Shakti Peeth | কোথায় কোথায় রয়েছে ৫১টি সতীপীঠ? কোথায় পড়েছিল দেবীর কোন অঙ্গ? জানুন সতীপীঠ সম্পর্কে বিস্তারিত!

Monday, November 13 2023, 7:07 pm
highlightKey Highlights

হিন্দু শাস্ত্র মতে , দেবী সতীর দেহের ৫১টি টুকরো পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। আর এই জায়গাতেই গড়ে ওঠে ৫১টি শক্তিপীঠ বা সতীপীঠ। জানুন কোথায় অবস্থিত কোন শক্তিপীঠ এবং কোথায় দেবীর কোন অংশ পড়েছিল।


শক্তির দেবী মা কালী (Maa Kali)র আরাধনায় কালী পূজা ২০২৩ (Kali Puja 2023) তে মেতে গোটা বঙ্গ। অন্যান্য  বছরের কালীপুজোর মতো কালী পূজা ২০২৩ (Kali Puja 2023) ও কালীঘাট, কামাখ্যা পীঠস্থানে ভক্তদের ভিড়। হিন্দু শাস্ত্র মতে বিশ্বাস করা হয়, দেবী সতীর দেহের ৫১টি টুকরো পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। আর এই জায়গাতেই গড়ে ওঠে ৫১টি শক্তিপীঠ (51 Shakti Peeth)  বা পীঠস্থান। 

শাস্ত্র মতে, দক্ষ রাজার অমতে মহাদেবকে বিয়ে করেছিলেন দেবী সতী। যার ফলে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন রাজা দক্ষ। সেই উদ্দেশেই একটি যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন তিনি। যজ্ঞের অনুষ্ঠানে দেবী যথাযথ সন্মান পাননি এবং দক্ষ রাজা মহাদেব শিবকেও অপমান করেছিলেন। স্বামীর অপমান সহ্য করতে পারেন নি দেবী সতী। ফলে দেবী সেই যজ্ঞের আগুনে নিজেকেই আহুতি দেন। এতেই মহাক্রোধে উন্মত্ত হয়ে ওঠেন দেবাদিদেব মহাদেব। যজ্ঞ ভেঙে সতীর দেহ নিয়ে প্রচণ্ড প্রলয় নৃত্য করতে থাকেন দেবাদিদেব। মহাদেবের এই তান্ডব নৃত্যের কারণেই পৃথিবী কাঁপতে শুরু করে, ধ্বংস হতে শুরু করে। বিশ্বের পুরোপুরি বিনাশের আগে মহাদেবকে থামাতে ভগবান বিষ্ণু সুদর্শন চক্র পাঠান। সেই সুদর্শন চক্র দেবীর দেহকে ৫১ খণ্ডে বিভক্ত করে এবং সেই খণ্ডগুলি বিভিন্ন জায়গায় পড়ে। বর্তমানে এইসব জায়গাকেই সতীপীঠ বা  শক্তিপীঠ (Shakti Peeth) বা পীঠস্থান বলা হয়। সতীর ৫১ পীঠ হিন্দু ধর্মে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও পরম পবিত্র জায়গা বলে বিবেচিত হয়। ভারত সহ বাংলাদেশ,পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কায় এই ৫১ সতীপীঠ অবস্থিত। দেখে নিন ৫১টি শক্তিপীঠ (51 Shakti Peeth) সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে।

১. হিঙ্গুলা(হিংলাজ) : পুরাণ অনুযায়ী এখানে সতীর মন বা মস্তিষ্ক পড়েছিল। পাকিস্তানের করাচি থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে এখানে দেবী দুর্গার নাম কোটারি। ভয়ঙ্কর তৃতীয় নয়নের জন্য শিব এখানে ভীমলোচন।

২.  তারাপীঠ : দ্বারকা নদীর তীরে, রামপুরহাট শহর হতে ৬ কি.মি দূরে, বীরভূম জেলায় দেবীর তৃতীয় নয়ন বা নয়নতারা পড়েছিল। এখানে দেবী পূজিতা উগ্রতারা রূপে।

