Solar Eclipse 2024 | ৫০ বছর পর বিরল সূর্যগ্রহণ! ২০২৪ এর প্রথম গ্রহণ নিয়ে সতর্কতা জারি বিশ্বের অধিকাংশে!

Sunday, April 7 2024, 12:20 pm
highlightKey Highlights

২০২৪ সালের প্রথম সূর্যগ্রহণ হতে চলেছে ৮ই এপ্রিল, রোববার। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এই গ্রহণ বিভিন্ন দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। ৫০ বছর পর দীর্ঘক্ষণ এই গ্রহণ হবে।


২০২৪ সালের প্রথম সূর্যগ্রহণ হতে চলেছে আগামীকাল অর্থাৎ ৮ই এপ্রিল, রোববার। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, এই গ্রহণ বিভিন্ন দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। ৫০ বছর পর দীর্ঘক্ষণ এই গ্রহণ হবে। তবে ইতিমধ্যে এই গ্রহণের কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এমনকি বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, গ্রহণের সময় বিশ্ব জুড়ে হতে পারে নেটওয়ার্ক সমস্যাও!


সূর্যগ্রহণের সময় :
 ২০২৪ সালের প্রথম সূর্যগ্রহণটি হতে চলেছে ৮ই এপ্রিল। সেদিন ভারতীয় সময় অনুযায়ী রাতের বেলা এই গ্রহণ দেখা যাবে। ফলে স্পষ্টতই, পূর্ণগ্রাস গ্রহণের ফলে কালো ছায়ায় ঢাকা সূর্যের সাক্ষী সেদিন ভারত হবে না। ৮ এপ্রিল রাতে ৯ টা ১২ মিনিটে শুরু হবে সূর্যগ্রহণ। ভারতীয় সময় অনুসারে গ্রহণ শেষ হবে রাত ২ টো ২২ মিনিটে। রাত ১০ টা ১০ মিনিটে পূর্ণ গ্রাসের শুরু। বলা হচ্ছে, ৮ এপ্রিলের গ্রহণ স্থায়ী হবে ৪ ঘণ্টা ২৫ মিনিট ধরে। বলা হচ্ছে, ৭ মিনিট পূর্ণগ্রাস থাকবে। ফলে সেই সময় সূর্য সম্পূর্ণভাবে ঢেকে যাবে। উল্লেক্ষ্য, এই গ্রহণ পৃথিবীর ইতিহাসে দীর্ঘতম নয়। ইতিহাস বলে, খ্রিস্টপূর্ব ৭৪৩ সালে যে সূর্যগ্রহণ হয়, সেটিই এখনও পর্যন্ত দীর্ঘতম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। সেবার ৭ মিনিট ২৮ সেকেন্ড সূর্যকে ঢেকে দিয়েছিল চাঁদ।


কোথায় দেখা যাবে সূর্যগ্রহণ?
 স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৭ মিনিট নাগাদ মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল থেকে সর্বপ্রথম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। চাঁদের ছায়া উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যাওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র টেক্সাসে দুপুর ১:২৭ মিনিটে পূর্ণগ্রাস দেখা যাবে। পূর্ণগ্রাস গ্রহণ দেখা যাবে পশ্চিম ইউরোপ প্যাসিফিক, আটলান্টিক, আর্কটিক মেক্সিকো, উত্তর আমেরিকা কানাডা, মধ্য আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরাঞ্চল, ইংল্যান্ডের উত্তর পশ্চিম অঞ্চল এবং আয়ারল্যান্ডে।


