Devi Skandhamata | পঞ্চমী-তে দেব সেনাপতি কার্তিককে কোলে নিয়ে পূজা নেন মা স্কন্দমাতা, অভয়মুদ্রায় সন্তানধারণের বর দেন দেবী

শাস্ত্রমতে, আশ্বিন মাসে শারদীয় নবরাত্রি (Navratri 2025) পালিত হয়। এই নয় দিন অর্থাৎ প্রথমা থেকে নবমী অবধি মা দুর্গার (Durga Puja 2025) নয়টি রূপ বা অবতারের পুজো করেন হিন্দু ধর্মবলম্বীরা। এই নয়টি রূপকে একত্রে 'নবদুর্গা' বলা হয়। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে শারদীয় নবরাত্রি ২০২৫র পবিত্র উৎসব। শেষ হবে ২ অক্টোবর, বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে। সারাদেশে ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে পবিত্র নবরাত্রি। আজ অর্থাৎ ২৭শে সেপ্টেম্বর দুর্গাপূজার পঞ্চমী। আজ, নবরাত্রির পঞ্চম দিনে ভক্তদের কাছ থেকে পূজা পান দেবী স্কন্দমাতা। তিনি দেব সেনাপতি কার্তিকের মা। প্রায়শই পদ্মের উপর বসে থাকেন বলে তাকে 'পদ্মাসনী'ও বলা হয়।
শাস্ত্রমতে, আশ্বিন মাসে শারদীয় নবরাত্রি (Navratri 2025) পালিত হয়। এই নয় দিন অর্থাৎ প্রথমা থেকে নবমী অবধি মা দুর্গার (Durga Puja 2025) নয়টি রূপ বা অবতারের পুজো করেন হিন্দু ধর্মবলম্বীরা। এই নয়টি রূপকে একত্রে 'নবদুর্গা' বলা হয়।
২২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে শারদীয় নবরাত্রি ২০২৫র পবিত্র উৎসব। শেষ হবে ২ অক্টোবর, বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে। সারাদেশে ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে পবিত্র নবরাত্রি। আজ অর্থাৎ ২৭শে সেপ্টেম্বর দুর্গাপূজার পঞ্চমী। আজ, নবরাত্রির পঞ্চম দিনে ভক্তদের কাছ থেকে পূজা পান দেবী স্কন্দমাতা। তিনি দেব সেনাপতি কার্তিকের মা। প্রায়শই পদ্মের উপর বসে থাকেন বলে তাকে 'পদ্মাসনী'ও বলা হয়।
রূপবর্ণনা: শাস্ত্র বলছে, দেবীর গাত্রবর্ণ উজ্জ্বল। তিনি চতুর্ভুজা, সিংহবাহিনী। তবে অধিকাংশ সময় দেবী পদ্মের ওপর বসে থাকেন। দেবীর তৃতীয় নয়ন সর্বদা খোলা থাকে। দেবীর বাম উরুতে বসে আছেন বালকরূপী ভগবান স্কন্দ, ডান হাত দিয়ে সন্তানকে আগলে রেখেছেন তিনি। বাম দিকের উপরের বাহুটি সর্বদা বরদানের ভঙ্গিতে ভক্তদের দিকে বাড়ানো। বাকি দুটি হাতে একটি করে পদ্মফুল ধারণ করেছেন, যা সামান্য উপরে উত্থিত।
দেবীর বিস্তৃত ধ্যানমন্ত্র: "ওঁ দ্বিভুজাং স্কন্দজননীং বরাভয়যুতাং স্মরেৎ | গৌরবর্ণাং মহাদেবীং নানালঙ্কারভুষিতাম || দিব্যবস্ত্রপরিধ ানাং বামক্রোড়ে সুপুত্রিকাম | প্রসন্নবদনাং নিত্যং জগদ্ধাত্রীং সুখপ্রদাম || সর্বলক্ষণসম্পন্নাং পীনোন্নতপয়োধরাম | স্কন্দমাতরং ধ্যেয়েৎ সর্বদাবিন্ধ্যবাসিনিং ||"
এই মন্ত্রে দেবীর রূপ এবং শক্তির বর্ণনা রয়েছে।
