করোনা ভাইরাসের জেরে ভারতে কমে গেল বিদেশী পর্যটকদের আগমন!‌ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রিপোর্টে উদ্বেগ ছড়ায়

Monday, November 14 2022, 10:59 am
highlightKey Highlights

মহামারির জেরে গোটা দেশ অচলায়তনে চলে গিয়েছিল। তার ওপর বিদেশী পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকায় প্রভাব বলে ভারতের অর্থনীতিতে


বিদেশী পর্যটকদের ভারতে ঢোকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় তা গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছিল দেশের অর্থনীতির ওপরও। তবে পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে তাই আবারও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে দেশ। তবে বিদেশী পর্যটকদের প্রবেশ অনেকটাই কমে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে করোনা ভাইরাস শীর্ষে থাকার সময় যে পরিমাণ বিদেশীর আগমন হয়েছিল তার অর্ধেকেরও বেশি কমে গিয়েছে ২০২১ সালে। 

করোনা সংক্রমণ এড়াতে ভারতে বিদেশী পর্যটকদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমে যাওয়ায় টান পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে

২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মাত্র ১৯ শতাংশ বিদেশীর এই দেশে আগমন হয়েছে। ২০২১-২২ সালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে, ২০২০-২১ সালের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মাঝে ভারতে এসেছেন ১৫.‌২৪ লক্ষ বিদেশী। ২০১৯-২০ সালের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, কোভিডের আগের পরিস্থিতিতে অর্থাৎ ২০১৯ সালে এই দেশে ১.‌০৯ কোটি বিদেশী পর্যটকদের আগমন হয়েছিল।

সাম্প্রতিক বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি বিদেশী এসেছেন ভারতে, যার সংখ্যা ৪.‌২৯ লক্ষ। এরপরই রয়েছে বাংলাদেশের নাম (‌২.‌৪ লক্ষ)‌, ব্রিটেন (‌১.‌৬৪ লক্ষ)‌, কানাডা (‌৮০,৪৩৭)‌, নেপাল (‌৫২,৫৪৪)‌, আফগানিস্তান (‌৩৬,৪৫১)‌, অস্ট্রেলিয়া (‌৩৩,৮৬৪)‌, জার্মানি (‌৩৩,৭৭২)‌, পর্তুগাল (‌৩২,০৬৪)‌ ও ফ্রান্স (‌৩০,৩৭৪)‌। ২০২১ সালে এই দশটি দেশ থেকে ভারতে ৭৪.‌৩৯ শতাংশ বিদেশী এসেছেন এবং বাকি দেশগুলি থেকে ভারতে এসেছেন ২৫.‌৬১ শতাংশ বিদেশী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্ট বলছে, '‌কোভিড-১৯ মহামারি থেকে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে এবং এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ফেব্রুয়ারি থেকে ক্রমাগত পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের (‌বিদেশী ও ভারতীয় উভয়ই)‌ অভ্যন্তরীণ ও বর্হিমুখী গতিবিধি হ্রাস করতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এরপর ভারতে পর্যায়ক্রমে নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্র পর্যায়ক্রমে ভিসা ও ভ্রমণের ওপর থেকেও বিধি-নিষেধ তুলতে শুরু করেছে।'‌

গত বছরের মার্চে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ১৫৬টি দেশের নাগরিকদের জন্য সাব-ক্যাটাগরি সহ ই-ভিসাও পুনরুদ্ধার করেছিল। বিদেশী আঞ্চলিক নিবন্ধন কর্মকর্তাদের দ্বারা গত বছর ৮২১ জন বিদেশীকে বিতাড়িত করা হয় দেশ থেকে। যাদের মধ্যে অধিকাংশ বিদেশী নাইজেরিয়া (‌৩৩৯)‌, বাংলাদেশ (‌২৪৬)‌ ও আফগানিস্তান (‌১০৫)‌-এর ছিল। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ২৫৮ জন বিদেশীকে বিতাড়িত করা হয় এবং যার মধ্যে অধিকাংশ ছিল বাংলাদেশের (‌১১৩)‌, আফগানিস্তান (‌৩৩)‌ ও কিরগিজস্তান (‌২২)‌-এর। একই ট্রেন্ড অনুসরণ করা হয়েছল ২০১৯ সালেও, সেই বছরে ভারত থেকে ১,২৩৩ জন বিদেশীকে বিতাড়িত করা হয়, যার মধ্যে অধিকাংশ নাইজেরিয়া (‌৫৪৭)‌, বাংলাদেশ (‌২৩০)‌ ও আফগানিস্তানের (‌৯৪)‌ বাসিন্দা ছিলেন।

২০২১-২২ সালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে স্বরষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে ২,৪৩৯টি দীর্ঘ মেয়াদী ভিসা প্রদান করা হয়েছে পাকিস্তান (‌২১৯৩)‌, আফগানিস্তান (‌২৩৭)‌ ও বাংলাদেশের (‌৯)‌ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে। এর পাশাপাশি, ৯ জন পাকিস্তানের বাসিন্দা ও ১৫ জন পাক মৎস্যজীবী তাঁদের সাজার মেয়াদ শেষ করেছে। তবে তাদের তখনই পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করা হয়েছে যখন পাকিস্তান ৮ জন ভারতীয় নাগরিক ও ২০ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে প্রত্যাবর্তন করিয়েছে এই দেশে।






পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File