AI Teacher | শিক্ষা ক্ষেত্রেও চাকরি খাবে AI? কেরলের স্কুলে হাজির ভারতের প্রথম AI শিক্ষিকা ম্যাডাম 'আইরিশ'!

Saturday, March 9 2024, 7:26 am
highlightKey Highlights

কেরলের তিরুবনন্তপুরমের কেটিসিটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লঞ্চ করা হলো ভারতের প্রথম AI শিক্ষিকা 'আইরিশ'। তিন ররকম ভাসায় কথা বলতে পারে সে। রয়েছে ক্লাসে ঘোরার জন্য চাকাও।


সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলাচ্ছে যুগ। উন্নত হচ্ছে প্রযুক্তি। যে কাজ করতে লাগতো বেশ কয়েক ঘন্টা এমনকি দিন, সে কাজ কয়েক মিনিটে করে দিচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। বর্তমানে এর বড় নিদর্শন হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই (AI)। যেকোনও বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তার উত্তর দিয়ে দিতে পারে এই এআই। এমনকি মানুষের থেকেও নাকি এআই নিখুঁত কাজ করে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। এবার এই উন্নত প্রযুক্তিই আসছে স্কুলে! শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে এবার বাচ্চাদের পড়াবে এআই শিক্ষক (AI teacher)।


জানা গিয়েছে, কেরলের তিরুবনন্তপুরমের কেটিসিটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই এআই শিক্ষিকা লঞ্চ করা হয়েছে। কাদুভাইল থাঙ্গাল চ্যারিটেবল ট্রাস্টের একটি উদ্যোগ এটি। এখানে দেশের প্রথম এআই শিক্ষিকাকে সামনে আনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ক্লাস রুমে পৌঁছে পড়ুয়াদের সঙ্গে তাঁর আলাপচারিতা এখন তুমুল ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গিয়েছে, কেরলের তিরুবনন্তপুরমের কেটিসিটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এআই শিক্ষিকাকে মেকারল্যাবস এডুটেক কোম্পানির সহযোগিতায় তৈরি এই এআই শিক্ষকের নাম আইরিশ। আইরিশ হল এটিএল (ATL) বা অটল টিঙ্কারিং ল্যাব (Atal Tinkering Lab) প্রকল্পের অংশ, যা ২০২১ নীতি আয়োগ (NITI Aayog) উদ্যোগের একটি অন্যতম ফলাফল। স্কুলে পড়ুয়াদের পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যকলাপের প্রচারের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এই এআই শিক্ষক (AI teacher)। বস্তুত, কেরলের ওই স্কুল মার্কারল্যাব এডুটেক সংস্থার সঙ্গে গাটছড়া বেঁধে এআই শিক্ষক তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল। ২০২১ সালে নীতি আয়োগের উদ্যোগে স্কুলে স্কুলে পাঠ্যক্রম-বহির্ভূত কাজেও নজর দেওয়া হয়। তারই অঙ্গ হিসাবে ওই রোবট শিক্ষক তৈরির কাজে হাত লাগায় পড়ুয়ারা। তাদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন বিশেষজ্ঞেরা।


আইরিশে'র'  বৈশিষ্ট্য :
মেকারল্যাবসের মতে, আইরিশ হল 'রোবোটিক্স এবং জেনারেটিভ এআই' (Robotics and Generative AI) এর সংমিশ্রণ। রোবটটিতে একটি ইন্টেল প্রসেসর এবং এটির একটি সহ-প্রসেসর রয়েছে যা বিভিন্ন ধরণের কমান্ড পরিচালনা করবে এবং শুধুমাত্র এর মাধ্যমেই রোবটটি সমস্ত কাজ সম্পন্ন করবে। আইরিশের চাকাও রয়েছে যার মাধ্যমে এটি চলতে পারে। আইরিশ তিনটি ভাষায় কথা বলতে পারে এবং কঠিন প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারে। ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্সের মাধ্যমে ওই এআই শিক্ষিকার সঙ্গে কথাবার্তা বলা যায়।


সম্প্রতি মেকারল্যাবের তরফে ইনস্টাগ্রামে ‘আইরিশ ম্যাডামের’ একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিয়োটিতে একজন এআই শিক্ষককে দেখা গিয়েছে, যিনি অনেক ভাষা জানেন। এটিএল (ATL) বা অটল টিঙ্কারিং ল্যাব (Atal Tinkering Lab) এর প্রকল্প আইরিশ বিভিন্ন বিষয় থেকে জটিল প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারে। এটি ইন্টারেক্টিভ, ব্যক্তিগত ভয়েস সহায়ক হিসাবেও কাজ করতে পারে আইরিশ। জানা গিয়েছে, একই সঙ্গে অনেকগুলো বিষয়ে পড়াতে পারেন এই ‘এআই দিদিমণি’। কঠিন কঠিন অঙ্ক থেকে ধাঁধা, সব কিছুর রহস্যভেদ করতে পারেন আইরিশ। মেকারল্যাবস এডুটেক কোম্পানি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে এই এআই শিক্ষক সম্পর্কে লিখেছে, উদ্ভাবনের অগ্রভাগে থাকা, মেকারল্যাবস এডুটেক তার সর্বশেষ সৃষ্টি 'আইরিশ– এআই শিক্ষক রোবট' লঞ্চ করতে পেরে গর্বিত, যা শিক্ষার ইতিহাসে অন্যতম হতে চলেছে।
এই এআই শিক্ষক অবিকল মানুষেরই মতো দেখতে। নীতি আয়োগের নিয়ন্ত্রণাধীন অটল টিঙ্কারিং ল্যাবের সহযোগিতায় তৈরি হয়েছে এআই রোবট টিচার আইরিশ। সব বিষয়েই অগাধ জ্ঞান, কারণ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং করে তেমনভাবেই তৈরি করা হয়েছে আইরিশকে। সিলেবাস ধরে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিটা বিষয়ে গভীরে গিয়ে পড়ানোর মতোই প্রোগ্রামিং করা হয়েছে আইরিশের সিস্টেমে। এমনকী সিলেবাসের বাইরেও যে কোনও বিষয়ে নিয়ে নাকি ক্লাসে আলোচনাও করে আইরিশ। পড়াও ধরে। কীভাবে বাচ্চাদের পড়াতে হবে, পড়া বোঝাতে হবে সেসব ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে এই রোবটকে। এই শিক্ষিকাকে নাকি বেশ মনেও ধরেছে পড়ুয়াদের।


উল্লেখ্য,ডিজিটালাইজেশন যত হচ্ছে, ততই বাড়ছে বেকারত্বের জ্বালা। চাকরির জন্য বছরের পর বছর ধর্নায় বসছেন যোগ্য প্রার্থীরা, অনশন আন্দোলনে নামছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। এমনকী দেখা গেছে অনেক সরকারি স্কুলেই ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত সঠিক নয়। তাই স্কুলছুটদের সংখ্যাও বাড়ছে। এমন অস্থির পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে শিক্ষক-শিক্ষিকাও তৈরি করে ফেলছেন বিজ্ঞানীরা, যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে উদ্বেগ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব পড়বে বড্ড বেশি। বিপুল সংখ্যক কর্মী চাকরি খোয়াতে পারেন। সমীক্ষা বলছে আগামী দিনে কাজের বাজারে একটা বড় পরিবর্তন আসতে আসবে এই কারণেই। ২০২৫ সালে প্রায় সাড়ে আট কোটি চাকরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আওতায় চলে যেতে পারে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File