Vegetable Price Hike | বাজারে সবজির 'অগ্নিমূল্য'! আদা-কাঁচালঙ্কা বিকোচ্ছে ৩০০,১০০ তে! কেন বাড়লো আনাজের দাম?

Thursday, December 21 2023, 2:15 pm
highlightKey Highlights

আকাশ ছোঁয়া দাম আদা, রসুন থেকে শুরু করে কাঁচা লঙ্কা, টমেটোর। কালোবাজারি রুখতে রাজ্যের বিশেষ ট্যাস্ক ফোর্স ঘুরছে বাজারে। আনাজের দাম এতো কেন বাড়লো জানালেন ব্যবসায়ীরা।


বেশ কয়েকদিন ধরেই অগ্নিমূল্য একাধিক সবজির (Vegetable Price Hike)। টমেটো থেকে শুরু করে কাঁচা লঙ্কা সবেরই বর্তমানে আকাশ ছোঁয়া দাম। যার ফলে রীতিমতো নাজেহাল আম জনতা। এই অবস্থায় মূল্যবৃদ্ধি এবং জিনিসপত্রের কালোবাজারি আটকাতে ইতিমধ্যেই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার (West Bengal Government)

বাজারে বেশ কয়েকদিন ধরেই অগ্নিমূল্য একাধিক সবজির 
বাজারে বেশ কয়েকদিন ধরেই অগ্নিমূল্য একাধিক সবজির 

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই কাঁচা আনাজের দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা (Kolkata) এবং শহরতলির বাজারগুলিতে কাঁচালঙ্কা বিকোচ্ছে ৩০০ টাকা কিলো দরে। দু’ দিন আগেই এই লঙ্কা অনেকে কিনেছিলেন ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। কেবল লঙ্কাই নয়, সেঞ্চুরি দাম পার করেছে  উচ্ছে, করলার মতো একাধিক সবজিই। বর্তমানে সবজি বাজারে মূল্য কিছুটা নিম্নরূপ।

  • টমেটোর বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ১৫০ টাকা
  • আদার বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ৩০০ টাকা
  • কাঁচালঙ্কার দাম সাম্প্রতিক কিছুটা কমে হয়েছে  ১০০ টাকা
  • রসুনের বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ২০০ টাকা
  •  পেঁয়াজের বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা
টমেটোর বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ১৫০ টাকা
টমেটোর বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ১৫০ টাকা
  • ঢেঁড়শের বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা
  • পটলের বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ৬০ টাকা
  • ঝিঙের বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ৮০ টাকা
  • বিনসের বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ৮০ টাকা
  • উচ্ছের বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ৬০ টাকা
  • বেগুনের দাম কিছুটা কমে এখন বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ৫০ টাকা
  • চন্দ্রমুখী আলুর বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা
  • লাউয়ের বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা
কাঁচালঙ্কার দাম সাম্প্রতিক কিছুটা কমে হয়েছে  ১০০ টাকা
কাঁচালঙ্কার দাম সাম্প্রতিক কিছুটা কমে হয়েছে ১০০ টাকা

 সবজি বাজারের এই অগ্নিমূল্য নিয়ে বিক্রেতারাও একই প্রশ্ন শুনতে শুনতে নাজেহাল। বাজারে গেলে সবারই একই প্রশ্ন, কবে কমবে সবজির দাম? সামান্য খোঁজ করতেই জানা গিয়েছে, বর্তমানের আগুন বাজারের অন্যতম কারণ হলো আবহাওয়া। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে চাষাবাদে। বাজারের বহু ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, এ বছর একটানা তীব্র গরমে ঝিমিয়ে পড়েছিল সবজির গাছ। তবে প্রচন্ড গরমের পর হঠাৎ টানা সাত দিনের বৃষ্টিতে পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়স এবং কাঁচালঙ্কা গাছে যা ফুল এসেছিল তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ সবজির গাছগুলি পচে গিয়েছে। ফলে ধারণা, যেহেতু এখনো সাবেকি পদ্ধতিতে চাষ করা হয় তাই আবহাওয়ার এই বদলের সঙ্গে গাছ নিজেকে মানিয়ে ফসল দিতে সময় লাগবে আরও বেশ কয়েক দিন।

একটানা তীব্র গরমের পর হঠাৎ টানা সাত দিনের বৃষ্টিতে সবজির গাছগুলি পচে গিয়েছে জানান ব্যবসায়ীরা
একটানা তীব্র গরমের পর হঠাৎ টানা সাত দিনের বৃষ্টিতে সবজির গাছগুলি পচে গিয়েছে জানান ব্যবসায়ীরা

