দেশ

Chandrayaan 3 News | ফের ইসরোর মুকুটে সাফল্যের পালক! মহাকাশ থেকে চন্দ্রযান-৩ এর এই বিশেষ অংশ ফিরিয়ে আনলো ইসরো!

Chandrayaan 3 News | ফের ইসরোর মুকুটে সাফল্যের পালক! মহাকাশ থেকে চন্দ্রযান-৩ এর এই বিশেষ অংশ ফিরিয়ে আনলো ইসরো!
Key Highlights

চন্দ্রযান-৩ এর প্রোপালশন মডিউল ফিরিয়ে আনলো ইসরো। এই প্রোপালশন মডিউল দ্বারাই চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে বিক্রম -প্রজ্ঞান। এই চন্দ্রযান ৩ এর খবর দ্বারা ইসরো প্রমান করলো মহাকাশে যান পাঠানোর সঙ্গে তা ফিরিয়েও আনতে পারে ভারত।

মহাকাশ বিজ্ঞানে পর পর সাফল্যলাভ ভারতের! সর্বপ্রথম চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান অবতরণ করিয়ে ইতিহাস লিখেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (Indian Space Research Organization) বা ইসরো (ISRO)। এবার সেই মহাকাশযান তথা চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) প্রোপালশন মডিউলকে পৃথিবীর কক্ষপথে ফিরিয়ে আনল ইসরো! চন্দ্রযান ৩ এর সর্বশেষ খবর (Latest news of Chandrayaan 3) থেকে ভারতীয় মহাকাশ বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করলেন, ভারত শুধু চাঁদে মহাকাশযান পাঠাতেই পারে না, তা ফিরিয়েও আনতে পারে।

চন্দ্রযান ৩ এর খবর (Chandrayaan 3 News) অনুযায়ী, চাঁদের কক্ষপথে ঘুরতে থাকা চন্দ্রযান ৩-এর প্রোপালশন মডিউলকে পৃথিবীর কক্ষপথে ফিরিয়ে আনল ইসরো। চন্দ্রযান ৩ এর সর্বশেষ খবর (Latest news of Chandrayaan 3)টি এক্স সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে (টুইটার) জানানো হয়েছে ইসরোর তরফ থেকে। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তরফে জানানো হয়, প্রোপালশন মডিউলকে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয় অক্টোবর মাস থেকে। এরপর ১০ই নভেম্বর চাঁদের স্ফিয়ার অফ ইনফ্লুয়েন্স (SOI) ছেড়ে বেরিয়ে আসার আগে পর্যন্ত চারটি ফ্লাইবাই সম্পন্ন করেছে প্রোপালশন মডিউলটি। বর্তমানে এটি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে। ২২ সে নভেম্বর প্রথম পেরিজি অতিক্রম করেছে। বর্তমানে সুস্থ অবস্থাতে পৃথিবীর কক্ষপথে পাক খাচ্ছে এটি। এমনকি এই অংশের সঙ্গে কোনও স্যাটেলাইটের ধাক্কা লাগেনি।

উল্লেখ্য, এই প্রোপালশন মডিউলে চেপেই ১৪ই  জুলাই চাঁদের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল চন্দ্রযান-৩। এরপর ২৩ সে অগাস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে 'শিবশক্তি পয়েন্টে' সফট ল্য়ান্ডিং করে চন্দ্রযান-৩-এর বিক্রম ল্য়ান্ডার ও রোভার প্রজ্ঞান। তারপর থেকে একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায় বিক্রম ও প্রজ্ঞান। বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশার থেকেও বেশি কাজ করেছে এই ল্যান্ডার-রোভার। তবে বিজ্ঞানীরা দেখেন প্রোপালশন মডিউলের অনেকটা জ্বালানি বেঁচে গিয়েছে। ফলে ইসরোর বিজ্ঞানীরা এই জ্বালানি ব্যবহার করে প্রোপালশন মডিউলের আয়ু বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তারপর থেকে চাঁদের কক্ষপথেই ঘুরছিল এটি। বেঁচে যাওয়া জ্বালানিকে ভবিষ্যতের চন্দ্র অভিযানে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা শুরু করে ইসরো। এরপর প্রোপালশন মডিউলকে চাঁদ থেকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞানীরা গতিপথ পরিবর্তনের পরিকল্পনা করেন। উদ্দেশ্য ছিল যাতে পৃথিবীর জিও বেল্টের সঙ্গে ধাক্কা না লেগে যায় এই প্রোপালশন মডিউলটির। ধাক্কা লেগে গেলে যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যাওরার সম্ভাবনা থাকত। এর জন্য আগেভাগেই কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল ইসরোর তরফে।

এই চন্দ্রযান ৩ এর খবর (Chandrayaan 3 News) নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন এই প্রোপালশন মডিউলকে ফিরিয়ে এনে কী লাভ? আসলে প্রোপালশন মডিউলকে ফিরিয়ে এনে ইসরো প্রমাণ করে দিলো চাঁদে শুধু মহাকাশযান পাঠানোই নয়, মহাকাশ থেকে প্রয়োজনে যানকে পৃথিবীতেও ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা রয়েছে ভারতের। আর এই ক্ষমতায় কার্যত ভবিষ্যতে চাঁদ থেকে নমুনা নিয়ে ফেরার অভিযানের ড্রেস রিহার্সাল হিসেবে কাজ করলো। যদিও প্রোপালশন মডিউলকে পৃথিবীর মাটিতে ফিরিয়ে আনা হবে কিনা তা অবশ্য এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।

চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্যের পরেই একাধিক মহাকাশ মিশনের পরিকল্পনা করে ইসরো। যার মধ্যে রয়েছে আদিত্য এল১ মিশন (Aditya L1 Mission), গগনযান (Gaganyaan), মঙ্গলযান ২ (Mangalyaan 2) এমনকি ভারতীয় মহাকাশ স্টেশন (Indian Space Station) এর পরিকল্পনাও। ইতিমধ্যেই সূর্যের কাছে এল পয়েন্টের (L point) লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে ভারতের প্রথম সূর্যযান আদিত্য এল ১ (Aditya L1)। সম্প্রতি আদিত্য এল১ মিশন (Aditya L1 Mission) সম্পর্কে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেছে ভারতের প্রথম সৌরযান। সূর্যের আলোকরশ্মি খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তৈরি আদিত্য-এল১। দূর থেকেই সৌরবায়ুর গতিপ্রকৃতি মাপছে আদিত্য এল ১। সৌরযানের মধ্যে আরও একটি যন্ত্রকে সক্রিয় করেছে ইসরো। তার মাধ্যমেই সৌরবায়ু পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ইসরোর সৌরযানের যাত্রা শুরু হওয়ার পর তিন মাস সম্পূর্ণ হয়েছে। সব ঠিক থাকলে জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকেই গন্তব্যে পৌঁছে যাবে এই সৌরযান।

অন্যদিকে, সম্প্রতি ভারত সফরে এসে ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স এবং স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন জানান, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ভারতীয় মহাকাশচারীদের পাঠানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে আমেরিকা। পাশাপাশি আমেরিকা ভারতীয় মহাকাশ স্টেশন (Indian Space Station) তৈরিতেও সাহায্য করবে। নেলসনের সঙ্গে অনেক আমেরিকান কোম্পানি ইসরোর সঙ্গে সহযোগিতা করতে চাইছে। আমেরিকার বোয়িং, ব্লু অরিজিন, এলএলসি, ভয়েজার স্পেস হোল্ডিংস-এর আধিকারিকরাও ইসরোর সঙ্গে হাত মেলানোর জন্য এগিয়ে আসতে চাইছে। পাশাপাশি গগনযান মিশন নিয়েও তুঙ্গে ইসরোর প্রস্তুতি।