Buddhadeb Bhattacharjee | শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি বুদ্ধদেবের! ইশারায় সাড়া দিচ্ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী!
শনিবার ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচাৰ্য। সোমবার সকালে বুদ্ধদেবের ফুসফুসের সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট ভালো আসে বলে জানান চিকিৎসকরা। নতুন করে বাড়েনি ফুসফুসের সংক্রমণ।
ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ভর্তি পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচাৰ্য (Buddhadeb Bhattacharya)। তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে বেশ চিন্তায় চিকিৎসক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল, সাধারণ মানুষ। বর্তমানে যদিও বর্ষীয়ান নেতার শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।
এদিন অর্থাৎ সোমবার সকাল ৭টা ২০ নাগাদ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর ফুসফুসের সিটি স্ক্যান (CT Scan) হয়। যার প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁর ফুসফুসে আর নতুন করে সংক্রমণ বাড়েনি। বাইল্য়াটারাল ইনফেকশনের (Bilateral Infection) মাত্রাও ধীরে ধীরে কমছে বলে জানান চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুদ্ধ বাবুকে যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে, তা কাজ করছে। পাশাপাশি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক, নতুন করে জ্বর আসেনি। দিতে হয়নি তাঁকে ঘুমের ওষুধ। তবে চিকিৎসকরা জানান, এর মধ্যে সবথেকে ভালো খবর, চেতনা ফিরেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। কথা না বলতে পারলেও, হাত নেড়ে ইশারায় সাড়া দিচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার, ২৯শে জুলাই ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণ নিয়ে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সেই দিন রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হয়েছিল। শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁকে ইনটিউবেট করে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। এরপর রবিবার বেলায় তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের ৯ সদস্য বৈঠকে বসেন। এরপর বুদ্ধদেববাবুর দুই ফুসফুসে নিউমোনিয়ার (Pneumonia) কারণ অনুসন্ধানে একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হয়। রিপোর্ট দেখে জানা যায়, ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট ক্লেবসিয়েলার (Drug Resistant Klebsiella) জন্যই এই নিউমোনিয়া হয়েছে। পাশাপাশি, রক্তচাপ ও নাড়ির গতির সমস্যা, ক্রিয়েটিনিন বেশি থাকা ইত্যাদি আনুসঙ্গিক সমস্যাও রয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, এদিনের সিটি স্ক্যানের রিপোর্টে বুদ্ধ বাবুর ফুসফুসে ফাইব্রসিস (Fibrosis) ধরা পড়েছে। চিকিৎসকদের মতে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর সিওপিডির (COPD) রোগী, অর্থাৎ তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে দীর্ঘকাল ধরে। তারওপর এর আগে তিনি কোভিড (Covid-19) আক্রান্তও হয়েছিলেন। ফলে এই সব কারণে ফাইব্রসিস দেখা দিতে পারে। সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট ভালো এলেও, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এখনও সম্পূর্ণ সংকটমুক্ত নন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এখনও ১০০ শতাংশ ভেন্টিলেশন সাপোর্টেই রয়েছেন বামফ্রন্ট নেতা। তবে ফুসফুসে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধি না পাওয়ায় ধাপে ধাপে তাঁর ভেন্টিলেশনের মাত্রা কমানো হতে পারে।
প্রসঙ্গত, শনিবার হাসপাতালে ৭৯ বছরের কমরেডের ভর্তি হওয়ার খবর বেশ উদ্বেগ বাড়িয়ে তোলে রাজনৈতিক মহল তথা সাধারণ মানুষের মধ্যেও। প্রত্যেকদিনই তাঁকে দেখতে বামফ্রন্ট বাদেও বিরোধী দলের নেতারাও হাসপাতালে যাচ্ছেন। বিজেপি (BJP) নেতা শমীক ভট্টাচার্য (Shamik Bhattacharya), বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari),তৃণমূল (TMC) বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra) ছাড়াও বর্ষীয়ান কমরেডকে দেখতে গিয়েছিলেন আইএসএফের (ISF) নওশাদ সিদ্দিকি (Naushad Siddiqui), বামফ্রন্ট চেয়ারম্য়ান বিমান বসু (Biman Bose)। রাজনৈতিক নানান ঝামেলা-অশান্তি হলেও এখন বিরোধী প্রায় সকল দলনেতাই বুদ্ধবাবুর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন।