জীবনী সাহিত্য

অপরাজেয় ,'সাইনা নেহওয়াল' | Biography of Saina Nehwal, an Indian badminton player

অপরাজেয় ,'সাইনা নেহওয়াল' | Biography of Saina Nehwal, an Indian badminton player
Key Highlights

সাইনা নেহওয়াল (জন্ম: ১৭ মার্চ, ১৯৯০) রাজীব গান্ধী খেলরত্নধারী ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। ৭ই এপ্রিলের সর্বশেষ র‍্যাংকিং অনুযায়ী বিশ্ব ব্যাডমিন্টন সংস্থার সর্বশেষ র‌্যাংকিংয়ে তিনি বিশ্বের ২ নং খেলোয়াড় হিসেবে আসীন রয়েছেন।

ভূমিকা | Introduction to Saina Nehwal

সাইনা নেহওয়াল একজন প্রসিদ্ধ ভারতীয় পেশাদার ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। তিনি বিশ্বের প্রাক্তন একনম্বর খেলোয়াড় যিনি 24 টিরও বেশি আন্তর্জাতিক খেতাব জিতেছেন, যার মধ্যে এগারোটি 'সুপারসিরিস' শিরোনাম ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যদিও ২০০৯ সালে তিনি বিশ্বের ২ য় স্থানে পৌঁছেছিলেন, তবে ২০১৫ সালেই তিনি বিশ্বের এক নম্বর খেতাবটি জয় করতে পেরেছিলেন। এই কৃতিত্বের পর থেকে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ভারতের একমাত্র মহিলা খেলোয়াড় যিনি স্বনামধন্য ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার প্রকাশ পাডুকোনের পর ভারতের দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তি অর্জনে সক্ষম হয়েছিলেন । সাইনা নেহওয়াল অলিম্পিকে তিনবার ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং দ্বিতীয়বারে তিনি দেশের জন্য একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতে এনেছিলেন।

জন্ম | Saina Nehwal’s birth

১৭ই মার্চ ১৯৯০, ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের হিসার শহরের একটি জাঠ পরিবারে সাইনা নেহওয়াল জন্মগ্রহণ করেছিলেন । বাবা-মা ড. হরভির সিং নেহওয়াল এবং উষা নেহওয়াল উভয়েই ছিলেন হরিয়ানার ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন। সাইনার বাবা কৃষি বিজ্ঞানে পিএইচডি করেছিলেন। 

বাল্যকাল এবং স্কুলজীবন | Childhood and school life of Saina Nehwal

স্কুল জীবনের প্রথম কয়েকটি বছর হিসারের ক্যাম্পাস স্কুল সিসিএস এইচএইউ-তে তিনি অতিবাহিত করেছিলেন । বাবা ড. হরভির সিং নেহওয়াল , চৌধুরী চরণ সিং হরিয়ানা এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত ছিলেন আর সেই সময় থেকেই আবাস বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ক্যাম্পাসে গড়ে উঠেছিল। পরবর্তীকালে  ড. হরভির সিং হায়দরাবাদের তৈলবীজ গবেষণা পরিদপ্তরে স্থানান্তরিত হয়ে গেলে সাইনাও সেখানেই তার শৈশবের বছরগুলো কাটিয়ে থাকেন। তিনি সেন্ট অ্যান'স কলেজ ফর উইমেন, হায়দরাবাদ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। হরিয়ানার স্থানীয় ক্লাব যেখানে তার মা খেলেছিলেন, সেখানে সাইনা প্রায়শই আসতেন আর তখন থেকেই ব্যাডমিন্টনের প্রতি সাইনার আগ্রহ বেড়ে যায়। ৮ বছর বয়সে, সাইনার ব্যাডমিন্টন প্রতিভা প্রথম চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন অন্ধ্র প্রদেশের ক্রীড়া কর্তৃপক্ষের কোচ পিএসএস নানী প্রসাদ রাও এবং সাইনার বাবা ড. হরভির সিং ও এই ব্যাপারে পূর্ণ সম্মতি দেখান। এ কথা অনস্বীকার্য যে বিশ্ব ব্যাডমিন্টন অঙ্গনে সাইনা নেহওয়াল এর এই আবদান ও কৃতিত্বে ড. হরভির সিং এবং মা উষা নেহওয়াল এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন যা সাইনাকে ভীষণভাবে প্রভাবান্বিত করেছিল ।

কেরিয়ার গঠনের দিনগুলি | Career formation days of Saina Nehwal

সাইনা প্রথমে অন্ধ্র প্রদেশের স্পোর্টস একাডেমী থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়ে পরবর্তীকালে হায়দরাবাদের পুলিলা গোপীচাঁদ একাডেমিতে চলে আসেন। ব্যাডমিন্টন ছাড়াও তিনি ছিলেন ক্যারাটে পারদর্শিনী যেখান থেকে তিনি ব্রাউন বেল্টের খেতাব ও অর্জন করেছিলেন। ২০০৫ সালে চীন দেশে থাকাকালীন নিরামিষ আহার গ্রহণ করা শুরু করেছিলেন। 