গ্রহণ নিয়ে সতর্কবার্তা!সূর্যগ্রহণ নিয়ে সতর্কতা জারি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।সূর্যগ্রহণ পৃথিবীর একটা বড় অংশে দেখা না গেলেও পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ নিয়ে আমেরিকার বেশিরভাগ জায়গয় জারি কর হয়েছে সতর্কতা। আমেরিকার টেক্সাস, ওকলাহোমা, আরকনসাস, মিসৌরি, ইলিনয়, কেন্টাকি, ওহিও, পেনসিলভেনিয়া, নিউ ইয়র্ক, ভারমন্ট, নিউ হ্যাম্পশায়ারে দেখা যাবে এই পূর্ণ সূর্যগ্রহণ। দেখা যাবে টেনেসি এবং মিশিগানের কিছু অংশ থেকেও। এইসব জায়গার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখছে সেদেশের প্রশাসন। যে জায়গাগুলো থেকে গ্রহণ দেখা যাবে সেই সব জায়গায় মানুষ ভিড় জমাবেন। গ্রহণের সময় সরাসরি তাকানোর ফলে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে, এমনকি গ্রহণের রশ্মি থেকে হতে পারে স্থায়ী অন্ধত্বও। ফলে সৌর ফিল্টার বা গ্রহণ চশমা ছাড়া গ্রহণ দেখতে বারণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এইসব জায়গার বাসিন্দাদের খাবার কিনে রাখতে বলা হয়েছে। গ্রহণ দেখতে আসা পর্যটকদের ভিড়ের কারণে যাতে স্থানীয়দের খাবারে টান না পড়ে সেইকারণেই এই ব্যবস্থার নির্দেশ। গ্রহণ দেখতে আসার জন্য অনেক লোকের ভিড় হলে তীব্র যানজট হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ওইদিন স্কুল বন্ধ রাখা হবে বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে।


এছাড়া সবচেয়ে উল্লেখ্য, সতর্কতা জারি করেছে নাসা। গ্রহণের সময় নেটওয়ার্ক সমস্যা হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, লক্ষাধিক মানুষ একযোগে এই গ্রহণ সরাসরি দেখবেন ফলে নেটওয়ার্ক সমস্যা হতে পারে।
সূর্যের পূর্ণগ্রাস হল বিরল মহাজাগতিক ঘটনা। ১৮ মাস পর পর একটি করে পূর্ণগ্রাস হয় সূর্যের। সেটাই যে প্রকৃতির নিয়ম। যখন সূর্যের মুখ পুরোপুরি ঢেকে দেয় চাঁদ। তার ফলে, দৃশ্যমান হয়ে ওঠে সূর্যের বায়ুমণ্ডল বা করোনা। যা এক বিরল দৃশ্য। সূর্যের কখনও আংশিক গ্রাস হয়, কখনও পূর্ণগ্রাস, আবার কখনও বলয়গ্রাস বা 'রিং অফ ফায়ার'। আর যদি তিনটেই পরপর ঘটতে থাকে তাহলে তাকে বলে হাইব্রিড বা শংকর সূর্যগ্রহণ। চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে। পৃথিবীর দিকে ৫ ডিগ্রি কোণে হেলে থেকে। তাই পূর্ণগ্রাস, আংশিক গ্রাস ও বলয়গ্রাস মিলিয়ে বছরে ৫টির বেশি সূর্যগ্রহণ হওয়া সম্ভব নয়। এ বছর এপ্রিলে বিরলতম পূর্ণগ্রাস গ্রহণ হতে চলেছে যা দীর্ঘ সময় ধরে চলবে। এ বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহলে উৎসাহ-উদ্দীপনা তুঙ্গে। কারণ বিগত কয়েক হাজার বছরে দীর্ঘতম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ চোখে পড়েনি। পরবর্তী ১৫০ বছরে দীর্ঘতম সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হতে পারে পৃথিবী। হিসেব কষে দেখা গিয়েছে, ২১৮৬ সালের ১৬ জুলাই ফ্রেঞ্চ গিনি উপকূল থেকে আটলান্টিক সাগরে দীর্ঘতম সূর্যগ্রহণ দেখা যেতে পারে, যা ৭ মিনিট ২৯ সেকেন্ড স্থায়ী হবে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File