Chandrayaan 4 | চাঁদের মাটি থেকে পাথর খুবলে আনবে চন্দ্রযান-৪! চার বছর পরেই ফের চন্দ্রাভিযান ইসরোর! রয়েছে চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনাও!
ইসরোর পরবর্তী মিশনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০২৮ সাল নাগাদ চন্দ্রযান-৪ মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ হবে। চাঁদের মাটি থেকে পাথর এবং নমুনা সংগ্রহ করে আনবে চন্দ্রযান-৪। এর পর আগামী ১৫ বছরে চন্দ্রপৃষ্ঠে মানুষকে অবতরণ করানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইসরোর।
২০২৩ সালে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সর্বপ্রথম অবতরণ করে ইতিহাস গড়েছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ইসরো (ISRO)। এরপরই মহাকাশ বিজ্ঞানের পরিধি, আশা, স্বপ্ন যেন আরও বাস্তব হতে শুরু করেছে ভারতের। চন্দ্রযান৩ (Chandrayaan 3) এর পর সফল হয়েছে আদিত্য এল ১ (Aditya L 1) মিশন। প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে গগনযান (Gaganyaan) মিশনের জন্যও। এরই মধ্যে আরও এক সুখবর জানালো ইসরো। চার বছর পরেই পরবর্তী 'মুন মিশনে' যাবে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। অর্থাৎ ২০২৮ সালে চন্দ্রযান ৪ (Chandrayaan 4) উৎক্ষেপণ করা হবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
কবে চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে চন্দ্রযান ৪?
ইসরোর-র স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (SAC)-এর দায়িত্ব প্রাপ্ত নীলেশ দেসাই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ইসরোর পরবর্তী মিশন (next ISRO mission) এর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ২০২৮ সাল নাগাদ চন্দ্রযান-৪ মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ হবে। ওই অভিযানের আর এক নাম লুপেক্স (LUPEX) মিশন। ইসরো জানিয়েছে, এই মিশনের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে পাথর সহ চাঁদের মাটি থেকে কিছু নমুনা পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা। এই মিশন সফল হলে, ইসরোর অ্যাচিভমেন্ট (ISRO Achievement) এর পাশাপাশি বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে কৃতিত্ব স্থাপন করবে ভারত।
চন্দ্রযান ৪ মিশনের লক্ষ্য কী?
ইসরো তরফে জানানো হয়েছে, চন্দ্রযান-৩ চাঁদের বুকে যে কাজ শুরু করেছিল, সেই কাজ সম্পূর্ণ করবে চন্দ্রযান ৪ (Chandrayaan 4)। পাশাপাশি, আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ন্যস্ত তার উপর। চাঁদের মাটি থেকে পাথর এবং নমুনা সংগ্রহ করে আনবে চন্দ্রযান-৪। সেই কাজে সফল হলে চাঁদের মাটি থেকে নমুনা সংগ্রহকারী চতুর্থ দেশ হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নাম উঠবে ভারতের। ২০২৮ সালে মিশনের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়া হয়েছে বলে মহাকাশ গবেষণা সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ইসরোর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে ইসরোর পরবর্তী মিশন (next ISRO mission) অর্থাৎ চন্দ্রযান-৪ একটি সাড়ে তিনশো কেজি ওজনের একটি রোভার স্থাপন করবে। চন্দ্রযানটিকে চাঁদের মাটিতে নির্বিঘ্নে অবতরণের জন্য একটি ভারী ওজনের রেকটের মাধ্যমে উৎক্ষেপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, চন্দ্রযানটি এমন একটি স্থানে অবতরণ করা হবে, যা এখনও অনাবিষ্কৃত বলে ইসরোর তরফে করা হয়েছে দাবি। তবে, বিষয়টি বেশ চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ২০২৮ সালের মিশনটি বেশ কয়েকটি ধাপে পরিচালিত হবে। চন্দ্রযান-৪-কে সফলভাবে চন্দ্রপৃষ্টে অবতরণ করানো হবে প্রথম চ্যালেঞ্জ। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহের পর চন্দ্রযানটিকে চাঁদের কক্ষপথে বেশ কয়েকদিন রাখা হবে। পরে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার জন্য চন্দ্রযানটিকে যুক্ত করা হবে একটি মডিউলারের সঙ্গে। মিশনের চূড়ান্ত ধাপ হচ্ছে নির্বিঘ্নে চন্দ্রযান-৪-কে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা। তারপরেই চাঁদের মাটি থেকে সংগ্রহ করা পাথর ও অন্যান্য নমুনা নিয়ে চলবে গবেষণা। জানা গেছে, নমুনা সংগ্রহের জন্য চন্দ্রযান-৪-কে চাঁদের মাটিতে ১০০ দিন রাখা হবে।
প্রসঙ্গত, ইসরোর অ্যাচিভমেন্ট (ISRO Achievement) এর তালিকায় নাম লেখাতে চলেছে চন্দ্রযান ৪। তবে এই মিশনের পাশাপাশি চাঁদের বুকে মানুষ পাঠানোরও পরিকল্পনা রয়েছে ইসরোর। ২০৪০ সাল নাগাদ চন্দ্রপৃষ্ঠে ভারতীয় মহাকাশচারীদের অবতরণ করানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সংস্থার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেন নীলেশ। তিনি বলেন, আগামী ১৫ বছরে চন্দ্রপৃষ্ঠে মানুষকে অবতরণ করানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর এই মিশন সফল করার জন্য পাথর থেকে শুরু চাঁদ থেকে অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা খুব জরুরি। মিশনটি সফল হলে, গবেষণায় নতুন দিক খুলে যাবে বলেও মনে করছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।