৩. সুগন্ধা :  সতীর নাসিকা পতিত হওয়ায় এই পীঠের নাম সুগন্ধা। বাংলাদেশের বরিশাল থেকে ১০ মাইল উত্তরে শিকারপুর গ্রামে সুগন্ধা অবস্থিত। শক্তিধামে দেবীর দুর্গরা নাম সুনন্দা। 

৪. অমরনাথ :  শিবক্ষেত্র অমরনাথ শক্তিপীঠ রূপেও প্রসিদ্ধ। ভারতের ভূস্বর্গ কাশ্মীরের অমরনাথে দেবীর কন্ঠ পতিত হয়। এখানে দেবীর নাম মহামায়া। মহাদেব এখানে ত্রিসন্ধ্যেশ্বর রূপে বিরাজ করছেন। শ্রীনগর থেকে পেহেলগাও হয়ে বাসে ৯৪ কিমি পথ। এই শৈব তীর্থ একটি শক্তিপীঠও বটে।

৫. জ্বালামুখী : হিমাচলপ্রদেশের কাঙরা অঞ্চলে অবস্থিত এই সতীপীঠ একটি জাগ্রত পীঠ। এখানে দেবীর জিভ পতিত হয়। দেবী এখানে সিদ্ধিদা বা অম্বিকা নামে পূজিতা। ভৈরবের নাম উন্মট ভৈরব। আশ্চর্যের কথা হল এখানে কোন দেবী মূর্তি নেই। এখানে প্রজ্জ্বলিত অগ্নিকে দেবী রূপে পুজো করা হয়। এই আগুন কবে থেকে জ্বলছে তা অজানা। মন্দিরের ভিতরে একটি যন্ত্রকে বস্ত্র, অলঙ্কার সহযোগে পুজো করা হয়। শিব আছেন উন্মত্ত রূপে।

৬. ভৈরব পাহাড় বা অবন্তী : সতীর ওষ্ঠ পড়েছিল এই পাহাড়ে। মধ্যপ্রদেশের অবন্তীর এই তীর্থে দেবী দুর্গা পরিচিত অবন্তী নামেই। 

৭.অট্টহাস শক্তিপীঠ : অট্টহাস গ্রাম, দক্ষিণীদিহি, বর্ধমান জেলা, কাটোয়া রেলওয়ে স্টেশনের নিকটে অবস্থিত। লোকবিশ্বাস অনুসারে, ফুল্লরায় সতীর নিচের ঠোঁটটি পড়েছিল। এই মন্দিরে কোনও বিগ্রহ নেই। সিন্দুরচর্চিত কচ্ছপাকৃতি শিলাখণ্ডই দেবীর প্রতিভূ। বিশ্বাস করা হয়, দুর্গাপূজার সময় হনুমান এখানে অবস্থিত পুকুর থেকেই ১০৮টি পদ্ম সংগ্রহ করেছিলেন।

৮. প্রভাস: মুম্বইয়ের কাছে এই শক্তিপীঠে সতীর পাকস্থলি পড়েছিল। দেবী দুর্গার নাম এখানে চন্দ্রভাগা। শিবের মূর্তি পূজিত বক্রতুণ্ড নামে।

৯. বাণী, নাসিক: এই শক্তিপীঠে সতীর চিবুক পড়েছিল। বর্তমান মহারাষ্ট্রের কাছে পুণ্যভূমিতে দেবীর নাম ভ্রমরী এবং চিবুকা। শিবের নাম বিক্রকটাক্ষ এবং সর্বসিদ্ধিশ।

১০. গোদাবরী : গোদাবরীর তীরে সতীর বাম গাল বা কপোল পড়েছিল বলে পৌরাণিক বিশ্বাস। দেবীর নাম এখানে বিশ্বমাতৃকা। মহাদেব পূজ্য দণ্ডপানি রূপে।

