শহর কলকাতা

Night is Ours Protest । পথে নামছেন মেয়েরা! এগিয়ে এলো CITU, কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ! কোথায় কোথায় হচ্ছে ‘মেয়েরা রাত দখল করো’ কর্মসূচি?

Night is Ours Protest । পথে নামছেন মেয়েরা! এগিয়ে এলো CITU, কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ! কোথায় কোথায় হচ্ছে ‘মেয়েরা রাত দখল করো’ কর্মসূচি?
Key Highlights

আরজিকরে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডের প্রতিবাদে আজ, ১৪ই আগস্ট রাত দখল করবে মেয়েরা। কলকাতা সহ বাংলার নানান শহরে আয়োজিত হতে চলেছে ‘মেয়েরা রাত দখল করো’। স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতে ১১.৫৫ মিনিট থেকে কলকাতায়, যাদবপুর, অ্যাকাডেমি চত্বর, কলেজ স্ট্রিট সহ বাংলার নানান জায়গায় থেকে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে হতে চলেছে জমায়েত। মেয়েদের এই প্রতিবাদকে সমর্থন করে এগিয়ে এসেছেন বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে সেলিব্রিটি, CITU এমনকি কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষও।

আরজিকরে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডের প্রতিবাদে আজ, ১৪ই আগস্ট রাত দখল করবে মেয়েরা। কলকাতা সহ বাংলার নানান শহরে আয়োজিত হতে চলেছে ‘মেয়েরা রাত দখল করো’। স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতে ১১.৫৫ মিনিট থেকে কলকাতায়, যাদবপুর, অ্যাকাডেমি চত্বর, কলেজ স্ট্রিট সহ বাংলার নানান জায়গায় থেকে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে হতে চলেছে জমায়েত। মেয়েদের এই প্রতিবাদকে সমর্থন করে এগিয়ে এসেছেন বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে সেলিব্রিটি, CITU এমনকি কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষও। মেট্রোর তরফে ঘোষণা করা হয়েছে যে আজ বুধবার অতিরিক্ত মেট্রো চালানো হবে। থাকছে সারা রাত ওলা উবের অ্যাপ ক্যাব পরিষেবাও!

ইতিমধ্যেই ইন্টারনেট জুড়ে ‘মেয়েরা রাত দখল করো’র ডাক ভাইরাল! আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ভিতরে তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস মৃত্যুর প্রতিবাদে বাংলায় ১৪ আগস্টের রাতে শত শত কণ্ঠ গর্জে ওঠার অপেক্ষায়। ‘মেয়েরা রাত দখল করো’-র অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ-এ দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৪ অগস্ট রাত ১১ টা থেকে এই জমায়েত। কলকাতায় এই জমায়েত হবে, যাদবপুর এইট বিতে। এছাড়াও রয়েছে আরও ঠিকানা- অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস, কলেজ স্ট্রিট, সিঁথির মোড়, বেহালা শখের বাজার, ডানলপ খালসা মডেল স্কুল। অফিশিয়াল পেজে দেওয়া পোস্টে বলা হয়েছে, এই প্রতিবাদের জমায়েত ওই একই সময় হবে- মালদা ইংলিশ বাজার পোস্ট অফিস মোড়, শিলিগুড়ি দার্জিলিং মোড়, উত্তরপাড়া কলেজ মোড়, মধ্যমগ্রাম চৌমাথা মোড়, বোনগাঁয় নীলদর্পণ, শ্রীরামপুর, রায়গঞ্জ, ঘড়ির মোড়, ব্যারাকপুর স্টেশন, দুর্গাপুর।

রাত দখলের পর যাতে মেয়েরা নিশ্চিন্তে, সাবধানে বাড়ি ফিরতে পারেন সে কথা মাথায় রেখেই কলকাতায় অ্যাপ ক্যাব অপারেটর এন্ড ড্রাইভার ইউনিয়ন (CITU) জানিয়েছে, সারা রাত ওলা উবের অ্যাপ ক্যাব পরিষেবা চালু রাখবেন তারা। ওলা উবের সহ আরও কয়েকটি অ্যাপ ক্যাব ১৪ তারিখ সারা রাত পরিষেবা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চারচাকা, বাইক সহ সমস্ত রকম ক্যাব মিলবে সময় মতো। অ্যাপ ক্যাব চালক এবং ট্যাক্সিচালকরা জানিয়েছেন, তাঁরাও আন্দোলনকারীদের পাশে রয়েছে।

