যৌনকর্মীদের নিয়ে ছ’দফা নির্দেশিকা জারি করলেও আগামী ২৭শে জুলাই এই বিষয়ে কেন্দ্রের মতামত জানানোরও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সমাজের অন্যান্য পাঁচটি পেশার মানুষের মতো যৌনকর্মীদেরও সমমর্যাদা ও সমান অধিকার রয়েছে। এই বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি স্বেচ্ছায় এই পেশায় আসা কর্মীদের কাজে অহরহ পুলিশি হস্তক্ষেপ এবং ফৌজদারি মামলা দায়েরের প্রবণতাতেও লাগাম পরিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই সংক্রান্ত ছ’টি নির্দেশিকা জারি করেছে। তার মধ্যে দিয়ে যৌনকর্মীদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যৌনপল্লিতে পুলিশি অভিযানের সময় যৌনকর্মীদের গ্রেফতার, দণ্ডিত করা, হেনস্থা করা উচিত নয়। কারণ যৌনকর্ম বেআইনি নয়, শুধুমাত্র যৌনপল্লি চালানো বেআইনি।
যৌনকর্মীরাও আইনের চোখে সমান সুরক্ষার অধিকারী। যখন এটা স্পষ্ট যে, যৌনকর্মী এক জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং সম্মতি সাপেক্ষেই যৌনতা বিক্রি করছেন, তখন পুলিশকে অকারণ হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনও ফৌজদারি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যাবে না। সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ এই দেশের প্রত্যেক নাগরিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকার সুনিশ্চিত করেছে।
এবিষয়ে শীর্ষ আদালত বেশকিছু সুপারিশ জারি করেছেন। সেগুলি হল -
- মা যৌনপেশায় আছেন, শুধু সেই যুক্তিতে সন্তানকে তাঁর মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
- কোনও যৌনকর্মী যদি তাঁর বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে যান, তা হলে সেটিও সমান মনোযোগের সঙ্গে দেখবেন পুলিশকর্মী।
- যদি যৌনকর্মী তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা বা অপরাধের অভিযোগ নিয়ে আসেন, তা হলে দ্রুততার সঙ্গে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে তদন্ত শুরু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে, এক জন সাধারণ মানুষ যেমন সুবিধার অধিকারী, এক জন যৌনকর্মীর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা করা যাবে না।
- কোনও ঘটনা ঘটলে যৌনকর্মীদের পরিচয় যেন প্রকাশ্যে না আসে, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছে আদালত।
- Related topics -
- দেশ
- সুপ্রিম কোর্ট
- মহিলা
- যৌন কর্মী
- লাইফস্টাইল