রাজ্য

Panchayat Election | প্রতিটি বুথে সমান সমান কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ মোতায়েনের প্রস্তাব হাইকোর্টের!

Panchayat Election |  প্রতিটি বুথে সমান সমান কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ মোতায়েনের প্রস্তাব হাইকোর্টের!
Key Highlights

সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চে মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রস্তাব, পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিটি বুথে ৫০-৫০ শতাংশ কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ মোতায়েন করার।

পঞ্চয়েত নির্বাচনের কয়েক দিন আগেই প্রতিটি বুথে সমান শতাংশে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ মোতায়েনের প্রস্তাব দিলো কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court )। যৌথ মঞ্চের করা মামলায় এই প্রস্তাব দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ (Chief Justice TS Sivajnanam’s Joint Bench)। পাশাপাশি, গণনা পর্যন্ত বাহিনী মোতায়েন রাখারও প্রতাব দেওয়া হয়।

এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে জানানো হয়, আসন্ন পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনে (Panchayat Election 2023) প্রতিটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ৫০-৫০ অনুপাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) ও রাজ্য পুলিশ (State Police) মোতায়েন করতে হবে। উল্লেখ্য, সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চের তরফ থেকে করা মামলাতেই এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। মামলাকারীদের আর্জি ছিল, বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা না হলে, নিরাপত্তার অভাব বোধ করবেন ভোটকর্মীরা। ফলে এই বিষয় মাথায় রেখেই সমান সমান অনুপাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশ মোতায়েনের প্রতাব দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে বিএসএফের নোডাল অফিসারকে (Nodal Officer of BSF ) নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বাজতেই রাজ্য জুড়ে শুরু হয় একের পর এক ঘটনায় বাড়ছে চাপানউতোর। প্রথমে পঞ্চায়েতের দিনক্ষণ ঘোষণার পরেই মনোনয়ন পত্র জমা নিয়ে শুরু হয় বোমাবাজি, গোলাগুলি, গোষ্ঠী সংঘর্ষ। এই সংঘর্ষের ঘটনার কারণে মৃত্যুও হয়েছে একাধিকের। এরপরেই ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এরপর যদিও রাজ্য নির্বাচন কমিশন (State Election Commission) এবং আদালতের মধ্যে একাধিকবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে এই বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে। তবে শেষে কেন্দ্রের কাছে মোট ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয় নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে।

এরপর প্রথম দফায় ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পরে আরও ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসে রাজ্যে।  ওই ৩১৫ কোম্পানি বাহিনীর জওয়ানরা ধাপে ধাপে রাজ্যে আসতেও শুরু করে দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ৩১৫ কোম্পানির মধ্যে বিএসএফ (BSF) থেকে ১০০ কোম্পানি, সিআরপিএফ (CRPF) থেকে ৭৩ কোম্পানি, এসএসবি (SSB) থেকে ৫০ কোম্পানি, সিআইএসএফ (CISF) থেকে ৪০ কোম্পানি, আরপিএফ (RPF) থেকে ৩০ কোম্পানি এবং আইটিপিবি (ITPB) থেকে ৩০ কোম্পানি বাহিনী আসবে। এ ছাড়াও ২০টি রাজ্য থেকে আসবে ১৬২ কোম্পানি বাহিনী। এরপর তৃতীয় দফায় ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এলে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য মোট ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে রাজ্যে।

তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিয়ম অনুযায়ী, যে কোনও জায়গায় ৪ জনের কম জওয়ান মোতায়েন করা যায় না। কিন্তু এই নির্বাচনের জন্য পর্যাপ্ত বাহিনী নেই বলে জানানো হয় আদালতে। এরপরেই নিরাপত্তা নিয়ে মামলা ওঠে আদালতে। প্রসঙ্গত, এর আগেও আদালত জানিয়েছিল, আসন্ন নির্বাচনে রাজ্য পুলিশ কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে পারবে। ফলে এই বিশেষ পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটে প্রতি বুথে সমান অনুপাতে রাজ্য পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা যায় কি না তা বিবেচনা করতে বলল হাই কোর্ট। তবে সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে বলে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

এদিন এই ঘটনা প্রসঙ্গে ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য (Deputy Solicitor General Bilbadal Bhattacharya ) জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬৫ হাজার জওয়ান এবং রাজ্য পুলিশের ৭০ হাজার কর্মীকে সমান অনুপাতে ব্যবহার করলে নির্বাচনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হবে। এরপরই দলটির এমন রায়। এদিন আইনজীবীদের ব্যাখ্যা, ভোটের আগে যে মারামারি, রক্তপাতের ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে, সেই প্রসঙ্গেই প্রধান বিচারপতি পরিস্থিতি অ্যাবনরমাল বা অস্বাভাবিক বলে উল্লেখ করেছেন। ফলে নিরাপত্তা বেশি দরকার। প্রতিটি বুথে সমান সমান কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশ মোতায়েন কর নিয়ে বিবেচনা করে আগামিকাল, বুধবার এ ব্যাপারে নোডাল অফিসারকে বক্তব্য জানানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে।