West Bengal Weather Report | বাংলাদেশে 'হামুনে'র তান্ডব! ঘূর্ণিঝড় সরতেই পশ্চিমবঙ্গে শীতের আগমন! কমবে তাপমাত্রার পারদ!
দশমীতে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ঘূর্ণিঝড় হামুন। বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া রিপোর্ট , ক্রমশ বদলাবে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া। কমতে চলেছে রাজ্যের তাপমাত্রা।
পূর্বাভাস মতো দূর্গা পুজোর নবমী-দশমী কয়েক ঘন্টার হালকা বৃষ্টিতে ভিজেছে শহর কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের কিছু এলাকা। হাওয়া অফিস জানিয়েছিল, বঙ্গোপসাগরে তৈরী হওয়া ঘূর্ণিঝড় 'হামুন'র জেরেই বৃষ্টি। তবে আগামীকাল অর্থাৎ দশমীর রাতেই বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এই ঘূর্ণিঝড়। বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতর (Bangladesh Meteorological Department) সূত্রে খবর, মধ্যরাতে বাংলাদেশ উপকূলে ল্যান্ডফলের সময় সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯৫ কিলোমিটার। ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হওয়ায় আপাতত পশ্চিমবঙ্গে দুর্যোগের কোনও আশঙ্কা নেই বলেই পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া রিপোর্ট (West Bengal Weather Report)।
হামুন ঘূর্ণিঝড়ের আপডেট :
দশমীর রাতে, ২৪সে অক্টোবরই বাংলাদেশে প্রবেশ করে 'হামুন'। বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতর (Bangladesh Meteorological Department) সূত্রে খবর, মধ্য রাতে চট্টগ্রামের কাছে ল্যান্ডফল হয় ঘূর্ণিঝড়ের। স্থলভাগে প্রবেশ করতেই শক্তি হারাতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড়। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১টা ১৫ মিনিট নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে ল্যান্ডফল করে ঘূর্ণিঝড় হামুন। সন্ধ্যার দিকে যখন ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে প্রবেশ করছিল, সেই সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার। রাত ৮টা থেকে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১০৪ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজারে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়। মাঝারি পরিমাণ বৃষ্টি হয় খুলনা, বরিশাল সহ একাধিক জেলায়। উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে জ্বলোচ্ছাসও হয়। ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতা অবধি উঠে যায় জল। পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া ও ঝড়বৃষ্টির জেরে একাধিক জায়গায় গাছপালা ও বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এমনকি ঘূর্ণিঝড়ের জেরে দেওয়াল ও গাছ চাপা পড়ে কক্সবাজারে কমপক্ষে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর :
হামুন ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এই রাজ্যে সেভাবে পড়বেনা বলেই পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News)। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী এদিন সুন্দরবন এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এছাড়া কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার আকাশও আংশিক মেঘলাই থাকবে। সঙ্গে বজ্র বিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়া রিপোর্ট (West Bengal Weather Report) অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির সেভাবে পূর্বাভাস নেই। বরং দিন কয়েকের মধ্যেই পড়তে চলেছে ঠান্ডা। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ, বুধবার দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। যদিও সকাল থেকেই কলকাতা ও শহরতলির আকাশে ঝলমলে রোদের দেখা মিলেছে। পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (Weather of West Bengal)র পূর্বাভাস বলছে, আজ উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে উত্তরের আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদায় এদিন বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই।
আগামিকাল, বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকাতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামিকাল উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা বৃষ্টির ক্ষীণ সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় আবহাওয়া শুষ্কই থাকবে। এরপর ২৭সে অক্টোবর থেকে দক্ষিণবঙ্গের কোথাও কোনও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে আগামী কয়েকদিন উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, কলকাতা, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় আবহাওয়া পুরোপুরি শুষ্কই থাকবে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া (Weather of West Bengal)এ এখন থেকেই মিলছে শীতের আমেজ। পশ্চিমবঙ্গ আবহাওয়ার খবর (West Bengal Weather News) অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের চাপ সরে যেতেই উত্তুরে হাওয়া প্রভাব বিস্তার করবে রাজ্যে। আগামী দু-তিন দিনে রাতের দিকে তাপমাত্রা বেশ কিছুটা কমবে বলেই আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বৃষ্টির জেরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নিচে রয়েছে। হাওয়া অফিসের মতে, রাজ্যের পশ্চিমের জেলাগুলিতে শীতের আমেজ একটু বেশি হবে। আগামী দু-তিন দিনে গোটা রাজ্যজুড়েই দুই থেকে তিন ডিগ্রি তাপমাত্রা কমতে পারে। তবে কলকাতা-সহ সংলগ্ন এলাকায় দুপুরের দিকে তাপমাত্রা বাড়লে শীতের অনুভূতি কমবে। বাকি জেলায় সকালে এবং সন্ধ্যায় শীতের আমেজ থাকবে। আগামিকাল থেকে রাতের তাপমাত্রা আরও কমবে বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে শীতের আমেজ মূলত অনুভূত হবে সকাল ও সন্ধ্যায়।