দেশ

Ambassador Car | নতুন রূপে ফের বাজার দাপাতে আসছে 'কিং অব দ্য ইন্ডিয়ান রোড’! আসছে অ্যাম্বাসেডরের ইলেকট্রিক ভার্সন!

Ambassador Car | নতুন রূপে ফের বাজার দাপাতে আসছে 'কিং অব দ্য ইন্ডিয়ান রোড’! আসছে অ্যাম্বাসেডরের ইলেকট্রিক ভার্সন!
Key Highlights

অ্যাম্বাসেডর ক্লাসিক গাড়িতে নতুন প্রাণের সঞ্চার করতে ফরাসি গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা Peugeot -র সঙ্গে হাত মিলিয়েছে হিন্দুস্তান মোটরস। এই দুই কোম্পানির Ambassador 2.0 -র ডিজাইন নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে বলে খবর।

বেশ কয়েক বছর আগে এই গাড়ি দাপিয়ে বেড়াত গোটা দেশের রাস্তা। আজ কলকাতার 'হলুদ ট্যাক্সি' রূপেই বেশিরভাগ দেখা মেলে  ‘কিং অব দ্য ইন্ডিয়ান রোড’ এর। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলাতে হয় সকলেই। না হলে যে হয়ে যেতে হবে বিলুপ্ত! তাই প্রযুক্তির হাত ধরে নতুনভাবে বাজারে আসছে অ্যাম্বাসেডর গাড়ি (Ambassador Car)! বিগত বেশ কিছু সময় ধরেই শোনা যাচ্ছে, সম্পূর্ণ নতুন ইলেকট্রিক সেডান হিসেবে বিশ্ববাজারে আত্মপ্রকাশ করবে এই গাড়ি। এই ক্লাসিক গাড়িতে নতুন প্রাণের সঞ্চার করতে ফরাসি গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা Peugeot -র সঙ্গে বেশ আগেই হাত মিলিয়েছে হিন্দুস্তান মোটরস। আর এই দুই কোম্পানি মিলেই অ্যাম্বাসেডর ২.০ (Ambassador 2.0) -র ডিজাইন নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে বলে খবর।

‘কিং অব দ্য ইন্ডিয়ান রোড’-অ্যাম্বাসেডর!

 ১৯৫৭ সালে অ্যাম্বাসেডর গাড়ি (Ambassador Car) এর পথ চলা শুরু হয়েছিল।  ২০১৪ সালে উত্তরপাড়ার কারখানা থেকে শেষ অ্যাম্বাসেডর উৎপাদন করেছিল হিন্দুস্তান মোটরস। বলে রাখা ভালো, উত্তরপাড়া কারখানা থেকে এই গাড়ি উৎপাদন করেছে দেশীয় কোম্পানিটি। এটাই ছিল ভারতের প্রথম গাড়ি উৎপাদনকারী কারখানা। হুগলীর উত্তরপাড়ার এই কারখানা এশিয়ার দ্বিতীয় গাড়ি উৎপাদন কেন্দ্র। এর আগে শুধুমাত্র এশিয়ার জাপানে গাড়ি উৎপাদন হতো। সূর্যোদয়ের দেশে গাড়ি উৎপাদন শুরু করেছিল টয়োটা (Toyota)। বাজারে এই গাড়ি আসার পরেই জনপ্রিয় হয়ে পরে এই গাড়ি। শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে নয়, অ্যাম্বাসেডরের জনপ্রিয়তা ছিল সরকারি আধিকারিক ও মন্ত্রীদের মধ্যেও। এক সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রীও এই গাড় চড়ে সফর করতেন। 