১১.  গন্ধকী: বিশেষ করা হয় সতীর ডান গাল বা কপোল পড়েছিল এই স্থানে। বিখ্যাত এই তীর্থক্ষেত্রে সতীর নাম গণ্ডকীচণ্ডী। আর শিবের পরিচয় চক্রপাণি। এটি নেপালে অবস্থিত।

১২. সূচি : দন্তেওয়াড়া নামে পরিচিত এই শক্তিপীঠ (Shakti Peeth) ছত্তিশগড়ের জগদলপুরে অবস্থিত। পুরাণ মতে, এখানে ছিটকে এসে পড়েছিল দেবীর উপরের পাটির দাঁত। দেবী এখানে নারায়ণী রূপে পূজিতা। মহাদেব পূজিত হন সংহার রূপে। পঞ্চসাগরে পড়েছিল সতীর নীচের পাটির দাঁত। সতী এখানে বরাহী এবং শিব মহারুদ্র। দু’জায়গাতেই দেবীর  নাম দন্তেশ্বরী। তবে পঞ্চসাগরের অবস্থান নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। কোনও কোনও মত বলে, হরিদ্বারের কোনও এক যায়গায় রয়েছে এই পুণ্যভূমি।

১৩. কালমাধব : কালমাধব পাহাড়ের উপরে গুহার ভিতর শোন নদীর তীরে, অমরকণ্টক, মধ্যপ্রদেশে এই পীঠস্থান। বিশ্বাস করা হয় এখানে দেবীর বাং নিতম্ব পড়েছিল।

১৪.  শ্রী পর্বত : শ্রী পর্বত হল, সতী পীঠের আরেকটি নাম। তন্ত্র অনুযায়ী শ্রীপর্বতে দেবীর ডান তল্প পতিত হয়েছিল। দেবীর নাম শ্রীসুন্দরী, ভৈরবের নাম সুন্দরানন্দ। মূলত তিরুমালয়কে শ্রীপর্বত বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে।

১৫. কর্ণাট : পুরাণ মতে, নারায়ণের সুদর্শন চক্রের ঘায়ে সতীর দুই কান এসে পড়ে এখানে। সেখান থেকেই নাম কর্ণাট। শিব পূজিত হন অভিরুক নামে। মনে করা হয় কর্ণাট নাম থেকেই কর্ণাটক নামের উৎপত্তি হয়েছে। বর্তমানে এই তীর্থক্ষেত্রটি মাইসোরে চামুণ্ডি পাহাড়ের উপরে অবস্থিত।

১৬. বৃন্দাবন : বৈষ্ণব তীর্থক্ষেত্র হলেও এই জায়গার আরেক পরিচয় শক্তি পীঠ বলে। সতীর কেশরাশি পড়েছিল এখানে। দেবী এখানে উমা রূপে পূজিতা। শিব পূজ্য ভূতেশ নামে।

১৭. কিরীটেশ্বরী : এটি বঙ্গের আরেক বিখ্যাত শক্তিপীঠ।  মুকুট-সহ দেবীর শিরোভূষণ পড়েছিল এখানে। বর্তমান অবস্থান মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জে। মূল মন্দিন ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পরে লালগোলার রাজা দর্পনারায়ণ নতুন করে মন্দির নির্মাণ করেন। দেবীর পরিচয় এখানে কিরীটেশ্বরী বা মুকুটেশ্বরী নামে। শিব পূজিত হন সংবর্ত রূপে।

১৮.  শ্রীশৈল : জৈনপুর গ্রাম, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট শহরের ৩ কি.মি. উত্তর-পূর্বে, বাংলাদেশে এই পীঠস্থান। এখানে দেবীর গলা পড়েছিল। এখানে দেবী মহালক্ষ্মী ও মহাদেব সম্বরান।

১৯. নলহাটি নলহাটেশ্বরী : নলহাটি নলহাটেশ্বরী : পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের এই স্থানও জাগ্রত শক্তিপীঠ। পীঠনির্ণয় তন্ত্রের মতে চতুশ্চত্বারিশৎ পীঠ হল বীরভূমের নলহাটি। এখানে দেবীর শ্বাসনালীসহ কণ্ঠনালী পড়েছিল।

