প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়ে ম্যারাথন দৌড়ে বিশ্বকে অবাক করলেন দেশের 'ধন্যি মেয়ে' শালিনী সরস্বতী

দুবছরের কঠোর প্রশিক্ষণের পর শালিনী অবশেষে ব্যাঙ্গালোরে TCS ওয়ার্ল্ড ১০ কিমি হাফ ম্যারাথন দৌড়তে সক্ষম হন। তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য, প্যারালিম্পিকে অংশগ্রহণ করা।
বেঙ্গালুরুকে বলা হয় ভারতের আইটি হাব। লক্ষ লক্ষ যুবকের স্বপ্ন পূরণ হয় এই শহরে। সকলের মতোই ব্যাঙ্গালোরের এই শহরে থাকবেন বলে স্বপ্ন দেখেছিলেন শালিনী সরস্বতীও। সেখানে থেকেই জীবনে কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।
শালিনীর জীবনের লড়াইটা খুব একটা সহজ ছিল না
অনেক ছেলে মেয়েই শালিনীর মতো স্বপ্ন দেখে এবং তা পূরণ করে। কিন্তু শালিনীর জীবনটা বাকিদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। হাত-পা দুটোই হারিয়েও নিজের দৌড়ানোর স্বপ্ন পূরণ করেছেন তিনি। শালিনী সরস্বতীর জীবন কখনই সহজ ছিল না।
কম্বোডিয়ায় থাকাকলীন শালিনীর হালকা জ্বর হয়েছিল। কিন্তু দেশে ফেরার পর সেই জ্বর তীব্র হয়ে ওঠে। সেই সময় শালিনী গর্ভবতীও ছিলেন। চিকিৎসা চলাকালীন জানা যায় শালিনীর শরীরে মারাত্মক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়েছে। যার ফলে শালিনীর হাত পায়ে পচন ধরতে শুরু করে। এই সংক্রমণ ১০ লাখ মানুষের মধ্যে একজনের হয়।

মৃত্যু কে জয় করে নবজন্ম লাভ করেন শালিনী সরস্বতী
শালিনী সরস্বতীকে বেশ কয়েকদিন আইসিইউতে থাকতে হয়। সেই সময় তাঁর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল মাত্র পাঁচ শতাংশ। চিকিৎসা চলাকালীন শালিনী তাঁর সন্তানকে হারিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েন। শেষ পর্যন্ত প্রানে বেঁচে গেলেও তাঁর শরীরের অনেক অংশ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। পরবর্তীতে তাঁকে হারাতে হয়েছিল তাঁর দুই হাত ও দুই পা।
কৃত্রিম অঙ্গ ব্যবহার করেই নিজের লক্ষ্য জয়
শালিনী একটা সময়ে পায়ে নেলপলিশ লাগাতে খুব পছন্দ করতেন। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস তাঁর পা কেড়ে নেয়। কিন্তু তিনি আশা ও সাহস কোনোটাই হারাননি। ২০১৪ সালে প্রস্থেসেস ব্যবহার করে কৃত্রিম পা পেলেন শালিনী। ‘নতুন’ পা ব্যবহার করে অনুশীলন শুরু করেন এবং আবার হাঁটা শুরু করেন।

শালিনী ব্লেড রানার হিসাবে দৌড়ানোর অনুশীলন করতে থাকেন। কোচ বিপি আয়াপ্পার অধীনে শুরু হয় তাঁর প্রশিক্ষণ। তিনি প্রতিদিন ৯০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করতেন। ট্রেনিং সেশন তাঁর জন্য সত্যিই কঠিন ছিল। কিন্তু শালিনী সব পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। দুবছরের কঠোর প্রশিক্ষণের পর অবশেষে ব্যাঙ্গালোরে TCS ওয়ার্ল্ড ১০ কিমি হাফ ম্যারাথন দৌড়তে সক্ষম হন শালিনী।
- Related topics -
- খেলাধুলা
- শালিনী সরস্বতী
- ম্যারাথন দৌড়
- বেঙ্গালুরু