবে। বৃষ্টি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুই দিনে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা। এদিন সকালে শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.৬ ডিগ্রি যা, স্বাভাবিকের ১ ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৭১ থেকে ৯৫ শতাংশ এবং বৃষ্টি হয়েছে ২২.৬ মিলিমিটার।
দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বৃদ্ধি পাবে বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। বিশেষত উপকূলবর্তী অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হবে বলে রয়েছে পূর্বাভাস। এদিকে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকছে উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রেও। জানা গিয়েছে, আজ দার্জিলিং (Darjeeling), কালিম্পং (Kalimpong), আলিপুরদুয়ার (Alipurduar), কোচবিহার (Cooch Behar) ও জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে আগামীকাল থেকে অর্থাৎ ১৭ই থেকে ১৯সে অগাস্ট বৃষ্টির পরিমাণ কমবে উত্তরবঙ্গে। যদিও রবিবার ফের তা বাড়বে বলেই জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। বৃহস্পতিবার বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar)।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, বর্তমানে আপাতত মৌসুমী অক্ষরেখাটি গোরক্ষপুর (Gorakhpur) ও পাটনা (Patna) থেকে কোচবিহার হয়ে পূর্ব দিকে নাগাল্যান্ড (Nagaland) পর্যন্ত বিস্তৃত। এছাড়াও, দক্ষিণ বাংলাদেশের ওপরে তৈরি হয়েছে একটি ঘুর্ণাবর্তও। যা ক্রমশ সরছে দক্ষিণ-পশ্চিমের দিকে। প্রসঙ্গত, রবিবার রাত থেকে মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং ধসের জেরে হিমাচল প্রদেশের (Himachal Pradesh) জনজীবন বিপর্যস্ত। ভারী বৃষ্টি, বন্যা পরিস্থিতি এবং ধসের কারণে গত চার দিনে হিমাচল প্রদেশে মারা গিয়েছেন অন্তত ৬০ জন!
মৌসম ভবন (Mausam Bhavan) সূত্রে খবর, গত সোমবারের প্রবল বৃষ্টি এবং হড়পা বানের জেরে ভেসে গিয়েছে শিমলার (Shimla) সামার হিলের শিব বাওয়ারি মন্দির (Shiv Bawari Temple, Summer Hill)। এই দুর্ঘটনার জেরে মন্দিরের তলাতেই চাপা পড়েছেন বহু ভক্ত। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ১১টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, ধসের সময় অন্তত ৩০ জন ভক্ত এবং পুণ্যার্থী মন্দিরের ভিতরেই ছিলেন। সব মিলিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৬০ এ।
দুর্ঘটনার পর সেখানে পৌঁছান হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু (Himachal Pradesh Chief Minister Sukhwinder Singh Sukhu)। ইতিমধ্যেই ধসপ্রবণ এলাকায় ঘরবাড়ি খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ধসের কারণে যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা মেরামতের দায়িত্ব সরকার নেবে বলেও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী সুখু। পাশাপাশি, এদিন অর্থাৎ বুধবার হিমাচলের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখা হতে পারে।
মৌসম ভবনের প্রধান এম মহাপাত্র জানান, বর্ষার সময় তৈরি হওয়া নিম্নচাপ অঞ্চল স্বাভাবিক অবস্থানের তুলনায় উত্তরে রয়েছে। বর্তমানে হিমালয়ের পাদদেশে রয়েছে সেই নিম্নচাপ অঞ্চল। অনুমান, এর কারণেই হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে অনবরত ভারী বৃষ্টি হয়ে চলেছে। জানা গিয়েছে, আরও খারাপের দিকে যেতে চলেছে হিমাচল প্রদেশের পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) আবহাওয়া। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে উত্তরাখণ্ডে। দুই রাজ্যের বিক্ষিপ্ত এলাকায় জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতাও (Red Alert)। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ (Arunachal Pradesh), মেঘালয় (Meghalaya), নাগাল্যান্ড (Nagaland), অসম (Assam), মণিপুর (Manipur), মিজোরাম (Mizoram), ত্রিপুরায় (Tripura)। পাশাপাশি, ওড়িশা (Odisha), আন্দামান (Andaman) এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ (Nicobar Islands), ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) এবং পশ্চিমবঙ্গেও (West Bengal) বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাস।
- Related topics -
- আবহাওয়া
- ভারত
- দক্ষিণবঙ্গ
- উত্তরবঙ্গ
- শহর কলকাতা
- আবহাওয়া দফতর
- আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর
- মৌসম ভবন
- হিমাচলপ্রদেশ
- হিমাচল প্রদেশ
- উত্তরাখন্ড
- বাংলাদেশ
- ভূমিধস
- ঘূর্ণাবর্ত
- রাজ্য