Dhanteras 2025 | সম্পদের দেবী লক্ষীর কৃপা পেতে কী কী কিনবেন আজ? যমরাজের সাথেই বা ধন-ত্রয়োদশীর যোগ কোথায়? জেনে নিন

Saturday, October 18 2025, 3:02 am
highlightKey Highlights

হিন্দু পুরাণমতে, এই দিনে দেবতা ও অসুরদের সমুদ্র মন্থনের সময় জল থেকে উঠে এসেছিলেন ধন্বন্তরী। কথিত আছে, জল থেকে উঠে আসার সময় তাঁর একহাতে ছিল অমৃত ভরা কলসি ও অন্য হাতে ছিল আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের বই। তাই এই দিনটিকে ‘ধন্বন্তরী ত্রয়োদশী’ও বলা হয়। ভারতীয় শাস্ত্রে ধন্বন্তরী ‘আয়ুর্বেদের দেবতা’ হিসেবে পূজিত হন। ২০১৬ সালে আয়ুষ মন্ত্রক এই দিনটিকে 'জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস' হিসাবে ঘোষণা করে। ২০২৫ সালে ত্রয়োদশী তিথি দুই দিন ধরে থাকবে। ত্রয়োদশী তিথি শুরু: ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, শনিবার, দুপুর ১২টা ১৮ মিনিট থেকে। ত্রয়োদশী তিথি সমাপ্ত: ১৯ অক্টোবর, ২০২৫, রবিবার, দুপুর ১টা ৫১ মিনিট পর্যন্ত।


'ধন' কথার অর্থ হল 'ধনসম্পত্তি'। আর 'তেরাস' বলতে বোঝায় 'ত্রয়োদশী' অর্থাৎ তেরোতম দিনকে। কৃষ্ণপক্ষের তেরো নম্বর দিন, যেদিনটিতে ধনসম্পদ ক্রয় করতে হয় সেই দিনটিকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকেরা 'ধনতেরাস' হিসেবে পালন করে থাকেন। প্রতিবছর কার্তিক মাসে, দীপাবলির ঠিক আগে এই দিনটি পালন করা হয়।

পুরাণে ধনত্রয়োদশী:

হিন্দু পুরাণমতে, এই দিনে দেবতা ও অসুরদের সমুদ্র মন্থনের সময় জল থেকে উঠে এসেছিলেন ধন্বন্তরী। কথিত আছে, জল থেকে উঠে আসার সময় তাঁর একহাতে ছিল অমৃত ভরা কলসি ও অন্য হাতে ছিল আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের বই। তাই এই দিনটিকে ‘ধন্বন্তরী ত্রয়োদশী’ও বলা  হয়। ভারতীয় শাস্ত্রে ধন্বন্তরী ‘আয়ুর্বেদের দেবতা’ হিসেবে পূজিত হন। ২০১৬ সালে আয়ুষ মন্ত্রক এই দিনটিকে 'জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস' হিসাবে ঘোষণা করে।

আবার অনেকের মতে, রাজা হিমুর ছেলের ওপর অভিশাপ ছিল, বিয়ের ৪ দিনের মধ্যেই সাপের কামড়ে তাঁর মৃত্যু হবে। বিয়ের দিনই অভিশাপের কথা জানতে পারেন যুবরাজের স্ত্রী। স্বামীকে বাঁচাতে সে রাত্রে যুবরাজকে ঘুমোতে দেননি তিনি। নিজের যাবতীয় গয়না ঘরের দরজায় জড়ো করে রেখে দিয়েছিলেন রাজকন্যা। সারারাত প্রদীপও জ্বালিয়ে রেখেছিলেন দুয়ারে। এরপর নির্দিষ্ট সময়ে যমরাজ এসে পৌঁছলে, দরজায় রাখা সোনা রুপোর ওপর প্রদীপের আলোর ঝলকানিতে চোখ ধাঁধিয়ে গেলো তাঁর।

সব বাঁধা পেরিয়ে যখন যমরাজ যুবরাজের ঘরে পৌঁছলেন, দেখলেন সোনার পালঙ্কের ওপর বসে যুবরাজকে গল্প শোনাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী। যমরাজও সেই সোনার স্তুপের ওপর বসে গল্প শুনতে লাগলেন, রাত কেটে সকাল হলো। যুবরাজকে আর যমালয়ে নিয়ে যেতে পারলেন না যমরাজ। তাঁকে খালি হাতেই ফিরতে হলো। সেই থেকেই ত্রয়োদশীর এই পুণ্য দিনে ধনসম্পদের দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা শুরু হলো। ভারতের নানা প্রান্তে সিদ্ধিদাতা গণেশেরও পুজো করা হয় এদিন।

