Dipa Karmakar | প্রথম ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসাবে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতলেন বঙ্গতনয়া! ইতিহাস গড়ে কী বললেন দীপা কর্মকার?
প্রথম ভারতীয় হিসাবে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতলেন দীপা। জিমন্য়াস্টিক্সের ভল্ট ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে সেরা পারফর্ম করে দীপা পদক ছিনিয়ে এনেছেন। সব মিলিয়ে ১৩.৫৬৬ স্কোর করেছিলেন তিনি।
'এভাবেও ফিরে আসা যায়'! রবিবার উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্তে ইতিহাস গড়ে এমনটাই প্রমাণ করলেন দীপা কর্মকার (Dipa Karmakar)। প্রথম ভারতীয় হিসাবে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতলেন দীপা। জিমন্য়াস্টিক্সের ভল্ট ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে সেরা পারফর্ম করে দীপা পদক ছিনিয়ে এনেছেন। সব মিলিয়ে ১৩.৫৬৬ স্কোর করেছিলেন তিনি। জিমন্যাস্টিক রিং (gymnastic rings) -এ উত্তর কোরিয়ার কিম সন হ্যাং ও জো কিয়ং বিয়লকে হারিয়ে দীপার এসেছে সোনা।
ইতিহাস গড়লেন বঙ্গ তনয়া দীপা!
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পদক জিতলেন দীপা। এর আগে ২০১৫ সালে হিরোশিমায় তিনি ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। ৯ বছর পর নিজেকেই ছাপিয়ে গেলেন দীপা। তাসখন্তে আয়োজিত চ্যাম্পিয়নশিপে দীপা ভল্ট ফাইনালে মোট ১৩.৫৬৬ স্কোর করেন। জিমন্যাস্টিক রিং (gymnastic rings)-এ তিনি হারিয়ে দেন দক্ষিণ কোরিয়ার দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে। ১৩.৪৬৬ স্কোর করে রুপো জেতেন কিং সন হ্য়াং ও ব্রোঞ্জ জেতেন জো কিয়ং রিয়ল। তার স্কোর ১২.৯৬৬।ইতিহাস তৈরি করে দীপা কর্মকার বলছেন, অস্ত্রোপচার ও নির্বাসন কাটিয়ে এই পারফরম্য়ান্স। ভারতের আর কোনও জিমন্য়াস্ট অতীতে করতে পারেনি। এই পদক অবশ্য়ই স্পেশ্য়াল। এই সাফল্যের জন্য দীপা তাঁর কোচ বিশ্বেস্বর নন্দীকে ধন্যবাদ জানান। দীপা ছাড়াও ভারতীয়দের মধ্যে আশিস কুমার (ফ্লোর এক্সরাসাইজের ব্রোঞ্জ, সুরাত ২০০৬), প্রণতি নায়েক ( ভল্টে জোড়া ব্রোঞ্জ, উলানবাটার ২০১৯, দোহা ২০২২) এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতেছেন। তবে সোনা এখনও পর্যন্ত আগরতলার বঙ্গকন্যা দীপা ছাড়া কেউ জিততে পারেনি।
এর আগে ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিক্সে প্রথম ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসেবে অলিম্পিক্সে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন দীপা। মহিলাদের ভল্ট ইভেন্টে প্রোদুনোভা ভোল্টে সারা বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন তিনি। যদিও অল্পের জন্য পোডিয়াম ফিনিশ করতে পারেননি ব্রাজিলে। দীপা শেষ করেছিলেন চতুর্থ স্থানে। কিন্তু সেখান থেকেই তাঁর পরিচিতি আরও ছড়িয়ে পড়ে। প্রসঙ্গত, চোট আঘাত বারবার কেরিয়ারে বাধা হয়েছে দীপার। ৩০ বছরের এই তরুণী ডােপ টেস্টে ব্যর্থ হয়েও প্রায় ২১ মাসের জন্য নির্বাসিত হয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক টেস্টিং এজেন্সি জানিয়েছিল, দীপা কর্মকারের শরীরে হাইজিনামিন নামের একটি নিষিদ্ধ পদার্থ পাওয়া গিয়েছে। এই উপাদানটি ফুসফুসে অক্সিজেনের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। গত বছর ১০ জুলাই পর্যন্ত এই নির্বাসন অব্যাহত ছিল। এই দুঃখের মধ্যেও দীপার কাছে এশীয় পদক নিঃসন্দেহে অক্সিজেনের মতো।
উল্লেখ্য, প্যারিস অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন ভারতীয় জিমন্য়াস্টরা। গত শুক্রবার ভারতীয় জিমন্যাস্টরা মোট ৪৬.১৬৬ স্কোর করেছিলেন। তালিকায় ১৬ নম্বর স্থানে শেষ করেছিলেন তারা। যার ফলে প্যারিস অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন ভারতীয় জিমন্য়াস্টরা। অর্থাৎ অলিম্পিক্সের মঞ্চে ভারতের কোনও জিমন্য়াস্টকেই দেখা যাবে না এবার। তবে সেই আক্ষেপের মাঝেই খুশির খবর দিলেন দীপা কর্মকার। প্রথম ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসেবে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতে ইতিহাস গড়লেন এই বঙ্গতনয়া।