২০. রত্নাবলী :  রত্নাবলী শক্তিপীঠ, রত্নাকর নদীতীর, খানাকুল-কৃষ্ণনগর, হুগলী জেলাতে অবস্থিত। এখানে দেবীর ডান স্কন্ধ বা কাঁধ পড়েছিল। এখানে দেবী কুমারী রূপে পূজিতা।

২১. মিথিলা : সতীর বাঁ কাঁধ ছিটকে এসে পড়ে এখানে। দেবী এখানে মহাদেবী এবং শিব পূজিত হন মহোদর রূপে। বর্তমানে জনকপুর স্টেশনের কাছে এই তীর্থস্থান অবস্থিত।

২২.  চন্দ্রনাথ মন্দির: কথিত আছে, সতীর ডান হাত পড়েছিল এখানে। দেবী এখানে ভবানী এবং শিব এখানে চন্দ্রশেখর। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুযায়ী, কলি যুগে সীতাকুণ্ডের কাছে এখানে চন্দ্রশেখর(শিব) চন্দ্রনাথ পাহাড়ে নিয়মিত আসেন। এটি চট্টগ্রাম বাংলাদেশে অবস্থিত।

২৩.  মানবক্ষেত্র : মানবক্ষেত্র : সতীর ডান হাত বা হাতের তালু পড়েছিল এখানে। মানস সরোবর হ্রদে কৈলাশ পর্বতের পাদদেশে কাছে কোগ্রামের এই পুণ্যভূমিতে সতীর পরিচয় দাক্ষ্যায়ণী। শিব পরিচিত সিদ্ধিদায়ক রূপে।

২৪. মঙ্গলচণ্ডী: মঙ্গলচণ্ডী মন্দির, উজ্জনি, গুস্করা স্টেশন থেকে১৬ কি.মি দূরে বর্ধমান জেলাতে অবস্থিত। এখানে দেবীর ডান কব্জি পড়েছিল।

২৫.  মণিবন্ধ : অজমের এর ১১ কি.মি. উত্তর-পশ্চিমে, পুষ্করের নিকট গায়ত্রী পর্বতে এই পীঠস্থান। এখানে দেবীর দুই হাতের বালা পড়েছিল। সতী এখানে গায়ত্রী এবং মহাদেব সর্বানন্দ।

২৬.  প্রয়াগ : ইলাহাবাদের ত্রিবেণী তীর্থে পড়েছিল সতীর হাতের দশ আঙুল। দেবীর নাম এখানে ললিতা এবং শিব হলেন ভবা।

২৭. বেহুলা : বর্ধমানের কেতুগ্রামের কাছে বেহুলায় দেবীর বাঁ হাত পড়েছিল বলে বিশ্বাস। দুর্গার নাম এখানে বহুলা। শিবের পরিচয় ভীরুক নামে।

২৮. জলন্ধর : পাঞ্জাবের এই অঞ্চলে পড়েছিল সতীর ডান স্তন। দেবী এখানে পূজিত হন ত্রিপুরমালিনীরূপে।

২৯. রামগিরি : ছত্তিশগড়ে বিলাসপুর স্টেশনের কাছেই এই তীর্থক্ষেত্র। বলা হয়, দেবীর বাঁ স্তন পড়েছিল এখানে। শিবের পরিচয় এখানে চণ্ড নামে।

৩০.  বৈদ্যনাথ : জশিডির কাছেই বিখ্যাত এই শৈব তীর্থক্ষেত্র আবার সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই পড়েছিল সতীর হৃদয়। দেবীর নাম এখানে ‘জয়দুর্গা’। শিব হলেন বৈদ্যনাথ।

৩১. বিমলা : পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কাছেই এই শক্তি পীঠ অবস্থিত। কথিত আছে, এখানে পড়েছিল সতীর নাভিদেশ। দেবীর নাম এখানে বিমলা এবং শিব পূজিত হন জগন্নাথ রূপে।