ধনতেরাস ২০২৫ :

২০২৫ সালে ত্রয়োদশী তিথি দুই দিন ধরে থাকবে। ত্রয়োদশী তিথি শুরু: ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, শনিবার, দুপুর ১২টা ১৮ মিনিট থেকে। ত্রয়োদশী তিথি সমাপ্ত: ১৯ অক্টোবর, ২০২৫, রবিবার, দুপুর ১টা ৫১ মিনিট পর্যন্ত। ধনতেরাস পুজো মুহূর্ত (সাধারণ): ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, সন্ধ্যা ৭টা ১৬ মিনিট থেকে রাত ৮টা ২০ মিনিট পর্যন্ত।

প্রদোষ কাল: ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিট থেকে রাত ৮টা ২০ মিনিট পর্যন্ত। বৃষভ কাল (স্থির লগ্ন): ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, সন্ধ্যা ৭টা ১৬ মিনিট থেকে রাত ৯টা ১১ মিনিট পর্যন্ত। বৃষভ কাল এবং লাভ যোগে কেনাকাটা করা সবচেয়ে শুভ।

এদিন কী কী কিনবেন?  

* এই দিনটিতে লক্ষ্মী-গণেশের ছবিযুক্ত রুপো বা সোনার কয়েন কেনা অত্যন্ত শুভ।

* আপনি চাইলে রুপো এবং তামার বাসনপত্রও কিনতে পারেন।

* সোনার যে কোনও রকমের গয়না তো কিনতেই পারেন।

* পকেটে টান থাকলে পড়াশোনার জিনিস যেমন পেন কিনতে পারেন।

* স্বস্তিক চিহ্ন কিনে দরজার সামনে লাগালে বা ঝাড়ু কিনলে তা সংসারে শুভ শক্তি বহন করে আনে।

 *টেলিভিশন, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ-এর মতো ইলেক্ট্রনিক্স-এর জিনিসও কিনতে পারেন এদিন। কিনতে পারেন নতুন গাড়িও।

*এছাড়া বাজেটে না পোষালে, কিনে নিতে পারেন ঝাঁটা। মৎস্যপুরাণ অনুযায়ী, ঝাঁটাকে দেবী লক্ষ্মীর প্রতীক মনে করা হয়। ধনতেরাসে ঝাঁটা কিনলে সমস্ত দুঃখ, দারিদ্র্য চিরদিনের মতো বাড়ি থেকে দূর হয়ে যায়।

কী কী কিনবেন না ?

 দেখে নিন ধনতেরাসের দিন কী কী কেনা উচিত নয়-

 *কোনওভাবেই এই দিনগুলিতে পুরোনো জিনিস কিনবেন না। মনে করা হয়, পুরোনো জিনিস কিনলে রাহুর প্রকোপে পড়তে হয়, যা দুর্ভাগ্য ডেকে আনে।

 *লোহা বা লোহার তৈরি জিনিস কেনার জন্য ধনতেরস মোটেও আদর্শ দিন নয়। তার পরিবর্তে এই দিন কিছু অ্যালুমিনিয়ামের জিনিস কিনতে পারেন।

 *কাচের সঙ্গে রাহুর সংযোগ রয়েছে তাই ধনতেরসে কাচ কেনা বা উপহার দেওয়া উচিত নয়।

*ধনতেরসের দিন থেকে দীপাবলি অবধি কিনবেন না কোনোধরনের নেশার বস্তু যেমন তামাক, মদ ইত্যাদিও।

ধনতেরাসে দান করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এদিন ঝাড়ু কেনা এবং মন্দিরে ঝাড়ু দান করা খুবই শুভ, মা লক্ষ্মী খুশি হন তাতে। কুণ্ডলীতে বৃহস্পতি শক্তিশালী করতে গরীবদের গরম কাপড় দান করতে পারেন এদিন। আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী চাল, চিনি, আটার মতো সাদা জিনিস দান করতে পারেন। এছাড়াও, এদিন ধন ও সমৃদ্ধির বর পেতে গরিব এবং অভাবী লোকেদের মিষ্টিও খাওয়াতে পারেন। এদিন দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে ভক্তিভরে ভগবান কুবেরের পুজো করবেন। সন্ধ্যায় মৃত্যুর দেবতা যমরাজের উদ্দেশ্যে দক্ষিণ দিকে যম প্রদীপ জ্বালাবেন। দেবীর বরে পরিবারের সুখ সমৃদ্ধি স্থায়ী হবে।




পিডিএফ ডাউনলোড | Print or Download PDF File