Weather Update | অবশেষে দিন কয়েকের মধ্যেই বঙ্গে ঢুকছে বর্ষা! তার আগেই প্রাক বর্ষায় ভিজবে রাজ্য! তান্ডবের জন্য এগোচ্ছে 'বিপর্যয়'!
কেরলে ঢুকছে বর্ষা, সপ্তাহ শুরুতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস বঙ্গে। উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই হচ্ছে বৃষ্টি। অন্যদিকে, শক্তি বাড়িয়ে এগিয়ে চলেছে ঘূর্ণিঝড় 'বিপর্যয়'।
কবে বর্ষা আসবে সেই দিকেই এতদিন চাতক পাখির মতো চেয়ে বসেছিল বঙ্গবাসী। প্রচন্ড তাপপ্রবাহ ও তাপমাত্রার জেরে নাভিশ্বাস ওঠার দায় সাধারণ মানুষের। এবার সেই কষ্ট দূর হতে চলেছে। দেশে হাজির হয়েছে বর্ষা (Monsoon in India)। ইতিমধ্যেই প্রাক বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণবঙ্গে চলতি সপ্তাহের রবিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চললেও, এরই মধ্যে বেশ কয়েক এলাকায় প্রাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু হবে। ইতিমধ্যে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গে। জানা গিয়েছে, রবি-সোমবারের মধ্যে উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও জলপাইগুড়িতে বর্ষা প্রবেশ সাধারণত হয় ৭ই জুন। তবে ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়েছে দার্জিলিং (Darjeeling), আলিপুরদুয়ার (Alipurduar), কোচবিহার (Cooch Behar) এবং জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলাতে। এই বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে শনিবার থেকে। রবিবার থেকে উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বলেও খবর। পাশাপাশি, রবি ও সোমবার উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের (Sikkim) বেশ কিছু এলাকায় ৭০ থেকে ১১০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। তবে আপাতত কয়েকদিন উত্তরবঙ্গের মালদা (Malda), শিলিগুড়ি (Siliguri), বাগডোগরা (Bagdogra), উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে (North and South Dinajpur) তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা থাকবে।
অন্যদিকে, আপাতত রবিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের (Heatwave) সতর্কতা থাকবে। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত পুরুলিয়া (Purulia), বাঁকুড়া (Bankura), বীরভূম (Birbhum), পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান (East and West Burdwan), পশ্চিম মেদিনীপুর (West Medinipur), ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা রয়েছে। বাদ বাকি জেলাগুলোতে বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় প্রচন্ড আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বজায় থাকবে। যদিও শনিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর (East Medinipur) এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে (North and South 24 Parganas)। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, রবিবারে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে দক্ষিণবঙ্গে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে কলকাতা (Kolkata) সহ হাওড়া (Howrah), হুগলি (Hooghly), বীরভূম (Birbhum), মুর্শিদাবাদ (Murshidabad), নদিয়া (Nadia), পূর্ব মেদিনীপুর (East Midnapore), উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা (North and South 24 Parganas) জেলাগুলিতে। যার ফলে নতুন সপ্তাহের শুরু থেকেই তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি কমবে দক্ষিণবঙ্গে। সূত্রের খবর , কলকাতায় শনিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া বজায় থাকবে। তবে রবিবার থেকেই বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে।
প্রত্যাশিত সময়ের সাতদিন পর ভারতের মূল ভূখণ্ড কেরলে (Kerala) বর্ষা ঢুকেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর-পূর্ব ভারতেও ঢুকবে মৌসুমী বায়ু। পাশাপাশি, জানা গিয়েছে আগামী ৩৬ ঘন্টার মধ্যে তীব্র আকার ধারণ করতে চলেছে ‘ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়’ (Cyclone Biparjoy)। এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণেই ভারতে প্রায় ১ সপ্তাহ দেরিতে ঢুকেছে বর্ষা। আশা করা যাচ্ছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমগ্র কেরল, তামিলনাড়ু (Tamil Nadu), কর্নাটকের (Karnataka) দিকে বর্ষা এগোবে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর বঙ্গোপসাগরের শাখাটিও এই সময়ে মেঘালয় (Meghalaya), নাগাল্যান্ড (Nagaland), মিজোরাম (Mizoram), মণিপুরের (Manipur) কিছু অংশে অগ্রসর হবে। ফলে উত্তর পূর্ব ভারতেও বৃষ্টি শুরু হয়ে যেতে পারে দু-একদিনের মধ্যে।
আজ অর্থাৎ শুক্রবার সকালে টুইট করে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (IMD) জানিয়েছে, দিল্লির মৌসম ভবনের মতে, পরবর্তী দুই দিনে এই ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। যা গতকাল অর্থাৎ ৮ই জুন রাত ১১টা বেজে ৩০ মিনিটে গোয়া (Goa) থেকে ৮৪০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে পূর্ব-মধ্য আরব সাগরের উপরে অবস্থিত ছিল অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়টি।
জানা গিয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড় ক্রমশ উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হওয়ায় গোয়া এবং গুজরাটে এই ঝড়ের ভালোরকম প্রভাব পড়তে পারে। যার জন্য ইতিমধ্যেই ওই এলাকার মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।এছাড়াও বন্দরগুলিতে ‘ডিসট্যান্ট ওয়ার্নিং সিগন্যাল’ (Distant Warning Signal) উত্তোলনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে, আহমেদাবাদের আবহাওয়া কেন্দ্রের ডিরেক্টর মনোরমা মোহান্তি (Ahmedabad Meteorological Center Director Manorama Mohanty) বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে, ১০ থেকে ১২ জুন বাতাসের গতিবেগ ৪৫ থেকে ৬৫ নটিক্যাল মাইল (Nautical Miles) পর্যন্ত যেতে পারে।
মৌসম ভবনের আশঙ্কা, 'বিপর্যয়'র ফলে দক্ষিণ গুজরাট (South Gujarat) এবং সৌরাষ্ট্র-সহ উপকূলীয় অঞ্চলে হালকা বৃষ্টি এবং বজ্রগর্ভ মেঘ-সহ ঝড় হতে পারে। প্রয়োজন হলে জেলার উপকূলরেখায় অবস্থিত ২২টি গ্রামের প্রায় ৭৬,০০০ মানুষকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে।