লাইফস্টাইল

International No Diet Day | কেন পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নো ডায়েট দিবস?

International No Diet Day | কেন পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নো ডায়েট দিবস?
Key Highlights

আন্তর্জাতিক নো ডায়েট দিবসে খান নিজের পছন্দ মতো খাবার। জানুন এই দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে।

শরীর সুস্থ রাখতে এবং ওজন কমাতে বর্তমানে আমরা অনেকেই অনেক রকমের ডায়েট (Diet) করে থাকি। শরীর ভালো রাখতে নিজের পছন্দের খাবার খাওয়া বন্ধ করে কিছুটা জোর করেই এই ডায়েট পালন করেন অনেকে। ডায়েট মানার জন্য অনেকেই পছন্দের খাবার ত্যাগ করে দেন দিনের পর দিন, মাসের পর মাস। তবে চিন্তা নেই, ডায়েট থেকে বেরিয়ে ক্যালোরি, পরিমাপ না দেখেই আজ আপনি খেতেই পারেন আপনার ইচ্ছা মত খাবার। কারণ আজ অর্থাৎ ৬ই মে আন্তর্জাতিক নো ডায়েট দিবস (International No Diet Day)।

আন্তর্জতিক নো ডায়েট দিবস মানে কিন্তু অসুস্থ খাদ্যাভাসের প্রচার করা নয়। বরং ডায়েটের অভ্যাস ছাড়াই কীভাবে সুস্থ থাকা যায় তারই সচেতনতা প্রচার করা এই দিনের লক্ষ্য। এছাড়াও বর্তমান যুগে চেহারা (Body Shape), দেহের ওজন (Body Weight) ও দেহের আয়তন (Body type) নিয়ে যে অতিরিক্ত উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে সেটি এড়ানোর বার্তাও দেওয়া হয় নো ডায়েট দিবসের দিন। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় অনেকে পছন্দের চেহারা বানানোর জন্য এমন ডায়েট ফলো করেন যা তাদের অপুষ্টির কারণ হয়ে ওঠে। সেই দিকে তাকিয়েই অপ্রয়োজনীয় ডায়েট দূরে রাখতে সচেতন বার্তা দেওয়া। 

আন্তর্জতিক নো ডায়েট দিবসের ইতিহাস | History Of International No Diet Day :

এই দিবসের সূচনা ১৯৯২ সালে ব্রিটিশ নারীবাদী সমাজকর্মী মেরি এভানসের (Mary Evans) হাত ধরে। স্বাভাবিক চেহারা (Natural Body Type) সমাজে মেনে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আন্তর্জাতিক নো ডায়েট দিবসের সূচনা করেন তিনি। বরাবরই একটি নির্দিষ্ট ধরনের চেহারাকে সুস্থ ও বেশি আকর্ষণীয় বলে গণ্য করা হয়। মনে করা হয় কারুর এই নির্দিষ্ট ধরনের চেহারা না হলে সে সুস্থ নয়, আর এই ধারনাকে নস্যাৎ করতেই নো ডায়েট দিবস পালন করার চিন্তাভাবনা শুরু হয়। ১৯৯২ সালে ব্রিটেন থেকে নো ডায়েট দিবস পালনের প্রচার শুরু হয়, যা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে।

আন্তর্জাতিক নো ডায়েট দিবসের তাৎপর্য | Significance Of International No Diet Day :

শারীরিক গ্রহণযোগ্যতা | Body Acceptance :

বর্তমানে শরীরের ধরণ, ওজন সম্পর্কে একটি ধারণা হয়ে গিয়েছে, যে ওই নির্দিষ্ট চেহারা না হলে তা সুস্থ নয়। আর এই কারণে অনেকেই অনেক রকম শরীর চর্চা, ডায়েট করে থাকেন যা অনেক সময় হয়ে ওঠে হানিকারক। আন্তর্জাতিক নো ডায়েট দিবস এই ধারণাটিকে প্রচার করে যে সমস্ত দেহের ধরন সুন্দর।

শরীর নিয়ে ইতিবাচকতা | Body Positivity :