ওঁ দ্বিভুজাং স্কন্দজননীং বরাভয়যুতাং স্মরেৎ
ওঁ দেবী স্কন্দমাতা জননীকে স্মরণ করছি, যিনি দুটি হাত দিয়ে বর ও অভয় দান করেন।
গৌরবর্ণাং মহাদেবীং নানালঙ্কারভুষিতাম
যিনি গৌরবর্ণা (ফর্সা রঙের), মহাদেবী, এবং নানা অলংকারে সজ্জিত।
দিব্যবস্ত্রপরিধ ানাং বামক্রোড়ে সুপুত্রিকাম
যিনি দিব্যবস্ত্র পরিহিতা এবং বাম কোলে সুন্দর পুত্র স্কন্দকে ধারণ করেন।
প্রসন্নবদনাং নিত্যং জগদ্ধাত্রীং সুখপ্রদাম
যিনি সর্বদা প্রসন্নবদনা (হাসিমুখ যুক্ত), জগৎধাত্রী (জগতের রক্ষাকর্ত্রী) এবং সুখপ্রদা (সুখ প্রদানকারিনী)।
সর্বলক্ষণসম্পন্নাং পীনোন্নতপয়োধরাম
যিনি সকল লক্ষণে সম্পূর্ণা, পীনোন্নত পয়োধরা (বড় स्तनযুক্তা)।
স্কন্দমাতরং ধ্যেয়েৎ সর্বদাবিন্ধ্যবাসিনি
সেই দেবী স্কন্দমাতাকেই সর্বদা ধ্যান করা উচিত, যিনি বিন্দ্যবাসিনী (বিন্দ্য পর্বতে বাস করেন)।
পৌরাণিক কাহিনী: পুরান মতে, ব্রহ্মার বরে তারকাসুর অজেয় হয়ে উঠে দেবতাদের উৎপাত করতে থাকে। ব্রহ্মা তারকাসুরকে বর দিয়েছিলেন, একমাত্র ভগবান শিবের পুত্রের ছাড়া কেউ তাঁকে পরাজিত করতে পারবে না। ফলে মহাদেবের বিয়ে নির্বিঘ্নে হয়ে যাওয়াতে তারকাসুর উদ্বিগ্ন হলো। এদিকে তারকাসুরের অত্যাচারে ব্যাতিব্যাস্ত দেবতারা কৈলাসে পৌঁছে মহাদেবের কাছে পুত্রসন্তানের জন্যে কাকুতিমিনতি করতে লাগলেন। তখন ধ্যানমগ্ন মহাদেব এবং মহাদেবীর কপাল থেকে আগুনের শিখা বেরিয়ে একটি বিরাট অগ্নিগোলকে পরিণত হয়। ভগবান শিব অগ্নিদেবকে আদেশ দেন, গোলকটি ধারণ করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে। অগ্নিদেব তেজ সহ্য করতে না পেরে গোলকটি গঙ্গায় ফেলে দেন।
মা গঙ্গা গোলকটিকে 'সারবন' বা 'সারকন্দ' নামক নলখাগড়ার বনে স্থাপন করতেই সেখানে এক অনিন্দ্যসুন্দর শিশু আবির্ভূত হয়। এই শিশুই পার্বতিপুত্র স্কন্দ (কার্তিকেয়)। আর এই সুপুত্রের মাতা হওয়ার সুবাদে মাতা পার্বতী জগতে স্কন্দমাতা নাম পরিচিত হলেন। ভগবান কার্তিকেয় স্কন্দমাতার কাছ থেকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে তারাকাসুরকে বধ করেন।
দেবী স্কন্দমাতা তাঁর ভক্তদের মাতৃস্নেহ, নির্দেশনা এবং শক্তি প্রদান করেন। দেবীর পূজায় ভক্তদের জীবনে জ্ঞান, ধৈর্য, ও আধ্যাত্মিক বৃদ্ধি ঘটে এবং তারা সন্তান সুখ, শান্তি, ও সমৃদ্ধি লাভ করে। স্কন্দ মানে জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কাজ করা। স্কন্দমাতা হল সেই শক্তির রূপ যার উপাসনা এবং জ্ঞান শুভ ফলাফলের দিকে নিয়ে যায়। মাতৃরূপে উপাসনা করলে ভক্তদের সমস্ত বিপদে আপদে ছুটে আসেন মা।
- Related topics -
- পুজো ও উৎসব
- দূর্গা পুজো ২০২৫
- দুর্গাপুজো
- নবরাত্রি
- আজকের খবর
- এক নজরে