আন্তর্জাতিক

World Social Work Day | দেশে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন সমাজকর্মীরা! জেনে নিন ভারতের বিখ্যাত কিছু সমাজকর্মীদের সম্পর্কে!

World Social Work Day | দেশে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন সমাজকর্মীরা! জেনে নিন ভারতের বিখ্যাত কিছু সমাজকর্মীদের সম্পর্কে!
Key Highlights

স্বাধীনতার পূর্বে, স্বাধীনতার পর এবং আজকের বর্তমান যুগেও ভারতের ইতিহাসে বেশ কিছু সমাজকর্মীর অবদান চিরকালীন অমর। এই সমাজকর্মীদের কাজকে উত্সাহ দিতেই প্রতি বছর মার্চের তৃতীয় মঙ্গলবার পালিত হয় বিশ্ব সামাজিক কর্ম দিবস।

সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, সমতা এবং উন্নয়নে সামাজিক কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্ব সামাজিক কর্ম দিবস (World Social Work Day) হল সেই সমাজকর্মীদের কাজকেই উৎসাহ দিতে এবং উদযাপন করার একটি দিন। এছাড়াও এই দিনটি সামাজিক পরিষেবার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং ব্যক্তি, পরিবার এবং সম্প্রদায়ের উপর সামাজিক কাজের ইতিবাচক প্রভাব প্রচার করার জন্যও পালন করা হয়ে থাকে।

বিশ্ব সামাজিক কর্ম দিবস । World Social Work Day :

বিশ্ব সামাজিক কর্ম দিবস (Social Work Day) প্রতি বছর মার্চ মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার পালন করা হয়। ফলেই ২০২৪ সালে এই দিনটি পালিত হচ্ছে ১৯সে মার্চ। এটি এমন একটি দিন যা সমাজকর্মীদের কৃতিত্বগুলি তুলে ধরা এবং সমাজে সামাজিক পরিষেবার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিবেদিত। এই দিনটি সামাজিক কাজের অগ্রগতির প্রতিফলন এবং আরও কিছু করা প্রয়োজন এমন ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করার সুযোগও দেয়। প্রথম বিশ্ব সামাজিক কর্ম দিবস ২০০৭ সালে পালিত হয়েছিল 'সামাজিক কাজ - পার্থক্যের বিশ্ব তৈরি করা' প্রতিপাদ্য বা থিম নিয়ে। উদ্যোগটি অ্যাডিলেডে ২০০৪ সালের সাধারণ সভায় ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ সোশ্যাল ওয়ার্কার্স (IFSW) এর সদস্য সংস্থাগুলি দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল। এই দিবসটির প্রাথমিক ধারণাটি ছিল সমাজকর্ম পেশাকে জাতিসংঘের কাজ ব্যাখ্যা করার উপায় খুঁজে বের করা এবং কীভাবে সমাজকর্মীরা মানবিক বিষয়ে এনজিওদের সাথে সহযোগিতা করতে পারে এবং সে সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। উল্লেখ্য, প্রতি বছর বিশ্ব সামাজিক কর্ম দিবস ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপাদ্য বা থিমকে কেন্দ্র করে পালিত হয়।  ২০২২৪ সালে বিশ্ব সামাজিক কর্ম দিবস-এর থিম হল 'বুয়েন ভিভির: ট্রান্সফরমেটিভ চেঞ্জের জন্য ভাগ করা ভবিষ্যত' (Buen Vivir: Shared Future for Transformative Change)।

ভারতের বিখ্যাত সমাজকর্মী । Famous Social Workers in India :

ভারতে সমাজকর্মী (Social workers in India) অনেক সামাজিক সমস্যা সমাধানে এবং দেশের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। এই নিবেদিত পেশাদাররা সমাজের প্রান্তিক এবং দুর্বল অংশগুলিকে উন্নীত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে। ভারতীয় সমাজকর্মীদের লক্ষ্য প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলির মধ্যে একটি হল দারিদ্র্য বিমোচন। এছাড়াও ভারতে সমাজকর্মীরা শিশুদের অধিকারের পক্ষে ও সুরক্ষায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকেন। তারা প্রত্যেক শিশুর শিক্ষা, পুষ্টি, এবং একটি নিরাপদ ও লালন-পালনের পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করেন। তারা শিশু শ্রম এবং শিশু পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও অগ্রণী। ফলে সামাজিক কর্ম দিবস (Social Work Day) উপলক্ষ্যে কিছু ভারতের বিখ্যাত সমাজকর্মীদের (Famous Social Workers in India) নাম উঠেই আসে। জেনে নেওয়া যাক সেই সমাজকর্মীদের সম্পর্কে।