শরীরের ইতিবাচকতা, আত্ম-গ্রহণযোগ্যতা এবং আত্ম-প্রেম সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয় নো ডায়েট দিবসের দিন। অনেকেই মনে করেন একটি নির্দিষ্ট ধাঁচের চেহারা না হলে তা সুস্থ নয়, সুন্দর নয় এবং যার ফলে নিজের চেহারা সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। এই নেতিবাচক ধারণা শরীরের ওপর প্রভাব ফেলার সঙ্গে প্রভাব ফেলে মানসিক স্বাস্থের ওপরেও। ফলে শরীর নিয়ে নেতিবাচক ধারণা দূর করতে সচেতনতা প্রচার করা আন্তর্জাতিক নো ডায়েট দিবসের অন্যতম উদ্দেশ্য ।

ডায়েট সম্পর্কে ভুল ধারণা | Myths About Diet:

বর্তমানে আমরা অনেকেই ডায়েট ফলো করি, কিন্তু এই ডায়েট সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে সমাজে। আর এই ডায়েট সম্পর্কে ভুল ধারণার ফলে প্রভাব পরে শরীরে।

ক্র্যাশ ডায়েট | Crash Diet :

অনেকের ধারণা খুব কম-ক্যালোরির ডায়েট, বা ক্র্যাশ ডায়েট, শরীরের পক্ষে ভালো। এই ধরনের ডায়েটে প্রতিদিন ৮০০-এর কম ক্যালোরি খাবার খেতে হয়। তবে এই ডায়েট অনেক সময় শরীরের অপুষ্টির কারণ হয়ে ওঠে, এমনকি এর কারণে হতে পারে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টও (Cardiac Arrest)।

ডিম সম্পর্কে ভুল ধারণা | Myth About Eggs :

বহুক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকে এমন ডায়েট ফলো করেন যা ডিম খেতে বারণ করে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার, যার মধ্যে রয়েছে ৬ গ্রাম প্রোটিন। ফলে চেষ্টা করুন আপনার ডায়েটে অন্তত একটা করে ডিম রাখার। তবে যদি আপনি কোলেস্টেরল (Cholesterol) রোগে আক্রান্ত হন তাহলে এই ক্ষেত্রে অবশ্যই পরামর্শ নিন ডাক্তারের কাছ থেকে।

গ্লুটেন-মুক্ত ডায়েট | Gluten Free Diet :

বর্তমানে গ্লুটেন মুক্ত ডায়েট ফলো করেন অনেকে। গ্লুটেন হল একটি প্রোটিন যা গম, বার্লি, রাই এবং ট্রিটিকেলে পাওয়া যায়। আর গ্লুটেন ফ্রি ডায়েট হলো এই সকল খাবার মুক্ত ডায়েট, অর্থাৎ এই ডায়েট ফলো করলে আপনি খেতে পারবেন না গম, বার্লি, রাই ইত্যাদি গ্লুটেন যুক্ত খাবার। প্রধানত গ্লুটেন-মুক্ত ডায়েট সেলিয়াক রোগ (Celiac Disease) বা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সুপারিশ করা হয়। তবে অনেকের ক্ষেত্রে এই ডায়েট হতে পারে ক্ষতিকারক। 

শরীর ভালো রাখতে একটি নির্দিষ্ট ডায়েট মানা লাভবান, কিন্তু ডায়েট ফলো করার আগে অবশ্যই ডায়েটিশিয়ানের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ ব্যক্তি বিশেষে নির্ভর করে ডায়েটের ধরণ ও ডায়েট চার্ট (Diet Chart)। তবে অনেকেই কম খাবার খেয়ে অথবা বিশিষ্ট কিছু খাবারের ওপর নির্ভর করে থাকেন, যা হয়ে উঠতে পারে ক্ষতিকারক। বিশেষজ্ঞদের মতে, সব রকম খাবার খেয়ে শরীর চর্চা করলেই সুস্থ রাখা যায় নিজের শরীরকে। ফলে আপনি ডায়েট ফলো না করেই আপনার পছন্দের খাবার খেয়ে কেবল প্রয়োজন মতো শরীর চর্চা করে থাকতে পারবেন সুস্থ। এই ধারণা সম্পর্কে সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এবং সব ধরণের চেহারা সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা প্রচার করতেই পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নো ডায়েট দিবস।