Panchayat Election 2023 | পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঘন্টা বাজতেই উত্তপ্ত রাজ্য! স্পর্শকাতর জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ!
আগামী ৮ই জুলাই রাজ্যে একদফায় পঞ্চায়েত ভোট। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া যাবে ১৫ই জুন পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই বোমাবাজি,গোলাগুলিতে উত্তপ্ত রাজ্য।
বেজে গিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election 2023) দামামা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (State Election Commission) নির্দেশিকা অনুযায়ী, আগামী মাসের ৮ তারিখে অর্থাৎ ৮ই জুলাই গোটা রাজ্যে একদফাতেই পঞ্চায়েত ভোট হবে। প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারবেন ১৫ই জুন অর্থাৎ আগামীকাল পর্যন্ত। পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া জন্য কম সময় দেওয়া হয়েছি বলে অভিযোগ তুলে শুরু থেকেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে গোটা রাজ্য। রোজই উঠে আসছে ভিন্ন জায়গার বোমাবাজি, গোলাগুলি, হাতাহাতি, গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা। ভোট পূর্ববর্তী সময়েই এহেন পরিস্থিতি দেখে কড়া পদক্ষেপ নিলো নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোটের সময় কেবল রাজ্য পুলিশ (State Police) নয়, মোতায়েন করা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীও (Central Forces)। যদিও কেন্দ্রীয় বাহিনী সব জায়গায় মোতায়েন করা হবেনা। কেবল মাত্র রাজ্যের স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই স্পর্শকাতর জেলাগুলির তালিকায় রয়েছে, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা (South and North 24 Parganas), হুগলি (Hooghly), পূর্ব মেদিনীপুর (East Midnapore), বীরভূম (Birbhum), মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) এবং জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri)।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বের গোড়ার দিক থেকেই সংঘর্ষে জ্বলছে গোটা রাজ্য। প্রত্যেক জেলা থেকেই নানান অশান্তির খবর উঠে আসছে। ইতিমধ্যেই মুর্শিদাবাদে এক কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করেই পরিস্থিতি চলে যাচ্ছে হাতের বাইরে। সূত্রের খবর, বীরভূমের আহমেদপুরে (Ahmedpur, Murshidabad) মনোনয়ন কেন্দ্রের বাইরে বিজেপি (BJP) সমর্থককে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, মনোনয়নকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় ইন্দাসে (Indus)। মঙ্গলবারের পর বুধবারেও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড় (Bhangar)। এদিন ভাঙড়ে লাঠালাঠি, বোমাবাজির মতো ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। ঝরেছে রক্তও। ক্যানিং-এও (Canning) দেখা গেলো দেখো সংঘর্ষের চিত্র।
ইতিমধ্যেই বহু এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অসংখ্য বোমা। এরকম উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখেই বেশ কয়েক জেলাকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে দাবি নির্বাচন কমিশনের। তবে এ বিষয়ে কমিশনের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। বরং রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা (State Election Commissioner Rajeev Sinha) স্পষ্ট জানিয়েছেন, নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন বুথকে স্পর্শকাতর ঘোষণা করা হয়েছে ভোটের কয়েকদিন আগেই। কমিশনার আরও জানান, কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) রায় পেলেই মোতায়েন করা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন বুথকে স্পর্শকাতর ঘোষণা করা হয়। সেটাও ভোটের কয়েকদিন আগে। স্পর্শকাতর জেলা সম্পর্কে আমার জানা নেই। কলকাতা হাই কোর্টের রায় হাতে পেলে তবেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
এরপরই স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে এখনই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি যে সমস্ত জেলায় রাজ্য পুলিশের অভাব রয়েছে, সেখানেও কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার বার্তা দিয়েছে আদালত। এছাড়াও ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও কড়া বার্তা দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে জোড়া মামলা দায়ের করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Subvendu Adhikari) এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী (Adhirranjan Chowdhury)। তাদের দাবি ছিল, মনোনয়নে জমা দেওয়ার জন্য সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টের পর্যন্ত যে সময় বরাদ্দ করা হয়েছে, তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য সময় বাড়াতে হবে। তবে এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ৯ জুনের বিজ্ঞপ্তিই বহাল রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট জানিয়েছে, আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে কমিশন।