Weather | কমতে চলেছে বৃষ্টি, ৫ ডিগ্রির বেশি বাড়বে তাপমাত্রা! দুদিনের প্রবল বৃষ্টিতে আশার আলো ফলনে!
গভীর নিম্নচাপ সরে যাওয়ায় বাড়তে চলেছে তাপমাত্রার পারদ। ৭ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গে। যদিও দিন কয়েকের বর্ষণে লাভ হয়েছে শস্য ফলনে। আশার আলো দেখছেন চাষিরা।
প্রায় দুদিন ধরে ভালো বৃষ্টির দাপট চললো কলকাতা (Kolkata) সহ দক্ষিণবঙ্গে। লাগাতার বৃষ্টির জেরে শহরের অনেকাংশই হয়ে পড়েছিল জলমগ্ন। কমেছিল তাপমাত্রাও। তবে আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই ফের রূপ পাল্টাতে চলেছে আবহাওয়া। আগামী ৭২ ঘন্টায় কমবে বৃষ্টি। ৫ ডিগ্রিরও বেশি তাপমাত্রা বাড়বে বলে আশঙ্কা আবহাওয়াবিদদের।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, এদিন রাজ্যের বেশিরভাগ জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ দুই-এক পশলা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে পাসিং শাওয়ার বা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। তবে আদ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে চরম পর্যায়ে। বৃহস্পতিবার থেকেই ক্রমশ বৃষ্টিপাত কমবে। বৃহস্পতিবার শহর কলকাতার আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা।
উল্লেখ্য, গভীর নিম্নচাপের জেরে বেশ ভালো বর্ষণ হয় গোটা দক্ষিণবঙ্গে। পরশু রাতের টানা বৃষ্টির জেরে তাপমাত্রা ৩৪.২ থেকে একধাক্কায় কমে ২৯.৫ ডিগ্রি কমে যায়। গতকাল কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমে হয়েছিল ২৯.৫ ডিগ্রি, যা স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি কম। এদিন শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু ইতিমধ্যেই গভীর নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে সরে গিয়েছে ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) দিকে। ফলে যেমন বৃষ্টিপাত কমবে, তেমনই কমবে তাপমাত্রাও। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামী ৭২ ঘন্টায় ৭ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
তবে দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। রাজ্যের বেশিরভাগ জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ দুই-এক পশলা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। তবে গভীর নিম্নচাপ সরে যাওয়ায় জলীয় বাষ্পের জন্য দক্ষিণবঙ্গের অস্বস্তি আরও বাড়বে। আর্দ্রতা থাকবে ৯০ শতাংশ। ফলে ঘর্মাক্ত পরিস্থিতি তৈরি হবে।
দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কমলেও উত্তরবঙ্গে বাড়তে চলেছে বর্ষণ। দার্জিলিং (Darjeeling), কালিম্পং (Kalimpong), কোচবিহার (Cooch Behar) এই জেলাগুলিতে রয়েছে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা মালদা (Malda) ও উত্তর-দক্ষিণ দিনাজপুরে (North-South Dinajpur)। এদিকে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বিহার (Bihar) এবং ঝাড়খণ্ডে (Jharkhand)। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে পূর্ব মধ্যপ্রদেশ (East Madhya Pradesh), উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh), উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand), হিমাচলপ্রদেশ (Himachal Pradesh) এবং রাজস্থানে (Rajasthan)।
প্রসঙ্গত, অতি গভীর নিম্নচাপের জেরে মঙ্গল-বুধবারের বেশি মাত্রার বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টির ঘাটতি মিটেছে। ফলে এই বৃষ্টিকে চাষ-আবাদ, বিশেষ করে আমন চারা রোয়ার ক্ষেত্রে খুবই ইতিবাচক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বীজতলা তৈরি হয়ে গেলেও বৃষ্টির ঘাটতির কারণে রোয়ার কাজ অনেকটাই থমকে ছিল। এই পরিস্থিতিতে সেচের জলের ব্যবস্থাসহ চারা রোয়ার উদ্যোগ নিচ্ছিল প্রশাসন। অবশেষে যেখানে ধানচাষ করা সম্ভব নয়, সেসব জায়গার জন্য বিকল্প ফসল চাষের প্রস্তুতি শুরু হয়। কারণ ১৫ই অগাস্টের মধ্যে ধানচারা রোয়া শেষ করতে না-পারলে ফলন হ্রাসের আশঙ্কা থাকে। তবে এই মাসের শুরুতেই ব্যাপক মাত্রায় বৃষ্টি হল। আর এই বৃষ্টিতেই ফলন চাষে অনেকটা সমস্যা অনেকটা মিটল বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।