১৯৫৭ সালে লঞ্চের সময় হিন্দুস্তান অ্যাম্বাসেডর গাড়ির দাম (hindustan ambassador car price) দাম ছিল  ১৭,০০০টাকা। যদিও মুদ্রাস্ফীতি হিসাব করলে এই টাকা এখন বিশাল অঙ্কে পরিণত হবে। বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির হিসাবে ১৯৫৭ সালে ১৭,০০০ টাকার মূল্য এখন প্রায় ১৫ লাখ টাকা। ২০১৪ সালে এই গাড়ি বিক্রি বন্ধ হওয়ার সময় অ্যাম্বাসেডরের দাম ছিল ৫.২২ লাখ টাকা। ১৯৫৭ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এই গাড়ির সাতটি পৃথক ভার্সন বাজারে এনেছিল হিন্দুস্তান মোটরস। উল্লেখ্য, আটের দশক প‌র্যন্ত ভারতের বাজারে একচ্ছত্র ভাবে দাপিয়ে বেড়িয়েছে হিন্দুস্থান মোটরসের এই গাড়ি। ১৯৮০ সালে অ্যাম্বাসাডরকে প্রথম চ্যালেঞ্জ জানায় মারুতি ৮০০। কিন্তু তাতে এই গাড়ির চাহিদা ধসে যায়নি। কিন্তু নয়ের দশক থেকে দলে দলে ঢুকতে শুরু করল দেশি, বিদেশি নিত্যনতুন ব্র্যান্ডের গাড়ি।

  ধীরে ধীরে আধুনিকতার দৌড়ে পেছোতে থাকে এই গাড়ি। সময়ের সঙ্গে তাল রাখতে চেহারা এক রেখেই এ গাড়িতে একটু আধটু বদলও যে আসেনি এমন নয়। কিন্তু তা ধোপে টেকেনি। আটের দশকের মাঝামাঝিতেও বছরে ‌অ্যাম্বাসাডরের বিক্রি ছিল ২৪ হাজারের মতো। ২০১৩-১৪ সালে সেই বিক্রি গিয়ে দাঁড়ায় মাত্র আড়াই হাজারে। ২০১৪ সালের ২৪ মে বন্ধ হয়ে যায় উত্তরপাড়ার কারখানার উৎপাদন। অবশেষে ট্রেডমার্ক-সহ অ্যাম্বাসাডর ব্র্যান্ডটি ৮০ কোটি টাকায় বিক্রি হয় পিউজো এসএ-র কাছে।

ইলেকট্রিক ভার্সনে অ্যাম্বাসেডর!

তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে এই গাড়িকেও। সম্প্রতি প্রকাশিত একাধিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে অ্যাম্বাসেডর গাড়ির নতুন মডেল (ambassador car new model) বাজারে আসতে চলেছে। আর এই রূপ হবে ইলেকট্রিক ভার্সনে। চলতি বছরই ভারতের রাস্তায় ইলেকট্রিক ভার্সনে ফিরে আসবে অ্যাম্বাসেডর। হিন্দুস্তান মোটরসের ডিরেক্টর উত্তম বোস জানিয়েছেন একটি ইউরোপীয় কোম্পানির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নতুন অ্যাম্বি ডিজাইনের কাজ শুরু হয়েছে। অ্যাম্বাসেডর গাড়ির নতুন মডেল (ambassador car new model)  সম্পূর্ণ আধুনিক অন্দরসজ্জা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। স্পাই ইমেজ দেখেই বুঝতে পারবেন, গাড়ির দর্শন নিয়ে আলদাভাবে চিন্তা করেছে কোম্পানি। বৈদ্যুতিক এই গাড়িতে সিঙ্গল মোটর ছাড়াও বড় আকারের ব্যাটারি থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে গাড়িটি কেমন হবে তা নিয়ে এই মুহূর্তে জল্পনার শেষ নেই।

তবে হিন্দমোটরে নয়, নতুন জেনারেশনের মোডিফাইড অ্যাম্বাসেডর গাড়ি (ambassador car modified) চেন্নাইয়ে হিন্দুস্তান মোটরসের কারখানা থেকে উৎপাদন হতে পারে বলে খবর। CK Birla Group -এর অধীনে HMFCI এই কারখানা পরিচালনের দায়িত্বে রয়েছে। আগে এই কারখানা থেকে মিতসুবিশি গাড়ি তৈরি হতো। এই কাজের জন্য একটি ইউরোপীয় সংস্থার সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করেছে হিন্দুস্তান মোটরস। সব ঠিক থাকলে শীঘ্রই নতুন মোডিফাইড অ্যাম্বাসেডর গাড়ি (ambassador car modified) রাস্তায় নামতে পারে।