Inflation | বিগত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে উঠেছে দেশের মূল্যবৃদ্ধি! সামান্য কোমল খুচরো মুদ্রাস্ফীতি!

Wednesday, May 15 2024, 7:20 am
highlightKey Highlights

একদিকে খুচরো মুদ্রাস্ফীতি যখন সামান্য কমেছে, সেখানে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতি বাড়ল প্রায় ০.৭৯ শতাংশ। এপ্রিলে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির হার ১.২৬ শতাংশে পৌঁছেছে। এপ্রিলে খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার রয়েছে ৭.৭৪ শতাংশ।


ভারতে বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির হার (Current inflation rate in India) বাড়লো হু হু করে।  এপ্রিল মাসে খুচরো মুদ্রাস্ফীতি যখন সামান্য কমেছে। তবে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতি বাড়ল প্রায় ০.৭৯শতাংশ। এপ্রিলে বিগত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে উঠেছে দেশের মূল্যবৃদ্ধি। তবে, খুচরো মুদ্রাস্ফীতির রিপোর্ট সামনে আসার পরে থেকেই আশায় বুক বাঁধছেন হোম লোন গ্রহীতারা। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে এপ্রিল মাসে খুচরো মুদ্রাস্ফীতি নেমে এসেছে ৪.৮৩ শতাংশে। যা কিনা মার্চ মাসে ছিল ৪.৮৫  শতাংশ। অর্থাৎ আগের মাসের থেকে সামান্যই কমেছে খুচরো মুদ্রাস্ফীতি।

কমলো খুচরো মুদ্রাস্ফীতি!

Trending Updates

সরকারের তরফে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির হার (Current inflation rate in India) সামান্য কমেছে তবে তা খুচরো মুদ্রাস্ফীতি। এই হার মার্চ মাসের তুলনায় অনেকটা কম। মার্চে যেখানে খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৪.৮৫ শতাংশ, তা এপ্রিলে নেমে এসেছে ৪.৮৩ শতাংশে।

বাড়ল পাইকারি মুদ্রাস্ফীতি!

এপ্রিল মাসে হু হু করে বাড়ছে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতি। পাইকারি মুদ্রাস্ফীতি বাড়ল প্রায় ০.৭৯ শতাংশ। এপ্রিলে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির হার ১.২৬ শতাংশে পৌঁছেছে। এপ্রিলে খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতির হার রয়েছে ৭.৭৪ শতাংশ। মার্চে দেশে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ০.৫৩ শতাংশ। তা মাত্র একমাসের মধ্যে প্রায় আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ধাতু, রাসায়নিক, প্লাস্টিক এবং রাবারের মতো পণ্যগুলিতে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে। কারণ এই জিনিসগুলো উৎপাদন খাতের সঙ্গে জড়িত। এগুলোর সাহায্যে উৎপাদিত জিনিসগুলো এরফলে ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে। খুচরো বাজারেও মূল্য বৃদ্ধি পায়। যার কারণে খুচরো মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে ও সব শেষে সাধারণ মানুষের পকেটে চাপ পড়ে।

বেড়েছে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি!

সরকারি ভাবে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের এপ্রিলে খাদ্য দ্রব্যের দাম এবং জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রভাব পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির উপর প্রভাব ফেলেছে। উৎপাদন খাত ও খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির হারও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এপ্রিলে খাদ্য পণ্যের মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৭.৭৪ শতাংশ। মার্চে খাবারের এই মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৬.৮৮  শতাংশ। আলু-পিঁয়াজের মতো নিত্যব্যবহার্য সাধারণ সবজির দামও ৭২ শতাংশ ও ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ICRA-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, মে-জুন মাসে পাইকারি মুদ্রাস্ফীতি ২ শতাংশ অতিক্রম করতে পারে। তিনি বলেন, 'গত কয়েক মাসে অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দামও এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার গত ১ বছরে বেড়ে ১.৩ শতাংশে পৌঁছেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসের তুলনায় ২০২৪ সালের এপ্রিলে এই পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার ১.৩ শতাংশ বেড়েছে। এর আগে মার্চ মাসে দেশের পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার ০.৫ শতাংশ বেড়েছিল। এর আগে গতবছর এপ্রিলে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি ০.৮ শতাংশ কমেছিল। দাবি করা হচ্ছে, অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, গ্যাস, খাদ্যপণ্য এবং বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির জেরেই এপ্রিল মাসে এই পাইকারি মূল্যস্ফীতির হার এতটা চড়েছে। 

এদিকে চলতি অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি ২০২৪(gdp of india 2024)  বৃদ্ধির পূর্বাভাস আগের ৬.৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.২ শতাংশ করল আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার। চলতি অর্থবর্ষে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিই গতি পাবে বলে অনুমান তাদের, আর তার মধ্যে ৬০ শতাংশের অবদানই থাকবে এশিয়ার, বলছে আইএমএফ (IMF)। গোটা বিশ্বের অর্থনীতির মধ্যে দ্রুত উপরে উঠে আসার দৌড়ে রয়েছে ভারত। চলতি অর্থবর্ষে এই দৌড়ে এক নম্বরে থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে ভারতেরই, বলছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার বা আইএমএফ। সংস্থার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ওকামুরা জানিয়েছেন, চলতি বছরেও গোটা বিশ্বের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসাবে এগিয়ে রয়েছে এশিয়ার দেশগুলিই।  বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ২০২৪ সালে ভারতের জিডিপি (india gdp in 2024) পূর্বাভাস বৃদ্ধি করে ৭.২ শতাংশ করার কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি।

 খুচরো মুদ্রাস্ফীতির রিপোর্ট সামনে আসার পরে থেকেই আশায় বুক বাঁধছেন হোম লোন গ্রহীতারা। এর আগে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সহ সমস্ত রেটিং এজেন্সিগুলি এপ্রিলের খুচরো মুদ্রাস্ফীতি ৫ শতাংশের নিচে অনুমান করেছিল। তবে এটি এখনও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্ধারিত ৪ শতাংশের সীমার উপরেই রয়েছে। যখন রেপো রেট নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় তখন খুচরো মুদ্রাস্ফীতি এই সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই খুচরো মুদ্রাস্ফীতি কম থাকার অর্থ হল রেপো রেটের ক্ষেত্রে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া। গত প্রায় ৭ বার অর্থাৎ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রেপো রেট স্থির রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা কমলে রেপো রেটেও ছাড় পাওয়া যেতে পারে বলে আশা রয়েছে। এদিকে রেপো রেটের সঙ্গে ব্যাঙ্কের ইএমআই-এর সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া যে সুদের হারে দেশের সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলোকে ঋণ দেয় তাকেই বলে রেপো রেট। এই রেপো রেট কম হওয়ার অর্থ হল ব্যাঙ্কও সাধারণ মানুষের উপর সুদের হার কম করবে। 




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File