The Kerala Story | বাংলায় নিষিদ্ধ 'দ্য কেরালা স্টোরি'! সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ ছবি নির্মাতারা! ট্যুইট শাবানা-কঙ্গনার!
বাংলায় 'দ্য কেরালা স্টোরি' নিষিদ্ধ ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। ঘটনার প্রতিবাদে আইনি পদক্ষেপ নিতে সুপ্রিম কোর্টে গেলেন ছবির নির্মাতারা।
পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ 'দ্য কেরালা স্টোরি' । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) এই সিদ্ধান্তের পরেই রাজনৈতিক ও বিনোদন জগতে শুরু হয় তর্ক বিতর্ক। চলচিত্র নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরেই আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন 'দ্য কেরালা স্টোরি'-র (The Kerala Story) নির্মাতারা। সেই হুঁশিয়ারি সত্যি করেই ২৪ ঘন্টার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হলেন তাঁরা।
এই চলচিত্র নির্মাতাদের সুপ্রিম কোর্টে দাবি, অবিলম্বে যেন 'দ্য কেরালা স্টোরি'-র ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে যাতে প্রত্যাহার করুক, সেই এই আর্জিই জানান নির্মাতারা।
উল্লেখ্য, সোমবার অর্থাৎ ৮ই মে নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, এই রাজ্যে 'দ্য কেরালা স্টোরি'-র কোনও স্ক্রিনিং হবে না। তাঁর দাবি, বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেনের (Sudipta Sen) এই ছবি একটি নির্দিষ্টি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক এবং উদ্দেশ্যে প্রণোদিত প্রোপাগান্ডা নিয়ে তৈরী করা হয়েছে। মুখমন্ত্রীর আরও মন্তব্য, এই ছবি কোনও সিনেমা হলে (cinema hall) প্রদর্শিত করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
একটি রাজনৈতিক দল আগুন নিয়ে খেলছে। জাতিগত ও ধর্ম নিয়ে বিভাজন ও বৈষম্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে। বিভাজনের রাজনীতি করার জন্যই এই ধরণের ছবি বানানো হয়েছে। কেন দ্য কেরালা স্টোরি তৈরি হল?
অন্যদিকে আবার এই সিনেমা করমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিলো যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসন। বাংলায় 'দ্য কেরালা স্টোরি' নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উত্তর প্রদেশে করমুক্ত বা ট্যাক্স ফ্রি (Tax Free) করা হল এই ছবি। পাশাপাশি কেরালায় এই সিনেমা এখনও নিষিদ্ধ করা না হলেও, ছবিটির তীব্র সমালোচনা করেছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন (Pinarayi Vijayan)। এই ছবি নিষিদ্ধ করা নিয়ে সরব হয়ে বলেন, ছবি মাধ্যমে সংঘ পরিবার, রাজনৈতিক লক্ষ্য প্রচারে কেরলের ধর্ম নিরপেক্ষ পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এই ছবির মুক্তি আটকানোর জন্য কেরল সরকারের কাছে আগেই অনুরোধ জানিয়েছিল, কংগ্রেস। কংগ্রসের (Congress) কথায়, এই ছবিতে মিথ্যাচার প্রচার করা হচ্ছে, এই ছবি পুরোপুরিভাবে রাজ্য এবং একটি ধর্মের মানুষের অপমান। এই ছবির পিছনে সংঘীদের হাত রয়েছে বলেও কটাক্ষ করে কংগ্রেস।
প্রসঙ্গত, 'দ্য কেরালা স্টোরি' বাংলায় নিষিদ্ধ করার পরে তর্ক-বিতর্ক, কটাক্ষ রাজনৈতিক মহল থেকে ছড়িয়ে পড়েছে বিনোদন জগতেও। 'দ্য কেরালা স্টোরি'-র সমর্থন করে ট্যুইট করলেন অভিনেত্রী শাবানা আজমি (Shabana Azmi)। তাঁর পাশে দাঁড়ালেন বলিউডের কুইন কঙ্গনা রানাউতও (Kangana Ranaut)।
শাবানা আজমি ট্যুইট করে বলেন, যাঁরা 'দ্য কেরালা স্টোরি' নিষিদ্ধ করার কথা বলেছেন, তাঁরা ততটাই ভুল যারা আমির খানের লাল সিং চাড্ডা নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। অভিনেত্রীর আরও কটাক্ষ, একটি ছবির সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন (Central Board of Film Certification) একবার পাশ হয়ে গেলে কারোরই অতিরিক্ত সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হওয়ার অধিকার নেই।
অন্যদিকে, শাবানা আজমির বক্তব্যকে সমর্থন করে কঙ্গনা রানাউত টুইটারে লেখেন, আমির খানের ছবি নিষিদ্ধ করা হয়নি, লোকেরা অনেক কারণে এটি দেখতে চায়নি। যার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল এটি একটি খুব জনপ্রিয় পুরানো হলিউড ক্লাসিকের রিমেক যা বেশিরভাগই লোকেরা ইতিমধ্যে দেখেছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই সিনেমা নিষিদ্ধ করার পরে সেদিনই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ছবিটির প্রযোজক বিপুল শাহ (Vipul Shah) বলেন, এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আইনি পথে হাঁটবেন তারা। এই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ 'দ্য কেরালা স্টোরি'-র নির্মাতারা। কেবল বাংলা সরকারের বিরুদ্ধেই নয়, তামিলনাড়ু সরকারের বিরুদ্ধেও বাংলার পাশাপাশি তামিলনাড়ু সরকারেরও বিরোধিতা করেছেন ছবির নির্মাতারা। সমস্ত সিনেমা হলগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে ছবি নির্মাতাদের তরফ থেকে।
- Related topics -
- বিনোদন
- পশ্চিমবঙ্গ সরকার
- মমতা ব্যানার্জী
- দ্য কেরালা স্টোরি
- যোগী আদিত্যনাথ
- শাবানা আজমি
- সুপ্রিম কোর্ট
- রাজ্য