লাইফস্টাইল

Ear Problem By Headphone | সারাক্ষণ কানে রয়েছে হেডফোন? হতে পারে বড় বিপদ!

Ear Problem By Headphone | সারাক্ষণ কানে রয়েছে হেডফোন? হতে পারে বড় বিপদ!
Key Highlights

অতিরিক্ত হেডফোন ব্যবহারে বড় ক্ষতি হতে পারে কানের। এমনকি হ্রাস পেতে পারে শ্রবণশক্তিও।

প্রযুক্তির যুগে প্রায় সকলের হাতেই মোবাইল ফোন। আর সেই সঙ্গে নতুন ভাবে যোগ হয়েছে হেডফোন (Headphone)। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাজারে এসেছে নানারকমের হেডফোন। ইন এয়ার (In Ear Headphone),  ওভার এয়ার (Over Ear Headphone), ক্লিপ অন (Clip On Headphone) ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের হেডফোন ক্রমশ বাজারে নিয়ে আসছে হেডফোন সংস্থাগুলি। গান শোনার জন্য হোক কিংবা কথা বলার জন্য, অধিকাংশ মানুষেরই নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে হেডফোন। তবে এর যেমন ভালো দিক রয়েছে তেমনই রয়েছে খারাপ দিকও। হেডফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে হতে পারে একাধিক শারীরিক সমস্যা।

একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি হেডফোন কোম্পানির বিক্রয় কেবল ভারতে বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৪.৭ শতাংশ। বর্তমানে গোটা পৃথিবী জুড়ে প্রায় কয়েক বিলিয়ন মানুষ দৈনিক হেডফোন ব্যবহার করে থাকেন। অনলাইন মিটিং (Online Meeting) থেকে শুরু করে গেম খেলা, গান শোনা, কথা বলা বর্তমানে প্রায় সব কিছুর জন্যই আমরা রোজ হেডফোন ব্যবহার করে থাকি। তবে এর বেশি ব্যবহারে হতে পারে বড় ক্ষতি। চিকিৎসকদের মতে, বেশ কয়েক ঘন্টার জন্য এক টানা হেডফোন ব্যবহারে প্রভাব পড়তে পারে  কানে। কান ব্যথা থেকে শুরু করে কানের পর্দাও হতে পারে নষ্ট। এছাড়াও কানে ইনফেকশন, মাথা ব্যথার মতো উপসর্গও দেখা যায় হেডফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে।

হেডফোন থেকে কানের সমস্যা | Ear Problems From Headphones :

১. মাথা ঘোরা | Dizziness :

 বেশিরভাগ মানুষই হেডফোন ব্যবহার করে থাকেন গান শোনার জন্য। অনেকে আবার রাতে ঘুম ভালো করার জন্য বা তাড়াতাড়ি ঘুম আনার জন্য কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনে থাকেন। কিন্তু এভাবে ঘুম তাড়াতাড়ি আসা বা ভালো ঘুম হওয়ার সম্ভাবনার থেকেও বেশি সম্ভাবনা থাকে শারীরিক অসুস্থতার। হেডফোনের বেশি ব্যবহারের প্রভাব আগে পরে মাথার ওপর। কারণ এর বেশি ব্যবহারের ফলে উচ্চ শব্দ কানের ক্যানালে (Ear Canal) চাপ বাড়ায় যার ফলে শুরু হয় মাথা ব্যথা। এছাড়াও এর ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক তরঙ্গ (Electromagnetic Waves ) মস্তিষ্কের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

২.  কানের সংক্রমণ | Ear Infection : 

অতিরিক্ত হেডফোন ব্যবহারের ফলে জানে নানা রকমের ইনফেকশন হয়ে থাকে । কারণ ইয়ারফোনগুলো সরাসরি কানে প্লাগ ইন (Plug In) করা থাকে, যার ফলে বাতাসের চলাচল আটকে যায় এবং ইয়ারফোনে থাকা ব্যাকটেরিয়া (Bacteria) প্রবেশ করে আমাদের কানে। এই সকল ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলেই কানে শুরু হয় ইনফেকশন।

৩. শ্রবণশক্তি হ্রাস | Hearing Loss :

 হেডফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে শ্রবণশক্তির। চিকিৎসকদের মতে, ৯০ ডেসিবেল বা তার বেশি মাত্রার শব্দ কানে গেলে বিনষ্ট হতে পারে শ্রবণশক্তি। যার ফলে এই মাত্রার নিচে হেডফোন ব্যবহার করা উচিত। এছাড়াও হেডফোন থেকে বেরোনো কম্পনের (Vibration) জন্য কানের ভেতরের কোষগুলি তাদের সংবেদনশীলতা হারাতে থাকে যার ফলে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়।

৪. টিনিটাস | Tinnitus :

 হেডফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে টিনিটাস (Tinnitus)-র মতো রোগ হতে পারে। কোনও ব্যক্তির যখন দীর্ঘ সময়ের জন্য মাথায় গর্জন বা রিং (Ring) -র আওয়াজ হতে থাকে, তখন সেই শব্দকে বলে টিনিটাস। যারা টিনিটাসে ভোগেন তারা স্বাভাবিকের থেকে কোনও শব্দের প্রতি উচ্চ সংবেদনশীলতা অনুভব করে থাকেন।

কীভাবে হেডফোনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কানকে রক্ষা করবেন | How To Protect Ears From The Harmful Effects Of Headphones :

রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে মোটামুটি সবার কানেই দেখা যায় হেডফোন। বর্তমানে ইন এয়ার হেডফোনের থেকে বেশি ব্যবহৃত হয় ব্লু টুথ হেডফোন (Bluetooth Headphone) ও ইয়ার পডস (Earpods)। তবে হেডফোন যেমনই হোক না কেন, এর অতিরিক্ত ব্যবহারে হতে পারে কানের ক্ষতি| ফলে দেখে নিন কী কী করলে এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কিচুটা রেহাই পাবেন।

১. ভলিউম কমিয়ে দিন | Turn Down The Volume :

হেডফোনের ভলিউম স্বাভাবিক রাখুন। বেশি ভলিউমের কারণে কানে বেশি চাপ ও প্রভাব পরে, যার ফলে ক্ষতিও হয় বেশি। ফলে হেডফোনের এমন ভলিউম রাখুন যাতে আপনি সেটির মাধ্যমে শুনতেও পারবেন আবার আপনার কানেও বেশি প্রভাব পড়বে না।

২. নয়েজ ক্যানসেলিং হেডফোন ব্যবহার করুন | Use Noise Canceling Headphones :

নয়েজ-বাতিলকারী হেডফোনগুলি বা নয়েজ ক্যানসেলিং হেডফোন (Noise Canceling Headphones ) সক্রিয় শব্দ নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার করে অবাঞ্ছিত পরিবেষ্টিত শব্দগুলিকে হ্রাস করে। এটি সাউন্ডপ্রুফিংয়ের (Soundproofing) মতো কৌশলগুলি ব্যবহার করে পরিবেষ্টিত শব্দগুলিকে কমিয়ে দেয়। নয়েজ ক্যান্সেলেশন অত্যধিক ভলিউম না বাড়িয়ে অডিও বিষয়বস্তু শোনা সম্ভব করে তোলে। যার ফলে বিশেষজ্ঞরা এই ধরণের হেডফোন ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

৩. ইয়ারবাড ব্যবহার না করার চেষ্টা করুন | Try Not To Use Earbuds :

 ইয়ারবাডগুলি কানের লোবকে (Earlobe) ঢেকে রাখে এবং কানের পর্দার কাছাকাছি থাকে। যার ফলে এটি কানের ভেতরে সরাসরি তরঙ্গ পাঠায়। অন্যদিকে, হেডফোনগুলি সরাসরি কানে কম্পন পাঠায় না। সুতরাং, হেডফোনের তুলনায় ইয়ারবাডের ব্যবহারে কানে বেশি ক্ষতি হয়।

এছাড়াও প্রতি ৩০ মিনিটে ৫ মিনিটের জন্য হেডফোন খুলে বিরতি নিন। এর ফলে কানে লাগাতার চাপ পড়বে না এবং ক্ষতি কম হবে। তবে কানে অত্যাধিক বা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা অনুভব হলে অপেক্ষা না করে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।