৩২. কঙ্কালীতলা : বঙ্গের বীরভূমের বোলপুর স্টেশন থেকে ১০ কিমি উত্তর-পূর্বে কোপাই নদীর তীরে এই সিদ্ধস্থান অবস্থিত। এখানে দেবীর অস্থি বা হাড় পড়েছিল। দেবী স্থানীয় মানুষদের কাছে কঙ্কালেশ্বরী নামে পরিচিত। এখানে দেবীর শ্রোণি পতিত হয়। দেবীর নাম এখানে দেবগর্ভা ও ভৈরব রূরূ নামে প্রসিদ্ধ। পাশেই একটা কুন্ড আছে যার জল নাকি কখনও শুকায় না।

৩৩. শোন্দেশ: অমরকণ্টক, নর্মদা নদীর উৎস এর নিকটে ,মধ্যপ্রদেশে এই শক্তি পীঠ। এখানে পড়েছিল সতীর ডান দিকের নিতম্ব। দুর্গা এখানে নর্মদা। শিব পূজিত হন ভদ্রসেন রূপে।

৩৪. ভবানীপুর : করতোয়া নদীর তীরে, শেরপুর উপজেলা থেকে ২৮ কি.মি. দূরে, বগুড়া জেলায় এই পীঠস্থান। এখানে দেবীর বাম পায়ের নূপুর পড়েছিল। সতী এখানে অপর্ণা এবং মহাদেব বামন।

৩৫. কামাখ্যা : অসমের গুয়াহাটিতে ব্রহ্ম পুত্র নদীর তীরে নীলাচল পাহাড়ের উপরে দেবী কামাখ্যার মন্দির। পুরাণ বলে, এখানে দেবীর যোনি পড়েছিল। দেবীর নামও এখানে কামাখ্যা। জাগ্রত এই মন্দিরের কাছেই ব্রহ্ম পুত্রের চরে আছে উমানন্দ মন্দির। শিবের নাম এখানে উমানন্দ। কামাখ্যা মা কালী (Maa Kali) খুবই জাগ্রত বলে মনে করা হয়।

৩৬. গুহ্যেশ্বরী মন্দির : পশুপতিনাথ মন্দিরের নিকট এই অঞ্চলে দেবীর দুই হাঁটু পড়ে এখানে। দেবী এখানে মহশিরা। শিব হলেন কাপালি।

৩৭. শ্রীহট্ট জয়ন্তী :  এখানে একাধিক শক্তি পীঠ আছে। দেবীর ঘাড়ের পাশাপাশি পড়েছিল বাঁ থাই। দেবী এখানে জয়ন্তী এবং শিব ক্রমদীশ্বর।

৩৮.  জল্পেশ মন্দির: জল্পেশ মন্দিরের নিকট ভ্রামরী দেবী মন্দির, জলপাইগুড়ি জেলায় অবস্থিত। এখানে দেবীর বাম পা পড়েছিল। সতী এখানে ভ্রামরী এবং মহাদেব অম্বর।

৩৯. ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির : উদয়পুর, রাধাকিশোরপুর গ্রামের নিকট পাহাড়চূড়ায় এই পিঠ। সতীর নাম এখানে ত্রিপুরাসুন্দরী। শিব হলেন ত্রিপুরেশ্বর। প্রচলিত বিশ্বাস, দেবীর ডান দিকের পায়ের পাতা পড়েছিল এখানে।

৪০. ক্ষীরগ্রাম : বর্ধমানের এই গ্রামে পড়েছিল সতীর আঙুল-সহ ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল। সতী এখানে যোগদায়া। শিবের নাম ক্ষীরকান্ত।

৪১. কালীঘাট : সতীপীঠের অন্যতম এই মন্দির কালীঘাট। প্রচলিত বিশ্বাস, এখানে ছিটকে পড়েছিল সতীর ডান পায়ের আঙ্গুল। শিব এখানে নকুলিশ বা নকুলেশ্বর।

