Summer Health Tips | গরমে কাহিল হয়ে পড়ছে শিশু? বিশেষ কিছু বিষয়ে নজর দিলেই এই গরমেও সুস্থ্য থাকবে আপনার ছোট্ট সন্তান!

Tuesday, April 23 2024, 9:46 am
highlightKey Highlights

প্রাপ্তবয়স্করা এই গরমে কিছুটা মানিয়ে নিতে পারলেও ছোটোদের একেবারেই হাঁসফাঁস অবস্থা। শিশু বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ছোটরা এই সময় চট করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। গরমে অত্যধিক ঘাম, বমি বা ডায়েরিয়ার মতো রোগ হলে শরীর থেকে বেশি পরিমাণে জল বেরিয়ে যায়। তখন ডিহাইড্রেশন হয়।


গরমে নাজেহাল অবস্থা সকলের। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে যাচ্ছে। ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ ছোট থেকে বড় সকলেই। বড়রা এই গরমে কিছুটা মানিয়ে নিতে পারলেও ছোটোদের একেবারেই হাঁসফাঁস অবস্থা। এদিকে প্রচন্ড গরমে গরমের ছুটি এগিয়ে এনেছে রাজ্য সরকার। তবেই এখনই সব স্কুলে ছুটি পড়েনি। ফলেই এই তীব্র দহনজ্বালাতেই বাড়ির বাইরে বেরোতেই হচ্ছে খুদেদের। এই বিষয়ে শিশু বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ছোটরা এই সময় চট করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। গরমে অত্যধিক ঘাম, বমি বা ডায়েরিয়ার মতো রোগ হলে শরীর থেকে বেশি পরিমাণে জল বেরিয়ে যায়। তখন ডিহাইড্রেশন হয়। গরমে শিশুদের ক্ষেত্রে আরও বেশি সমস্যা বাড়ে। গরমে শিশুদের খাবার হজম করতে অসুবিধা হয়, তারা নানা রকম পেটের সংক্রমণে ভোগে। আর তাতেই হয় বিপত্তি। এই সময় শিশুকে সুস্থ রাখতে তাদের ডায়েটের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে অভিভাবকদের। সঙ্গে তাদের ডায়েটে রাখতে হবে শিশুদের জন্য সেরা হেলথ ড্রিঙ্ক (best health drink for kids)। দেখে নিন এই গরমে কী করে আপনার ছোট্ট সন্তানের স্বাস্থ্য ভালো রাখেবন।

এই গরমে বাচ্চারা কিছুই খেতে চায় না। ফলত শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এই সময়ে শিশুর খাদ্যতালিকায় হালকা, পুষ্টিকর এবং টাটকা খাবার থাকা জরুরি। সেক্ষেত্রে নরম খিচুড়ি বা সবজির স্যুপ দিতে পারেন। সেই সঙ্গে মাছ-মাংসও দিতে পারেন পরিমিতভাবে।

তেল-মশলা খাবার নয় :

স্কুলে পাঠানোর আগে খুদেকে কোনও রকম তেল-মশলাদার খাবার খাওয়ানো যাবে না। কোনও রকম ভাজাভুজিও দেওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে দুধ-কর্নফ্লেক্স, চিঁড়ে-লেবু জল, দই-চিঁড়ে, ডিম সেদ্ধ, আলু সেদ্ধ দিয়ে ভাত খাওয়ানো যেতে পারে। এই সময় শুধু ঘরে তৈরি খাবারই বাচ্চাদের খাওয়ান। গরমকালে বাইরের কেনা খাবার এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।

ডায়েটে রাখুন ফল :

বিশেষজ্ঞদের মতে, বছরের এই সময় বাচ্চাদের মরশুমি ফল বেশি করে খাওয়াতে হবে। যেমন ধরুন- আম, তরমুজ, জাম, পেঁপে, জামরুল ইত্যাদি। রোজের ডায়েটে থাকুক শসাও। চাইলে ফলের রসও খাওয়াতে পারেন। তাজা ডাবের জল (fresh coconut water) খাওয়ালে তো খুবই ভালো।

আরামদায়ক পোষাক :

