West Bengal Weather Report | ৮০ কিমি গতিবেগে বাংলাদেশে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’! কতটা প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গে!
ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট অনুযায়ী, ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শনিবার পর্যন্ত বঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস।
১৬ই নভেম্বর থেকেই মেঘাচ্ছন্ন কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলা। এমনকি গতকাল থেকে কয়েক পশলা বৃষ্টিও হয়েছে। আগেই আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, বঙ্গোপসাগরে তৈরী হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বদলে যাবে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (Weather of West Bengal)। বৃষ্টি হবে উপকূল এলাকা-সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই। বর্তমানে হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ (Cyclone 'Midhili' )।
ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট । Cyclone Update :
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সকালের মধ্যে সর্বশক্তি দিয়ে বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। জানা গিয়েছে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে সেটি বাংলাদেশের (Bangladesh) উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। উল্লেখ্য, নিয়ম অনুযায়ী, সাগরে তৈরি কোনও ঘূর্ণাবর্ত, ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তবেই আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম ঘোষণা করা হয়। সেই মতো শুক্রবার ভোরে গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পরে এর নামকরণ হয়েছে 'মিধিলি'। মিধিলি নামের অর্থ হল বিশাল গাছ অর্থাৎ, মহীরুহ। ২০২০ সালে মৌসম ভবনের তালিকাভুক্ত ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে একটির নাম দেওয়া হয় 'মিধিলি'।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার হিসাবে ‘মিধিলি’ বর্তমানে ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ১৯০ কিমি পূর্বে, দিঘা থেকে ২০০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। আবহবিদদের মতে, আগামী কয়েক ঘণ্টায় আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে ‘মিধিলি’। এর পর শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকালের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে সেটি বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট (Cyclone Update) অনুযায়ী, মোংলা ও খেপুপাড়ার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করার কথা ‘মিধিলি’র। এর প্রভাবে শুক্রবার এবং শনিবার খেপুপাড়া এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়া হাওয়া বইতে পারে। হাওয়ার গতিবেগ বেড়ে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়-র প্রভাব কতটা পড়বে? । How Much will the Impact of the Cyclone in West Bengal?
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ‘মিধিলি’র আছড়ে পড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড় (Cyclone in West Bengal) ধেয়ে না এলেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে রাজ্যে। দক্ষিণবঙ্গে বৃহস্পতিবারই হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছিল হাওয়া অফিসের তরফ থেকে। শুক্রবার আরও এক ধাপ এগিয়ে জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News) অনুযায়ী, শুক্রবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়ার কিছু কিছু এলাকায়। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলা যেমন হুগলি, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং মুর্শিদাবাদে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে শনিবার পর্যন্ত। তবে ঘূর্ণিঝড়ের বেশি প্রভাব পড়বে উপকূলবর্ত এলাকায়। যার ফলে ইতিমধ্যেই উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে থাকা মৎসজীবীদের সাগরে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) অনুযায়ী, শুক্রবার বৃষ্টি বাড়তে পারে উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। এই আবহে এই দুই জেলায় জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। অপরদিকে পূর্ব মেদিনীপুর এবং হাওড়াতেও হতে পারে ভারী বৃষ্টি। এর জেরে এই দুই জেলাতেও জারি থাকবে কমলা সতর্কতা। তাছাড়া নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, কলকাতা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং হুগলিতে বজ্রপাত সহ হালকা বৃষ্টি জারি হবে বলে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News)।
এরপর শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েকটি জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলিতে একটি বা দুটি জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কলকাতা, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) অনুযায়ী, মূলত রবিবার থেকে বদলাবে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (Weather of West Bengal)। সেদিন উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
এদিকে আগামী রবিবার থেকে কলকাতা সহ গাঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গের রাতের তাপমাত্রা এক ধাক্কায় ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহ কলকাতার সর্বোচ্চ পারদ ২৯ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশেই থাকবে। এদিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করবে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। অন্যদিকে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর অতি গভীর নিম্নচাপ অবস্থান করছে। ওড়িশার পারাদ্বীপের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ১৯০ কিলোমিটার, পশ্চিমবঙ্গের দিঘার দক্ষিণে ২৮০ কিমি এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে ৩৯০ কিমি দূরে অবস্থান করছে। আগামী ১৮ নভেম্বর এই সিস্টেমটা ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই বাংলাদেশের মংলা এবং খেপুপাড়ার মাঝখান দিয়ে ভূভাগে প্রবেশ করবে।
- Related topics -
- আবহাওয়া
- আবহাওয়া দফতর
- আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর
- দক্ষিণবঙ্গ
- উত্তরবঙ্গ
- শহর কলকাতা
- বাংলাদেশ
- ঘূর্ণিঝড়
- রাজ্য