বাবা আমতে । Baba Amte :

 বাবা আমতে (Baba Amte) অনেক দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করার জন্য সুপরিচিত ছিলেন। সমাজকর্মীর পাশাপাশি তিনি একজন জনপ্রিয় আইনজীবীও ছিলেন যিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অনেক যুদ্ধ করেছেন। বাবা আমতে ১৯১৪ সালের ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করেন এবং প্রাকৃতিক কারণে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রয়াত হন। সমাজে অবদানের জন্য তিনি জীবনে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। বাবা আমতে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িত ছিলেন এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি অভয় সাধকের একটি নাম পেয়েছিলেন যার অর্থ 'সত্যের অন্বেষণকারী'। এছাড়াও, তিনি কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতকে সাহায্য করেছেন।

বিনোবা ভাবে । Vinoba Bhave :

বিনোবা ভাভে ছিলেন একজন ভারতীয় সমাজ সংস্কারক যিনি, অহিংসা ও মানবাধিকারের পক্ষপাতী ছিলেন। এছাড়াও তিনি ভূদান আন্দোলনের মতো বহু জনপ্রিয় আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, তিনি মহাত্মা গান্ধীর আধ্যাত্মিক উত্তরসূরি ছিলেন কারণ বিনোবা ভাবে তাঁর আদর্শকে ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেছিলেন। বিনোবা ভাবে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং সমস্ত সামাজিক সংস্কারের জন্য মহাত্মা গান্ধীর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫১ সালে ভূদান আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি দরিদ্রদের জমি দিতে শুরু করেন যাতে তারা জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।

মাদার তেরেসা । Mother Teresa :

মাদার তেরেসার নাম মানবতার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। মাদার তেরেসা, একজন মহান মানবতাবাদী, যিনি ২৭সে আগস্ট, ১৯১০ সালে ভারতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। জন্মের সময় তাঁকে অ্যাগনেস নাম দেওয়া হয়েছিল। তিনি দরিদ্র, নিঃস্ব, সুবিধাবঞ্চিতদের সহায়তা এবং সেবা করার জন্য মিশনারিজ অফ চ্যারিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। হাজার হাজার পরিত্যক্ত এবং অনাথ শিশু মাদার তেরেসার কারণে পরিত্রাণ খুঁজে পেয়েছিল। মাদার তেরেসা বলতেন, দরিদ্র এবং দরিদ্রদের সহায়তা করা ঈশ্বরের সেবা করা, করুণা এবং স্নেহকে তার উদ্দেশ্যের ভিত্তি করে তোলে। মাদার তেরেসা তাঁর সেবামূলক কাজের জন্য অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছিলেন, যার মধ্যে কয়েকটি হল:ভারতরত্ন, শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার, টেম্পলটন ফাউন্ডেশন পুরস্কার, শান্তির জন্য জওহরলাল নেহেরু আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও রমন ম্যাগসেসে পুরস্কার।

সিস্টার নিবেদিতা । Sister Nivedita :

ভগিনী নিবেদিতা ছিলেন একজন ভারতীয় সমাজ সংস্কারক এবং নারী রাজনৈতিক কর্মী। তিনি ব্রিটিশ শাসনের সোচ্চার বিরোধী ছিলেন এবং ভারতীয় জনগণের প্রতিরোধকে সমর্থন করেছিলেন। তিনি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত মহিলাদের জন্য একটি স্কুল চালু করেন। তিনি ঘরে ঘরে গিয়ে নারী ও মেয়েদের শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতেন। তাঁর ছাত্র হিসেবে শুধু কিশোরীরাই নয়, ছিল প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও বিধবাও। তিনি জাতি নির্বিশেষে সকল নারীর উন্নতির জন্য কাজ করেছেন। প্লেগ মহামারীর সময় তিনি রোগীদের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছিলেন তিনি। ভগিনী নিবেদিতা এমনকি আবর্জনা পরিষ্কার করে যুবকদের স্বেচ্ছাসেবক হতে উৎসাহিত করেন। সিস্টার নিবেদিতা জাতি নির্বিশেষে মহিলাদের জন্য সমতার পক্ষে

