Vidyasagar Setu | বন্ধ হতে চলেছে দ্বিতীয় হুগলি সেতু! স্বাস্থ্য খারাপ একাধিক কেবলের! বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তা!

Thursday, August 17 2023, 6:42 am
highlightKey Highlights

মেরামতির কাজে নভেম্বর থেকে বন্ধ হতে চলেছে দ্বিতীয় হুগলি সেতু। টানা ৩১ বছর ধরে লক্ষাধিক যানবাহন চলাচল করে জরাজীর্ণ অবস্থা বিদ্যাসাগর সেতুর। খারাপ অন্তত ১৪টি কেবলের। এই সেতু বন্ধ হওয়ায় কলকাতার যানজটে চাপ বাড়তে চলেছে।


খুব শীঘ্রই বন্ধ হতে চলেছে কলকাতার (Kolkata) অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইওভার, দ্বিতীয় হুগলি সেতু (Second Hooghly Bridge)। টানা ৩১ বছর ধরে দৈনন্দিন লক্ষাধিক যান ও পণ্য পরিবহণের জন্য এতটাই সেতুর স্বাস্থ্য দুর্বল হয়ে পড়েছে যে আর ফেলে রাখা যাচ্ছে না ফ্লাইওভারের সংস্কারের কাজ। তবে এই সংস্কারের কাজ চলাকালীন দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকবে এই সেতু। ফলে এর প্রভাব শহরের যানজটে পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা।

খুব শীঘ্রই বন্ধ হতে চলেছে কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইওভার দ্বিতীয় হুগলি সেতু 
খুব শীঘ্রই বন্ধ হতে চলেছে কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ ফ্লাইওভার দ্বিতীয় হুগলি সেতু 

সূত্রের খবর, আগামী ১লা নভেম্বর থেকে বিদ্যাসাগর সেতু (Vidyasagar Setu) বন্ধ থাকবে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (Chief Secretary Hari Krishna Dwivedi) উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক করেছেন। তাতে পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কর্তারা। জানা গিয়েছে, প্রত্যেকদিন অসংখ্য যান এই সেতু ধরে চলাচল করার জন্য এই উড়ালপুলের পরিস্থিতি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে, অবিলম্বে সম্পূর্ণ বদলে ফেলতে হবে এর জীর্ণ কেবলগুলি। সূত্রের খবর, ৮২৩ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটির দু’ধার মিলে মোট ১৫২টি কেবল রয়েছে। প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী, এর মধ্যে প্রায় ১৪টি কেবলের স্বাস্থ্য খুবই খারাপ। পাশাপাশি বাকি কেবলগুলির স্বাস্থ্যও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আশঙ্কা আরও কেবলের স্বাস্থ্য খাড়াও থাকতে পারে।

প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় ১৪টি কেবলের স্বাস্থ্য খুবই খারাপ
প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় ১৪টি কেবলের স্বাস্থ্য খুবই খারাপ

১৯৯২ সালে চালু হয় এই সেতু। হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্সের (Hooghly River Bridge Commissioners) বা এচআরবিসি (HRBC) তত্ত্বাবধানে তৈরি হওয়া এই সেতুটি ডিজাইন করেছিল জার্মান সংস্থা‌ শ্লায়েশ বার্জারম্যান অ্যান্ড পার্টনার (German firm Schlaich Bergermann & Partners)। সেই কারণে সেতু সংস্কারের কাজ হবে জার্মান সংস্থার নজরদারিতেই। প্রাথমিকভাবে এই কাজে প্রায় ১৬৩ কোটি টাকা খরচ হবে বলে ধরা হলেও, তা কিছুটা বাড়তে পারে বলেই জানিয়েছেন এক আধিকারিক।

 সাঁতরাগাছি উড়ালপুল সংস্কারের সময়ের মতো  বিদ্যাসাগর সেতুতে কাজ চলাকালীন নিবেদিতা সেতু দিয়ে বেশিরভাগ ভারী গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হতে পারে
 সাঁতরাগাছি উড়ালপুল সংস্কারের সময়ের মতো বিদ্যাসাগর সেতুতে কাজ চলাকালীন নিবেদিতা সেতু দিয়ে বেশিরভাগ ভারী গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হতে পারে

তবে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর পরিষেবা বন্ধ থাকলে বেশ বিপদে পড়তে চলেছেন কলকাতাবাসী। কারণ দিল্লি (Delhi Road) এবং মুম্বই রোড (Mumbai Road) ধরে চটজলদি কলকাতায় প্রবেশের একমাত্র উপায় এই বিদ্যাসাগর সেতু। দৈনন্দিনই লক্ষাধিক গাড়ির চলাচলে ব্যস্ত থাকে এই সেতু। যার কারণে এই উড়ালপুল বন্ধ থাকলে তার ভয়াবহ প্রভাব পড়বে যান চলাচলে। সেক্ষেত্রে কলকাতায় প্রবেশের পথ বলতে নিবেদিতা সেতু (Nivedita Setu) অথবা হাওড়া ব্রিজ (Howrah Bridge)। জানা যাচ্ছে, এক একটি দিকের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে প্রায় চার মাস। ফলে বিদ্যাসাগর সেতুতে কাজ চলাকালীন নিবেদিতা সেতু দিয়ে বেশিরভাগ ভারী গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হতে পারে। ঠিক যেমন সাঁতরাগাছি উড়ালপুল (Santragachi Flyover) সংস্কারের ক্ষেত্রে করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজবে পুলিস কর্তৃপক্ষ।

এক একটি দিকের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে প্রায় চার মাস
এক একটি দিকের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে প্রায় চার মাস

তবে যতই হোক দ্বিতীয় হুগলি সেতুর পরিষেবা বন্ধ হলে ব্যাপক চাপ পড়বে কলকাতার যানজটে। সেই জন্য সেতু যাতে সম্পূর্ণ বন্ধ না করতে হয়, প্রাথমিকভাবে অবশ্য সেই ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলে খবর। জানা গিয়েছে, এর জন্য ছয় লেনের সেতুর যেদিকে কাজ হবে, তার দু’টি লেন বন্ধ রেখে একটি খোলা রাখার প্রস্তাব তোলা হচ্ছে। এক আধিকারিক জানান, যখন কলকাতাগামী অংশে কেবল বদলানোর কাজ হবে, তখন সেই দিকের ধারের দু’টি লেন বন্ধ রেখে একটি লেন দিয়ে গাড়ি পাস করানো হবে। আর অপর প্রান্তের তিনটির মধ্যে একটি লেনও খুলে দেওয়া হবে কলকাতাগামী যানবাহনের জন্য। উল্টো দিকে কাজ চলাকালীনও একই ভাবে গাড়ি পাস করানো হবে। কিন্তু এইভাবে গাড়ি চলাচল করানোর ভাবনা চিন্তা বিপদজনক হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ইঞ্জিনিয়ার মহল। তবে যাই পরিকল্পনা করা হোক না কেন, দ্বিতীয় হুগলি সেতু বন্ধ করলে কলকাতায় যানজটের চাপ বাড়বেই। ফলে বিকল্প রাস্তা কী হতে চলেছে তা নিয়ে বেশ চিন্তায় রয়েছে কলকাতার ট্রাফিক অধিকর্তা থেকে শুরু করে শহরবাসী, নিত্যযাত্রীরা।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File