অন্যদিকে, এ রাজ্যে আনাজের আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে মণিপুরের ঘটনাকেও দায়ী করছেন অনেকে। তাদের মতে, এ রাজ্যে আদার ফলন হলেও তার মান ভাল নয়। পশ্চিমবঙ্গে যে উচ্চমানের আদা আসে তা আমদানি করা হয় মণিপুর থেকে। কিন্তু বর্তমানে বেশ দীর্ঘদিন ধরে জাতি সংঘর্ষে উত্তপ্ত মণিপুর। ফলে সেজান থেকে ভালো মানের আদা আসাও বন্ধ। যার ফলেই দাম বেড়েছে।  আনাজ ব্যবসায়ীদের মতে, উত্তরবঙ্গে বর্ষা না কমলে আনাজের দাম আরও বাড়তে পারে।

উচ্চমানের আদা আসে মণিপুর থেকে তবে সেখানকার পরিস্থিতির জন্য কমেছে আমদানি বেড়েছে দাম 
উচ্চমানের আদা আসে মণিপুর থেকে তবে সেখানকার পরিস্থিতির জন্য কমেছে আমদানি বেড়েছে দাম 

আবহাওয়া এবং মণিপুরের উত্তপ্ত পরিস্থিতির কারণ ছাড়াও আনাজ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভিন রাজ্য থেকে যখন ফসল এ রাজ্যে আমদানি করা হচ্ছে তখন একাধিক রাস্তায় গাড়ি আটকে টাকা নিচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি, বেড়েছে জ্বালানি ও পরিবহণ ব্যবস্থার মূল্যও। যার ফলে ফসল আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে পিছু পা হয়েছেন অনেকেই। এছাড়াও, এ বছর অনেক কৃষকই সবজি ছেড়ে অন্য চাষে চলে গিয়েছেন। কারণ গত বছর আনাজপাতির দাম বেশি ওঠেনি। গত বছর এই সময়ে গ্রীষ্মকালীন সব্জি বিক্রি হয়েছিল জলের দরে। ঝিঙে, করলা এবং ঢেঁড়সের দাম বাজারে এতটাই নেমে গিয়েছিল যে মাঠ থেকে সব্জি তোলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন চাষিরা।  ফলে এবছরও যাতে ওই রকম লোকসান না হয় তার জন্য বাঁকুড়ার কৃষকদের অনেকেই সব্জি চাষে আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছেন। এর ফলে বাজারে উৎপাদন কমে যাওয়ায় বেড়েছে চাহিদা। যার প্রভাব পড়ছে সবজির দামে।

ভিন রাজ্য থেকে ফসল এ রাজ্যে আমদানি করার সময়  একাধিক রাস্তায় গাড়ি আটকে টাকা নিচ্ছে পুলিশ
ভিন রাজ্য থেকে ফসল এ রাজ্যে আমদানি করার সময় একাধিক রাস্তায় গাড়ি আটকে টাকা নিচ্ছে পুলিশ

এই অগ্নিমূল্য সবজির বাজারদামের মধ্যেই চলেছে দেদার কালোবাজারিও। এবার এই নিয়েই বিশেষ পদক্ষেপ নিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। গত রবিবার থেকেই শহরের একাধিক বাজার পরিদর্শনে নেমেছে বিশেষ টাস্ক ফোর্স (Special Task Force)। রাজ্য সরকারের আশা, এর ফলে আগামী দশ দিনের মধ্যে এই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আসবে। সবজির বাজার দর কমাতে এবং কালোবাজারি রুখতে কেবল টাস্ক ফোর্স গঠনই নয়, মধ্যবিত্তের দুশ্চিন্তা কমাতে সুফল বাংলার স্টলে (Sufal Bangla Stall) ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রির ব্যবস্থাও করছে নবান্ন (Nabanna)।

শহরের একাধিক বাজার পরিদর্শনে নেমেছে বিশেষ টাস্ক ফোর্স
শহরের একাধিক বাজার পরিদর্শনে নেমেছে বিশেষ টাস্ক ফোর্স

সূত্রের খবর, গত শনিবার সবজির বাড়তে থাকা মূল্য নিয়ে একটি বৈঠক আয়োজন করা হয়। সেই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, টমেটো, করলা, পটল, বেগুন, ঢ্যাঁড়সের মতো আনাজ সুফল বাংলা বিপণিতে অন্তত ২০-২৫ শতাংশ কম দামে বিক্রি করা হবে। অর্থাৎ খুচরো বাজারে যে টমেটোর দাম কেজি প্রতি ৯৯ টাকা তা সুফল বাংলায় তা পাওয়া যাবে ৮৯ টাকায়।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File