জ্যোতিবা ফুলে । Jyotiba Phule :

জ্যোতিবা ফুলে আরেকজন জনপ্রিয় ভারতের সমাজকর্মী (Social workers in India) যার কাজ জাত-বিরোধী প্রচারণার চারপাশে আবর্তিত। তিনি মহাত্মা ফুলে নামেও পরিচিত। সোসাইটি অফ সিকারস অফ ট্রুথ নামে একটি দল গঠন করেন। এই গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রতিটি মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। জ্যোতিবা ফুলে সর্বদা প্রতিটি মানুষের জন্য, সমান অধিকারের জন্য আবেদন করেছেন এবং তাই অস্পৃশ্যতার মতো সামাজিক অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এর পাশাপাশি তিনি বিধবাদের পুনর্বিবাহের জন্যও কাজ করেছেন। তা ছাড়া, জ্যোতিবা বিধবাদের জন্মস্থানের ব্যবস্থা করেন এবং অবশেষে শিশুহত্যার হার কমাতে একটি অনাথ আশ্রমও প্রতিষ্ঠা করেন।

ফাদার ফ্রাঁসোয়া লাবোর্দ । Father Francois Laborde :

ফাদার ফ্রাঁসোয়া লাবোর্দের জন্ম প্যারিসে, ১৯২৭ সালে। দর্শনে স্নাতক হওয়ার পর তিনি ধর্মযাজক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৬৫ সালে বিশিষ্ট ভারতীয় শিক্ষাবিদ ম্যালকম আদিসেশাইয়ার কাছে জনসংখ্যা বিষয়ে গবেষণা করতে লাবোর্দে চলে আসেন চেন্নাইয়ে। এরপর পিলখানার বস্তিতে প্রতিবন্ধী শিশুদের অত্যন্ত কঠিন অবস্থা এবং তাদের অসুবিধার সমাধানের জন্য এবং তাদের সাহায্যের জন্য সাতের দশকে, কলকাতার আর্চবিশপ, কার্ডিনাল লরেন্স পিকাচির সাহায্যে হাওড়ার আন্দুল রোডে বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুদের জন্য ফাদার গড়ে তোলেন একটি হোম বা সংস্থা - হাওড়া সাউথ পয়েন্ট সংস্থা। জন্মগতভাবে ফাদার ফ্রাঁসোয়া লাবোর্দ ফরাসি হলেও ভারতে বেশ কয়েক বছর কাটানোর পর মনে প্রাণে ফাদার হয়ে ওঠেন ভারতীয়। এখানকার মানুষগুলোকে যেমন আপন করে নিয়েছিলেন তেমনি আপন করে নিয়েছিলেন এখানকার সংস্কৃতি, থাকা খাওয়া সবটাই। ফলে সাতের দশকেই তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। এদিকে ১৯৭৬ সাল থেকে দরিদ্র, প্রতিবন্দী বাচ্চাদের সেবা করে চলেছে ফাদার ফ্রাঁসোয়া লাবোর্দের হাওড়া সাউথ পয়েন্ট সংস্থা। আন্দুল রোডে একটা হোম থেকে শুরু করে বর্তমানে হাওড়া ও জলপাইগুড়িতে রয়েছে এঁদের চারটি করে এবং আসানসোলে একটি কেন্দ্র। তাঁদের স্কুল, হোম, হাসপাতাল, নারী-শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং মোবাইল ডিসপেন্সারি থেকে উপকৃত হচ্ছেন প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ। এ ছাড়া, সারা বছর ধরে স্বেচ্ছাসেবকরা আসেন ফ্রান্স ও জার্মানির মতো দেশ থেকে।

ফাতেমা শেখ । Fatima Sheikh :

ভারতের নারী সমাজ সংস্কারকদের মধ্যে ফাতেমা বেগম শেখ আমাদের ইতিহাসের বইয়ে খুব কম পরিচিত। তিনি ছিলেন পুনের বাসিন্দা। তিনি জ্যোতিরাও এবং সাবিত্রীবাই ফুলের সমাজ সংস্কারক হিসাবে সাফল্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ফুলে দম্পতিকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলা হলে ফাতিমা ও তাঁর স্বামী উসমান তাদের আশ্রয় দেন। ফুলে দম্পতিকে যে বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল সেটিই ভারতে মেয়েদের প্রথম স্কুল হয়ে ওঠে। ১৮২৮ সালে, ফাতিমা শেখ ফুলদের সাথে ভারতের প্রথম বালিকা বিদ্যালয়ের সহ-প্রতিষ্ঠা করেন। লিঙ্গের বাধা ভেঙ্গে, ফাতিমা শেখ প্রথম মুসলিম মহিলা যিনি ভারতে শিক্ষকতা করেছিলেন। তিনি সেই নারীদের জন্য একজন রোল মডেল হিসেবে সামাজিক বাধা ভেঙে কুসংস্কারকে চ্যালেঞ্জ করেন। শেখ ভারতের নারীবাদী আন্দোলনের একজন নেত্রীও ছিলেন।