৪২. মিথিলা : এখানে দেবীর বাম স্কন্ধ পড়েছিল। এখানে দেবী উমা এবং মহাদেব মহোদর রূপে পূজিত।

৪৩. কুরুক্ষেত্র : কুরু পাণ্ডবদের রণাঙ্গন আবার শক্তি পীঠও বটে। এখানে পড়েছিল সতীর গোড়ালির হাড় বা গুল্ফ। দেবীর নাম এখানে সাবিত্রী বা স্থানু। শিব এখানে স্থাণু।

৪৪. বক্রেশ্বর : বাংলার আর এক বিখ্যাত শক্তিপীঠ। বীরভূমের সিউড়ি শহর থেকে ২৪ কিমি দূরে এই সতীপীঠ অবস্থিত। দেবীর নাম মহিষমর্দিনী। ভৈরব হলেন বক্রনাথ। দেবীর ভ্রুযুগলের মাঝের অংশ পতিত হয় এখানে।

৪৫.  যশোরেশ্বরী : এটি একটি প্রসিদ্ধ সতীপীঠ। বাংলাদেশের খুলনার ঈশ্বরীপুরে এই মন্দির অবস্থিত। এখানে দেবীর হাতের তালুদ্বয়  পতিত হয়।

৪৬. নন্দীকেশ্বর : কোনও এক সময়ের নন্দীপুর গ্রাম মিলিয়ে গেছে কালের গর্ভে। এখন দেবী নন্দিনী অধিষ্ঠিতা সাঁইথিয়া শহরে। বিশ্বাস করা হয়, সতীর কণ্ঠ হার পড়েছিল এখানে। শিব এখানে পূজিত হন নন্দীকিশোর রূপে এবং দেবী নন্দিনী রূপে।

৪৭. বারাণসী : পুরাণে কথিত, মহাপ্রলয়ের পরেও অস্তিত্ব টিকে থাকবে এই প্রাচীন শহরের। বাবা বিশ্বনাথের জন্য বিখ্যাত হলেও কাশীধাম একটি শক্তি পীঠ। সতীর কর্ণ কুণ্ডল বা কানের দুল পড়েছিল এখানে। তিনি এখানে বিশ্বলক্ষ্মী। মহাদেব এখানে কালভৈরব।

৪৮. কন্যাশ্রম  :  দক্ষিণ ভারতে ভারত মহাসাগর, আরব সাগর এবং বঙ্গোপোসাগরের ত্রিবেণী সঙ্গমে দাঁড়িয়ে আছেন কন্যা দেবী। তিনি এখানে সর্বাণী। ভগবতী বা ভদ্রকালী হিসেবেও তিনি পূজিতা। শিব এখানে নিমিষ। বিশ্বাস করা হয় এখানে দেবীর পীঠ পড়েছিল।

৪৯.  নাইনাতিভু নাগাপুসানী আম্মান মন্দির : যুদ্ধ-বিধ্বস্ত জাফনার আর এক পরিচয় সতীপীঠ রূপে। পৌরাণিক মত অনুযায়ী, প্রাচীন সিংহলের এই অঞ্চলে পড়েছিল সতীর ডান পায়ের নূপুর। সতী এখানে ইন্দ্রাক্ষ্মী। শিব হলেন রাক্ষসেশ্বর।

৫০. বর্গভীমা মন্দির : তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এই তীর্থক্ষেত্রে পড়েছিল দেবীর বাঁ পায়ের গোড়ালি। সতী এখানে ভীমরূপা। শিব হলেন সর্বানন্দ।

৫১. পঞ্চসাগর : পঞ্চসাগর , অজ্ঞাত (হরিদ্বারের নিকট বলে মনে করা হয়) উত্তরাখণ্ডে এই পীঠস্থান। এখানে দেবীর নিচের দাঁতসমূহ পড়েছিল। সতী এখানে বরাহী এবং মহাদেব মহারুদ্র।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File