Malaria Vaccine | বিশ্বের প্রথম ও সম্ভাব্য দ্বিতীয় ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন আনছে ভারত!

Tuesday, July 11 2023, 6:00 am
highlightKey Highlights

আফ্রিকার শিশুদের ওপর ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবে ভারত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে ভ্যাকসিন বানানোতে মিলেছে অনুমোদন। চলতি বছরের শেষের দিক থেকেই শুরু হবে টিকাকরণ।


স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে আরও একবার বিশ্বকে নেতৃত্ব করবে ভারত (India)। মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়া (Malaria) যুদ্ধে সর্বপ্রথম ম্যালেরিয়া টিকা প্রয়োগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) বা 'হু'র (WHO) অনুমতি পেল ভারত। চলতি বছর অর্থাৎ  ২০২৩ এর শেষ থেকেই শুরু হবে ম্যালেরিয়ার টিকাকরণ, যা শেষ হবে ২০২৫ এ।

ম্যালেরিয়া যুদ্ধে সর্বপ্রথম ম্যালেরিয়া টিকা প্রয়োগে অনুমতি পেল ভারত
ম্যালেরিয়া যুদ্ধে সর্বপ্রথম ম্যালেরিয়া টিকা প্রয়োগে অনুমতি পেল ভারত

এর আগেই মহামারী কোভিডের (Covid-19) সময় করোনা ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) নিয়ে বিশ্বের অসংখ্য মানুষকে সুস্থ্য করার গুরু দায়িত্ব নিয়েছিল ভারত। ম্যালেরিয়া নতুন কোনও রোগ না হলেও, দীর্ঘ সময় ধরে মানব জীবনে প্রকোপ ফেলে আসছে এই মশাবাহিত রোগ। বিশেষত তৃতীয় বিশ্ব দেশগুলি অর্থাৎ যেসব দেশ এখনও পুরোপুরি উন্নত হয়নি, 'আন্ডার ডেভেলপড' (Under Developed) বা 'ডেভেলপিং’ (Developing) দেশের তালিকায় পরে সেখানে এই সংক্রমণ দেখা যায় বেশি। প্রতি বছরই ম্যালেরিয়ার জন্য প্রাণ হারান অসংখ্য মানুষ। ব্যতিক্রম নয় খোদ ভারতও। প্রতি ১ মিনিটে পাঁচ বছর বয়সের নীচের একটি করে শিশুর মৃত্যু হয় ম্যালেরিয়ায়। তবে এবার এই রোগ প্রতিরোধ করতে গোটা বিশ্বকে আশার আলো দেখিয়েছে দেশ।

প্রতি ১ মিনিটে পাঁচ বছর বয়সের নীচের একটি করে শিশুর মৃত্যু হয় ম্যালেরিয়ায়
প্রতি ১ মিনিটে পাঁচ বছর বয়সের নীচের একটি করে শিশুর মৃত্যু হয় ম্যালেরিয়ায়

সূত্রের খবর, ভারত 'হু'র তরফ থেকে সাব-সাহারান আফ্রিকার (Sub-Saharan Africa) শিশুদের এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে। গত ৫ই জুলাই গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (Global Alliance for Vaccines and Immunization) ঘোষণা করে, আফ্রিকার ১২টি দেশে প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে এবছরের শেষের দিকে। এই টিকাকরণ পর্ব শেষ হবে ২০২৫ সালে।

আফ্রিকার শিশুদের ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে ভারত
আফ্রিকার শিশুদের ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে ভারত

ব্রিটিশ ফার্মা সংস্থা গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (GlaxoSmithKline) এর দীর্ঘদিনের গবেষণার ফল এই এই টিকা, যার জেনেরিক নাম (Generic Name) হল আরটিএস, এস/এএস০১ (RTS, S/AS01)। বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক অনুমান, ২০২৬-এর মধ্যে ম্যালেরিয়া টিকার চাহিদা হবে ৪ থেকে ৬ কোটি ডোজ। যা ২০৩০ সালে বেড়ে হবে ৮-১০ কোটি। জিএসকে’র তৈরি এই টিকার প্রোটিন (Protein) অংশটি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দেশীয় সংস্থা ভারত বায়টেক (Bharat Biotech)। এমনকি ২০২৯ সাল পর্যন্ত এই সংস্থাই টিকা সরবরাহ করবে।

২০২৯ সাল পর্যন্ত ভারত বায়টেক সংস্থাই টিকা সরবরাহ করবে
২০২৯ সাল পর্যন্ত ভারত বায়টেক সংস্থাই টিকা সরবরাহ করবে

অন্যদিকে, দ্বিতীয় ম্যালেরিয়া টিকাটি তৈরি করছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি (Oxford University)। যার নাম আর ২১/ম্যাট্রিক্স-এম (R21/Matrix-M)। এটিও তৈরি করবে আর একটি দেশীয় সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (Serum Institute of India)। আশা, এই টিকার জন্যও অনুমোদন মিলবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে। উল্লেখ্য, এই বিষয়ে পিজি’র সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ডাঃ যোগিরাজ রায় (Dr. Yogiraj Roy, Head of Infectious Diseases Department of PG) বলেন, দেশে ভাইভ্যাক্স (Vivax) এবং ফ্যালসিফেরাম (Falciparum) এই দু’ধরনের ম্যালেরিয়ার অনুপাত মোটামুটি ৫০-৫০। তাই টিকা দিলে দু’ধরনের ম্যালেরিয়ার কথা ভেবেই দু’টি পৃথক ধরনের ম্যালেরিয়ার জন্য কার্যকর টিকা দেওয়া উচিত। তবে মশাদমন, মশারির ব্যবহার ও সময়ে আদর্শ চিকিৎসার ওপরেও জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

দ্বিতীয় ম্যালেরিয়া টিকাটি তৈরি করছে আর একটি দেশীয় সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া
দ্বিতীয় ম্যালেরিয়া টিকাটি তৈরি করছে আর একটি দেশীয় সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া

সূত্রের খবর, ঘানা (Ghana),  কেনিয়া (Kenya), লাইবেরিয়া (Liberia), বেনিন (Benin), উগান্ডা (Uganda), বুরুন্ডি (Burundi), ক্যামেরুন (Cameroon), কঙ্গো (Congo), মালাউই (Malawi), নাইজার (Niger), সিয়েরা লিওন (Sierra Leone) ও বুরকিনা ফাসো (Burkina Faso) এলাকায় পাঁচ মাস বয়সী শিশুদের চারটি ডোজ হিসেবে দেওয়া হতে পারে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File