আন্না হাজারে । Anna Hazare :

দেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবদান রেখে দেশের সমাজ সংস্কারকদের মধ্যে আন্না হাজারে একজন নেতা হয়ে উঠেছেন। তিনি মানবতার সেবার জন্যও পরিচিত এবং ভারতের দরিদ্র ও গ্রামীণ মানুষের অবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করেন। আন্না হাজারে শস্য ব্যাঙ্ক তৈরি এবং তাঁর গ্রামে অস্পৃশ্যতা দূরীকরণে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, তথ্যপ্রযুক্তির অধিকার, খসড়া আইন লোকপালের আন্দোলন এবং নির্বাচনী সংস্কার আন্দোলনেরও আহ্বান জানান।

মেধা পাটকর । Medha Patkar  :

মেধা পাটকর হলেন মুম্বাই ভিত্তিক একজন সামাজিক কর্মী, যিনি নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনে তাঁর মূল ভূমিকার জন্য স্বীকৃত। তিনি নর্মদা বাঁধের উচ্চতা বৃদ্ধির বিরোধিতা করতে অবিরাম উপবাস করেন। মেধা পাটকর এমন অনেক আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন যা অবশ্যই ভারতীয় ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করেছে। তিনি নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন এবং ঘর বাঁচাও ঘর বানাও আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন। মেধা পশ্চিমবঙ্গে জমি দখলের বিরুদ্ধেও লড়াই করেছিলেন। তা ছাড়া তিনি সমাজে আরও নানাভাবে অবদান রেখেছেন।

কিরণ বেদি । Kiran Bedi :

 কিরণ বেদী একজন সমাজ সংস্কারক হওয়ার আগে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের পড়ুয়া ছিলেন। পরে তিনি দিল্লির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর পিএইচডি থিসিস নারীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য সহিংসতা এবং মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারকে কেন্দ্র করে তৈরী হয়। এরপর তিনি ১৯৭২ সালে ভারতীয় পুলিশ সার্ভিসে যোগদানকারী ভারতের প্রথম মহিলা হয়েছিলেন। কিরণ একজন সুপরিচিত মহিলা সমাজ সংস্কারক এবং একজন ক্রীড়াবিদ।

লক্ষ্মী আগরওয়াল । Lakshmi Agarwal:

লক্ষ্মী আগরওয়াল (Lakshmi Agarwal) হলেন একজন ভারতীয় প্রচারক এবং 'স্টপ অ্যাসিড অ্যাটাকস' টিভি হোস্ট। তিনি একজন অ্যাসিড আক্রমণ শিকারী। তিনি অ্যাসিড হামলার শিকারদের অধিকারের পক্ষে কথা বলেন। তিনি অ্যাসিড বিক্রি রোধ করার জন্য একটি পিটিশনের জন্য ২৭,০০০ স্বাক্ষর সংগ্রহ করে এবং সেটি ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গিয়ে অ্যাসিড হামলার বিরুদ্ধে ওকালতি করেছেন। তাঁর আবেদনের ফলে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে অ্যাসিড বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দেয় এবং সংসদকে অ্যাসিড হামলার বিচার সহজতর করে তোলে। লক্ষ্মী মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা কর্তৃক ২০১৪ সালের আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও তিনি এনডিটিভি ইন্ডিয়ান অফ দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন।

 স্বাধীনতার পূর্বে, স্বাধীনতার পর এবং আজকের বর্তমান যুগেও ভারতের ইতিহাসে চির অমর হয়ে রয়েছে বহু সমাজ কর্মী। বঞ্চিত ও দুস্থদের পাশে দাঁড়ানো, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সমাজকে উন্নত করে চলেছেন এই সমাজকর্মীরা। তাদের অবদান সর্বদাই অনস্বীকার্য।