দেশ

LPG Cylinder | ভর্তুকিযোগ্য রান্নার গ্যাস নিতে গ্রাহকদের দিতে হবে বায়োমেট্রিক! কেন্দ্রের নয়া নির্দেশে তৈরী বিভ্রান্তি!

LPG Cylinder |  ভর্তুকিযোগ্য রান্নার গ্যাস নিতে গ্রাহকদের দিতে হবে বায়োমেট্রিক! কেন্দ্রের নয়া নির্দেশে তৈরী বিভ্রান্তি!
Key Highlights

এলপিজি গ্রাহকদের জন্য বায়োমেট্রিক আইডেন্টিফিকেশন চালু করতে চলেছে ইন্ডেন। সূত্রের খবর, খোদ কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম মন্ত্রকের তরফে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।

এলপিজি  সিলিন্ডার (LPG Cylinder) নিয়ে বড় ঘোষণা করলো কেন্দ্র সরকার।  গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তুকি নিতে হলে দিতে হবে বায়োমেট্রিক। বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, সরকারের তরফে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তেল পরিষেবা দেওয়া আইওসিএল, বিপিসিএল এবং এইচপিসিএল -এর মতো সংস্থাগুলোকে। সূত্রের খবর, খোদ কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম মন্ত্রকের তরফে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।  প্রথম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বল যোজনা (Ujjwala Yojana) প্রকল্পের আওতাভুক্ত গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক আইডেন্টিফিকেশন হবে বলে খবর।

সূত্রের খবর, এলপিজি গ্রাহকদের জন্য বায়োমেট্রিক আইডেন্টিফিকেশন চালু করতে চলেছে ইন্ডেন (INDEN)। রান্নার গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থা ইন্ডেনরে তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, খুব শীঘ্রই গ্যাস সিলিন্ডার ডেলিভারি দেওয়ার সময় গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক অর্থাৎ গ্রাহকদের ছবি বা আঙুলের ছাপ নেবেন ডেলিভারি বয়রা। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগেই রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি সংস্থাগুলিকে এক নির্দেশিকা পাঠায় কেন্দ্রীয় সরকার (central government)। তাতে বলা হয়, ভর্তুকিযোগ্য রান্নার গ্যাসের সব গ্রাহকের আধার যাচাই করতে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। 

কীভাবে নেওয়া হবে গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক?

সংস্থা সূত্রে খবর, ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে এলপিজি গ্রাহকদের এই বায়োমেট্রিক আইডেন্টিফিকেশন হবে। বাড়িতে রান্নার গ্যাস দিতে গিয়ে ডেলিভারিবয় বা ডেলিভারিম্যানরা তাঁদের মোবাইল ফোনে থাকা নির্দিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমে এলপিজি গ্রাহকের আঙুলের ছাপ অথবা ফেস স্ক্যান করবেন। তারপর সেই বায়োমেট্রিক আইডেন্টিফিকেশন সংক্রান্ত তথ্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে আপলোড করবেন তাঁরা। ৩১ সে ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, জল্পনা চলছে, গ্যাস পরিষেবা দেওয়া সংস্থাগুলো দুই ভাবে এই বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। এলপিজি  সিলিন্ডার (LPG Cylinder) সংস্থার অফিসে গিয়ে বায়েমেট্রিক জমা করা যেতে পারে। আবার ডেলিভারি বয় নিজেই এই তথ্য নিতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে ডেলিভারি বয়দের ট্রেনিং দিতে হবে। তবে ইন্ডেন (INDEN) সূত্রে খবর, প্রথম পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বল যোজনা (Ujjwala Yojana) প্রকল্পের আওতাভুক্ত গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক আইডেন্টিফিকেশন হবে। তারপর ধাপে ধাপে সব গ্রাহকেরই বায়োমেট্রিক নেবে ইন্ডেন।  সংস্থা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই সব ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে এই সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় এক সপ্তাহ আগে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বেশ কিছু সিলিন্ডার ডিলারদের এই বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে জানায়। যদিও তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের তরফ থেকে ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম ও হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়ামকে গত ১৮ ই অক্টোবরই এই সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছিল।  তবে এই প্রক্রিয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বহু ধোঁয়াশা। কারণ এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩১সে ডিসেম্বরের মধ্যে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এই প্রক্রিয়া। ফলে এই বিরাট কর্মযজ্ঞের প্রস্তুতি ও তা শুরু করার সময়ের অভাব রয়েছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিককালে বায়োমেট্রিক তথ্য হাতিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার প্রবণতা বেড়েছে প্রতারকদের। এই আবহে গ্যাস সিলিন্ডার নেওয়ার সময় বায়োমেট্রিক দেওয়ায় গ্রাহকরা সমস্যায় পড়বেন কি না এবং গ্রাহকদের দুশ্চিন্তা দূর করাও একটা বড় ব্যাপার। অন্যদিকে, এই আবহে এলপিজি গ্রাহকদের ভোগান্তি পোহাতে হবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে চাপে পড়বেন ডিলাররাও।

উল্লেখ্য, বারেবারে লাইনে দাঁড়াতে তিতিবিরক্ত সাধারণ মানুষ। কখনও আধার কার্ডের সঙ্গে প্যান সংযোগ, কখনও এলপিজি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ব্যাঙ্কের পাসবুক সংযোগ, আবার কখনও রেশনে বায়োমেট্রিক তথ্য দেওয়ার লাইন। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় পক্ষই এই সামগ্রিক পদক্ষেপ নিয়ে যে ধোঁয়াশায় রয়েছে তা বলাই বাহুল্য। বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এই বায়োমেট্রিক ডেটা দেওয়া না হলে, আটকে যাবে ভর্তুকির টাকা। যার অর্থ বেশি দামে এলপিজি সিলিন্ডার কিনতে হবে আমজনতাকে।

তবে এদিকে সব ক্ষেত্রে কেন্দ্রের এই নির্দেশিকার বিষয়ে সরাসরি গ্রাহকদের জানানো হয়নি সরকার বা জ্বালানি সংস্থাগুলির তরফ থেকে। এই সংক্রান্ত কোনও জনস্বার্থমূলক প্রচারও হয়নি। গ্যাস বিক্রেতা সংস্থাগুলির দাবি, কেন্দ্রের তরফে তাদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমস্ত গ্রাহকদের কেওয়াইসি আপডেটের কথা বলা হয়েছে। না-হলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা। এত কম সময়ে বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের তথ্য যাচাই কী ভাবে হবে, তা নিয়ে সব মহলই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কারণ, এই নির্দেশের কথা সরাসরি গ্রাহকদের এখনও জানায়নি সরকার এবং তেল সংস্থাগুলি। হয়নি কোনও প্রচার। আবার ডিস্ট্রিবিউটরদের হাতেও এ জন্য তৈরি হওয়ার সময় প্রায় নেই। বিশেষত প্রবীণ গ্রাহকদের এতে হয়রানি হবে বলে অভিযোগ গ্রাহক মহলে। এই আবহে এই নির্দেশ ঘিরে ক্রমেই বাড়ছে ধোঁয়াশা এবং গ্রাহক এবং বিক্রেতা বা ডিস্ট্রিবিউটর  দুই মহলেই ছড়িয়েছে বিভ্রান্তি ।