আবহাওয়া

Weather | ধসে বিপর্যস্ত সিকিম! আটকে পড়া ৩০০ পর্যটককে উদ্ধার সেনা বাহিনীর! সকাল থেকেই বৃষ্টিতে ভিজছে কলকাতা!

Weather | ধসে বিপর্যস্ত সিকিম! আটকে পড়া ৩০০ পর্যটককে উদ্ধার সেনা বাহিনীর! সকাল থেকেই বৃষ্টিতে ভিজছে কলকাতা!
Key Highlights

শুক্রবার প্রবল বৃষ্টি ও ভূমিধসের কারণে বন্ধ হয়ে যায় সিকিমের একাধিক রাস্তা ও সেতু। আটকে পড়েন প্রায় ৩ হাজার পর্যটক। সোমবার সকাল থেকেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে ভিজছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ।

ভারী বৃষ্টিপাত এবং ধসের জেরে বিধ্বস্ত সিকিম (Sikkim)। গত শুক্রবার প্রচন্ড বৃষ্টিপাতের জেরে ধস (Landslide) নামে এই অঞ্চলে, যার ফলে আটকে পড়েন অসংখ্য পর্যটক। পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়ক ১০ (NH10) ও জাতীয় সড়ক ৬ (NH6)। বেশ কয়েক ঘন্টা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ফোনের নেটওয়ার্কও। যার ফলে বেশ চিন্তায় পড়ে যান সেখানকার পর্যটক ও পর্যটকদের পরিবারের লোকজন। এমতাবস্থায়, আটকে থাকা প্রায় ৩০০ জন পর্যটককে উদ্ধার করেছে ভারতীয় সেনা (Indian Army)।

সূত্রের খবর শুক্রবার ভারী বৃষ্টির ফলে সিকিমের চুংথাংয়ের (Chungthang) রাস্তা ভেসে যায় প্রতিরক্ষা মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহেন্দ্র রাওয়াত জানান, সিংতুম (Singtum), ডিকচু (Dikchu), রাংরান (Rangran), মাঙ্গান (Mangan) এবং চুংথাঙের সংযোগকারী রাস্তা ভূমিধসের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় উত্তর সিকিমে (North Sikkim) যাওয়ার রাস্তা। সিকিম-পশ্চিমবঙ্গ সীমানা (Sikkim-West Bengal Border) সংলগ্ন রামাম নদীর (Ramam River) জলস্থর বৃদ্ধি পাওয়ায়, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সংযোগকারী এলাকায় সমস্ত অস্থায়ী সেতুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

প্রবল বৃষ্টিপাত এবং ধ্বসের কারণে উত্তর সিকিমে আটকে পড়েন প্রায় তিন হাজার পর্যটক। নদীগর্ভে ভেসে গিয়েছে বেশ কয়েকটি কাঁচা বাড়ি, একটি সিমেন্ট ভবন, দুটি শ্মশানের চালা। এমনকি উত্তর সিকিম থেকে শোপাখার (Shopakha) সংযোগকারী রাস্তার মধ্যে যে দুটি সেতু রয়েছে, সেগুলোও ভেসে গিয়েছে এই ধ্বসে। এছাড়াও সেই এলাকার আশেপাশে গড়ে ওঠা ট্রাউট মাছ ও মুরগির খামার ও ভেসে গিয়েছে বলে খবর।

তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, লাচুং (Lachung) এবং লাচেনে (Lachen) আটকে পড়া ৩০০ পর্যটককে একটি অস্থায়ী সেতুর সাহায্যে উদ্ধার করে আনা হয়েছে। এমনকি তাদের গ্যাংটক (Gangtok) পৌঁছানোরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে শনিবার বিকেলে ২০০০ পর্যটককে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায় ত্রিশক্তি কর্পস (Trishakti Corps), ভারতীয় সেনাবাহিনী (Indian Army) এবং সীমান্ত সড়ক সংস্থার কর্মীরা (Border Roads Agency Personnel )। স্থানীয় সূত্র খবর, পর্যটকদের উদ্ধার করে তাদের খাবার ও ওষুধ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্ধারকার্যের সময়, সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন এক পর্যটক। তাকেও স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করা হয়। জানা গিয়েছে, তার শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

এই ভয়াবহ ভূমিধসের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তার। আটকে পড়েছিলেন বহু মানুষ। তবে এতো দুর্যোগের পরেও, এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিধসের পর থেকেই দিনরাত ওই এলাকায় সড়ক পরিষ্কার এবং পর্যটকদের উদ্ধার কার্য চালিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিরক্ষা মুখপাত্র জানিয়েছেন, এখনও সড়ক যোগাযোগ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

অন্যদিকে, সাতসকালেই সন্ধ্যে নামলো শহর কলকাতায় (Kolkata)। সকাল থেকেই কালো মেঘে মুখ ভার তিলোত্তমার, সঙ্গে শুরু হয়েছে শহর জুড়ে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। অনেকেই এই বৃষ্টিকে বর্ষার বৃষ্টি বলে মনে করলেও, আলিপুর আবহাওয়া দফতর (Alipore Weather Office) জানিয়েছে, এটি বর্ষার বৃষ্টি নয়, বরং প্রাক বর্ষার বৃষ্টি। কলকাতা ছাড়াও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে জেলার কিছু অংশে।

হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, আজ অর্থাৎ সোমবার থেকেই ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন এলাকায় সক্রিয় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। যার ফলে বৃহস্পতিবারের মধ্যে যেকোনো দিন বর্ষা প্রবেশ করতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গে। তবে বর্ষা পুরোপুরি প্রবেশ করার আগে এদিনের মতোই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে প্রায় রোজই। তবে পশ্চিমের জেলায় তাপপ্রবাহের সম্ভাবনাও সঙ্গে থাকছে। ইতিমধ্যেই, গত ১২ই জুন থেকে উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করেছে বর্ষা। তারপর থেকেই সেখানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেখানে। সোম, মঙ্গলবার ও বুধবার ২০০ মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে কোচবিহার আলিপুরদুয়ার জলপাইগুড়ির কিছু অংশে। পার্বত্য এলাকায় ভারী বৃষ্টিতে ধস নামার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কাও করা হয়েছে।