লাইফস্টাইল

Ice Cream | গরমে আইসক্রিম খেয়ে মুখে ঠান্ডা অনুভূত হলেও শরীর হচ্ছে উল্টে গরম! আইসক্রিম খাওয়া নিয়ে কী বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা?

Ice Cream | গরমে আইসক্রিম খেয়ে মুখে ঠান্ডা অনুভূত হলেও শরীর হচ্ছে উল্টে গরম! আইসক্রিম খাওয়া নিয়ে কী বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা?
Key Highlights

নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে ইউনিভার্সিটি অব ক্যানসাসের ডায়েটিশিয়ান টাটা মার্শেলো জানান, আইসক্রিম আমাদের মুখে তাৎক্ষণিক ঠান্ডা লাগার অনুভূতি দিলেও আদতে আমাদের শরীর গরম করে।

আট থেকে আশি সকলেই আইসক্রিম খেতে পছন্দ করেন। গরমকালে আইসক্রিম কাপ (ice cream cups) বা স্টিক নিয়ে আয়েশে তা খাওয়ার দৃশ্য দেখা যায় এদিক ওদিক। আইসক্রিম খেলেই যেন মনে হয় যেন গোটা শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল। কিন্তু আদতে আইসক্রিম কিন্তু আমাদের শরীর ঠান্ডা করে না! এমনকি বিশেষজ্ঞরা বারবার নিয়মিত আইসক্রিম খেতে বারণও করছেন। প্রায়ই আইসক্রিম খেলে শরীরে নানান সমস্যা দেখা যায় বলে সতর্ক করছেন তাঁরা। তাই যতই গরম পড়ুক না কেন, নিয়মিত আইসক্রিম খাওয়া যাবে না। কিন্তু কেন আইসক্রিম খেতে বারণ করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা?

আইসক্রিম কি শরীর ঠান্ডা করে ?

এপ্রিল পড়তে না পড়তেই প্রচন্ড গরমে জ্বলছে বাংলা। সেক্ষেত্রে গরমে একটু ঠান্ডার ছোঁয়া পেতে অনেকেই আইসক্রিম কাপ (ice cream cups) বা স্টিক কিনে খান। আবার অনেকে যান আইসক্রিম পার্লার (ice cream parlour)-এও।  কাঠি আইসক্রিম হোক বা কাপ আইসক্রিম, মুখে দিলেই শান্তি, ঠান্ডা! কিন্তু আইসক্রিম আসলে যে শরীর ঠান্ডা করে না, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। আইসক্রিম শরীর ঠান্ডা তো করেই না বরং তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে ইউনিভার্সিটি অব ক্যানসাসের ডায়েটিশিয়ান টাটা মার্শেলো জানান, আইসক্রিম আমাদের মুখে তাৎক্ষণিক ঠান্ডা লাগার অনুভূতি দিলেও আদতে আমাদের শরীর গরম করে। আসলে আইসক্রিমে থাকা পূর্ণ দুধ, ফ্যাট, শর্করা হজম করা পাকস্থলীর জন্য সহজ কাজ নয়। যত ধরনের খাদ্য উপাদান আছে, এর ভেতর ফ্যাট বা চর্বিজাতীয় খাবার ভাঙা শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্টসাধ্য। তাই ফ্যাট ভাঙতেই সবচেয়ে বেশি তাপ উৎপন্ন হয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন ফ্যাট, প্রোটিন আর শর্করার সমন্বয়ে তৈরি আইসক্রিমের মতো অস্বাস্থ্যকর খাবার খুব কমই আছে। আইসক্রিম তৈরির উপাদানগুলো ভাঙতে গিয়ে যে পরিমাণ তাপ উৎপন্ন হয়, তা শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। গরমে অস্বস্তি, পেট ফাঁপা, বদহজমের জন্য গরমে আইসক্রিম খাওয়া দায়ী। আইসক্রিম সাময়িকভাবে যে ঠান্ডার অনুভূতি দিলেও, তা পরিপাকক্রিয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলে যায়।

আইসক্রিম খেলে আর কী কী শরীরের ক্ষতি হয়?

বিশেষজ্ঞরা বারবার নিয়মিত আইসক্রিম খেতে বারণ করছেন। মাঝেমাঝেই আইসক্রিম খেলে শরীরে নানান সমস্যা দেখা যায় বলে সতর্ক করছেন তাঁরা। তাই যতই গরম পড়ুক না কেন, নিয়মিত আইসক্রিম খাওয়া যাবে না। এতে সমস্যার শেষ থাকবে না।

 বাড়তে পারে​ ব্লাড সুগার :

 আইসক্রিমে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে সুগার। তাই এর স্বাদ মিষ্টি। এই খাবার মুখে তোলার পরই খুব দ্রুত তা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। অর্থাৎ আইসক্রিম খেলে হঠাৎ করেই শরীরে সুগার বেড়ে যায়। এটা ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য খারাপ। এদিকে নিয়মিত রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়তে থাকলে, একটা সময়ের পর সুস্থ মানুষেরাও ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হতে পারেন। এই পরিস্থিতি কোনও মতেই কাম্য নয়। তাই আইসক্রিম খান মেপে। সেরকম হলে সুগার ফ্রি আইসক্রিম (sugar free ice cream) খেতে পারেন।

 ওজন বৃদ্ধি হয়​ :

বর্তমানে অনেকেই ওবেসিটিতে আক্রান্ত। আর ওজন বেশি থাকাটা বিরাট সমস্যার কারণ। এক্ষেত্রে নানা ধরনের বিপাকীয় অসুখ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা চাই। এক্ষেত্রে নিয়মিত আইসক্রিম খেলে ওজন কন্ট্রোলে রাখা একবারেই সম্ভব হয় না। বরং তরতরিয়ে ওজন বাড়ে। আইসক্রিমে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট ওজন বাড়ায়।

হার্টের অসুখ​ মাথাচাড়া দেয় :

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের তরফে জানানো হয়েছে যে, এক স্কুপ আইসক্রিমে থাকে প্রায় ৪০ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এই স্যাচুরেটেড ফ্যাট কিন্তু হার্টের শত্রু। এই ধরনের ফ্যাট হার্টের রক্তনালীতে গিয়ে জমতে পারে। তাই নিয়মিত আইসক্রিম খেলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

দাঁতের সমস্যা হতে পারে​ :

আইসক্রিম থেকে দাঁতের সমস্যাও হতে পারে। এতে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে চিনি। এই অতিরিক্ত চিনি কিন্তু দাঁতের মাঝে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তখন দাঁতের ক্ষয় হয়। এছাড়া যাঁদের দাঁত অতিরিক্ত সংবেনশীল, তাঁরাও আইসক্রিম খাবেন না। এতে দাঁতে ব্যথা, শিরশিরানির আশঙ্কা কমবে।

কেবল আইসক্রিমই নয়, এই গরমে যেকোনো কোমল পানীয়, অতিরিক্ত চিনি আর বরফ দেওয়া পানীয় থেকে দূরে থাকতে বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। খেতেই যদি হয়, তবে লেবুর শরবত, ডাবের পানি, চিনি ছাড়া লস্যি খেতে পারেন।