এই গরমে উপযুক্ত,আরামদায়ক পোশাক না পরালে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। হালকা, নরম ও সুতির কাপড় গরমে ঠান্ডা ও আরামদায়ক থাকতে সাহায্য করে। তুলোর মতো হালকা ওজনের, নিঃশ্বাস নেওয়া যায় এমন কাপড় পরান শিশুকে। শিশুকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় টুপি ও সানগ্লাস পরিয়ে নিন।

 রোদ এড়িয়ে চলুন :

সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সূর্য সবচেয়ে শক্তিশালী। তাই সম্ভব হলে এই সময়ে শিশুকে নিয়ে বাইরে বের হবেন না। যদি কোনো কারণে শিশুকে স্কুলে বা কোথাও নিয়ে যান তাহলে তার ত্বকে সানস্ক্রিন মাখিয়ে নিন।

বেশি দৌড়াদৌড়ি করতে দেবেন না :

এই গরমে শিশু যদি বাইরে খেলতে যেতে চায়, তাহলে তাকে বলুন ধীরে ধীরে খেলা করতে। গরমে হঠাৎ করে বেশি দৌড়াদৌড়ি বা লাফালাফি করলে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।

থাকতে হবে হাইড্রেটেড :

গরম আবহাওয়ায় শিশুকে বেশি করে জল খাওয়াতে হবে। মনে করে শিশুদেরকে ঘন ঘন জল পান করাতে হবে। যদি তাদের পিপাসা না লাগে, তবুও পানি জল খাওয়ান।

শিশুদের জন্য সেরা হেলথ ড্রিঙ্ক । Best Health Drinks for Kids :

শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরমে ছোটদের ফলের রস খাওয়াতে।  এক্ষেত্রে বিশেষ কিছু ফলের রস শিশুদের জন্য সেরা হেলথ ড্রিঙ্ক (best health drink for kids) হিসেবে যেমন কাজ করে তেমনই শরীরকে ঠান্ডা রাখে। তবে তা অবশ্যই ঘরে তৈরি করতে হবে। প্যাকেটজাত ফলের রস বাচ্চার শরীরের ক্ষতি করে। আসলে এই ধরনের ফলের রস সংরক্ষণের জন্য যে সব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় তা বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক।

বেলের শরবত :

গরমে বেলের শরবত (bael juice) এর মতো উপকারী আর কিছু নেই। বেল ভিটামিন এ, সি এবং বি কমপ্লেক্স, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের সমৃদ্ধ উৎস। অনেক শিশুই বেল খেতে চায় না। সেক্ষেত্রে বেলের শরবত (bael juice) খাওয়াতে পর্রীন। বাচ্চাদের যাতে পছন্দ হয়, এমন কোনও উপকরণ দিয়ে বেলের শরবত (bael sharbat) বানিয়ে দিতে পারেন। ভিটামিন সি থাকায় বেল ভিতর থেকে প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলতে সক্ষম। তাই গরমে সন্তানকে বেলের শরবত (bael sharbat) খাওয়াতেই পারেন।

ডাবের জল :

গরমে শরীরের যত্ন নিতে তাজা ডাবের জল (fresh coconut water) খুবই উপকারী। প্রচণ্ড গরমে শিশুর প্রতি দিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন এই পানীয়। শরীর আর্দ্র রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন সংক্রমণ জাতীয় রোগবালাই থেকে শিশুকে দূরে রাখবে।

টক দই :

গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে টক দইয়ের বিকল্প নেই। শিশুর পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে রোজ টক দই খাওয়ান। ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন সমৃদ্ধ টক দই হাড় ভাল রাখতেও সাহায্য করে। টক দই শুধু খেতে না চাইলে তা দিয়ে বানিয়ে দিন লস্যি, রায়তা কিংবা স্যালাড।

প্রসঙ্গত, গরমে তেষ্টা পেলেও যেখান সেখান থেকে জল বা ফলের রস সন্তানকে খাওয়াবেন না। এক্ষেত্রে উল্টে পেটের সমস্যা বা অন্যান্য শাররীরিক সমস্যা হতে পারে। মূলত গরমজনিত অসুস্থতার লক্ষণগুলোর মধ্যে দেখা যায় পেশীতে খিঁচুনি, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া। আপনি যদি সন্তানের মধ্যে এই লক্ষণগুলোর মধ্যে কোনোটি দেখতে পান, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File