অন্যদিকে, কলকাতা মেট্রো (Kolkata Metro) মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, গত দুতিন দিন ধরে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে মেল আসছে যে, আজ অর্থাৎ ১৪ আগস্ট রাতে একটা বিশেষ জমায়েতের জন্য মেট্রো সার্ভিস দিতে। সেকারণে মেট্রো সার্ভিসের কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। দমদম ও কবি সুভাষ শেষ মেট্রো যেটা চলে সেটা ১০টা ৪০ পর্যন্ত সেটা চলবে। তার কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। তবে তার আগে দুটো মেট্রো থাকছে। একটি মেট্রো ছাড়বে দমদম ও কবি সুভাষ থেকে ছাড়বে রাত ১০টার সময়। রাত ১০টা কবি সুভাষ ও দমদম থেকে একটা করে ট্রেন ছাড়বে। এই ট্রেনটি প্রত্যেক স্টেশনে দাঁড়াতে দাঁড়াতে আসবে। অপর একটি ট্রেন দেওয়া হচ্ছে রাত ১০টা ২০ মিনিটে। সেই ট্রেনটি প্রত্যেক স্টেশনে দাঁড়াতে দাঁড়াতে আসবে। তারপর ১০টা ৪০ এর যে ট্রেন থাকে সেটা এদিনও থাকবে। এছাড়াও আজ সমস্ত বুকিং কাউন্টার রাত ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকবে। অর্থাৎ শেষ মেট্রো পর্যন্ত সমস্ত বুকিং কাউন্টার খোলা থাকবে। রাতের যাতে কোথাও কোনও অসুবিধা না হয় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তার সব ব্যবস্থা করা থাকবে। সহযোগিতার জন্য রাত পর্যন্ত কর্মীরাও থাকবেন।

উল্লেখ্য, আরজিকর হাসপাতালে ঘটনার পর অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ নাকি বলেছিলেন, “অত রাতে মেয়েটির একা থাকা ঠিক হয়নি।” এতেই শোরগোল পড়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, কেন আজও নারীরা সকাল-সন্ধ্যে হোক বা রাত, নির্দ্ধিধায় পথে-ঘাটে বেরতে পারবে না? রাতে স্বাধীন বিচারণের অধিকার কি শুধু পুরুষের হাতে? সেই প্রেক্ষিতেই নারীদের রাত দখল করার এই অভিযানের ডাক দেওয়া হয়।

আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া শহরে ১৯৭৫ সালে জনৈক মাইক্রো বায়োলজিস্টকে খুনের ঘটনায় রাত দখল করার আন্দোলন শুরু হয়েছিল। ১৯৭৭ সালে নারীমুক্তি আন্দোলনের অঙ্গ হিসাবে ‘রিক্লেম দ্য নাইট’ এর কথা উঠে আসে। যার বাংলার তর্জমা করলে খানিকটা 'রাত দখল করো’। ইংল্যান্ডের পূর্ব ইয়র্করশায়ারের লিডসে এইটি শুরু হয়। মিছিল থেকে সেবার দাবি উঠে ছিল, পাবলিক প্লেসে মহিলারা যাতে রাতে চলাফেরা করতে সক্ষম হন। ‘রিক্লেম দ্য নাইট’ কার্যত একটি আন্দোলনের নাম। পরবর্তীকালে এমন ধরনের মিছিল করে মহিলাদের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও ধর্ষণের প্রতিবাদ করা হয়। এই আন্দোলন ১৯৭৭ সালের পরও ১৯৮০, ১৯৯০, ২০০০ সালেও শোনা গিয়েছে। এবার ২০২৪ সালে এই আন্দোলন হতে চলেছে বাংলা। অবশ্য কেবল পশ্চিমবঙ্গই নয়, এই আন্দোলন আয়োজিত হতে চলেছে ভারতের একাধিক অংশে।