সাইনার গৌরব উত্থান | Rise to Glory of Saina Nehwal

সাইনা ২০০২ সালে অনূর্ধ্ব -১৩ বিভাগে সাব-জুনিয়র জাতীয় খেতাব অর্জন করেন । আর এটাই ছিল তাঁর প্রথম সাফল্যের স্বাদ। ২০০৪ সালে তিনি জুনিয়র জাতীয় খেতাবে ও সমানভাবে পারদর্শিতা দেখান ও জয়লাভ করেন। ৩ বছর পরে অর্থাৎ ২০০৭ সালে তিনি সিনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়নের মর্যাদা লাভ করেন । সাব-জুনিয়র, জুনিয়র এবং জাতীয় সিনিয়র বিভাগের একক ও ডাবলসে সায়নার মোট ১৪ টি জাতীয় খেতাব রয়েছে।

২০০৫ সালে, এই বিশিষ্ট ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার ভারতে এশিয়ান স্যাটেলাইট ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট জিতে প্রথম আন্তর্জাতিক খেতাব অর্জন করেছিলেন। ২০০৯-এ তিনি অদিতি মুতাতকর কে পরাজিত করে তার প্রথম ভারত 'গ্র্যান্ড প্রিক্স' খেতাব অর্জন করেছিলেন। এক বছর পরে, মালয়েশিয়ার ওয়াং মেউ চু'কে পরাজিত করে সাইনা ইন্ডিয়া ওপেন টাইটেল এ জয়লাভ করেন।

২০১৪ সালে, সাইনা নেহওয়াল পি.ভি সিন্ধুকে পরাজিত করে ভারত গ্র্যান্ড প্রিক্স সোনার খেতাব অর্জন করেছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি প্রথম বারের জন্য সৈয়দ মোদী আন্তর্জাতিক খেতাব জিতেছিলেন।

প্রধান সাফল্য | The main achievement of Saina Nehwal

সাইনা নেহওয়াল ২০০৬ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন, যেখানে তিনি প্রথম রাউন্ডে জিয়াং ইয়াংজিওয়ার কাছে পরাজিত হন। সে বছর, তিনি বিশ্ব জুনিয়র ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছেছিলেন এবং রানার-আপ হিসাবে নিজের অবদান রেখেছিলেন।

২০০৭ সালে, অভিষেক ম্যাচ হিসেবে সাইনা "অল ইংল্যান্ড ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপস" এ অংশগ্রহণ করেছিলেন তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে পরাজিত হয়ে গেছিলেন। পরে, জুলাইয়ে, তিনি বিশ্ব জুনিয়র ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় রাউন্ডে ও পরাজিত হন । সদা উৎসাহী সাইনা নেহওয়াল দমে না গিয়ে এর ঠিক এক বছর পরে, কমনওয়েলথ যুব চ্যাম্পিয়নশিপে গার্লস সিঙ্গলসে স্বর্ণপদক লাভ করেন এবং তারপরেই বিশ্ব জুনিয়র ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপার আসনটি পেয়েছিলেন। সাইনা ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন এবং কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট হয়ে তখনকার মতো তাঁর যাত্রা শেষ হয়েছিল । 

২০০৯ সালে, তিনি ইন্দোনেশিয়া ওপেন জিতেছিলেন এবং বিডাব্লুএফ সুপার সিরিজের শিরোনাম অর্জনকারী প্রথম ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন। সেই একই বছর আগস্টে, তিনি বিশ্ব ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেন যেখানে তিনি কোয়ার্টার ফাইনাল অবধি পৌঁছেছিলেন।

২০১০ সালে অল ইংল্যান্ড ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে উঠে ডেনমার্কের টাইন রাসমুসেনের কাছে হেরে যান সাইনা। পরে সেই বছর এপ্রিল মাসে, তিনি এশিয়ান ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদকে ভূষিত হয়েছিলেন এবং অক্টোবরে তিনি দিল্লি কমনওয়েলথ গেমসে যথাক্রমে উইমেনস সিঙ্গলস এবং মিশ্র দলে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন।

কেরিয়ার গ্রাফ | Saina’s career graph

২১ শে অক্টোবর ২০১২-তে, জার্মানিয়ের জুলিয়ান শেনককে হারিয়ে তিনি ডেনমার্ক ওপেন জিতেছিলেন।নেহওয়াল অল ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালেও পৌঁছেছিলেন তবে ৩ বারের ওয়ার্ল্ড জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন রতঞ্চনোক ইন্তাননের কাছে পরাজিত হন।

২রা জানুয়ারী ২০১৪ সালে নেহওয়াল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ব্রোঞ্জ পদক জয়ী পি.ভি. সিন্ধু কে হারিয়ে ২০১৪ সালে ভারত ওপেন গ্র্যান্ড প্রিক্স গোল্ড টুর্নামেন্ট জয়লাভ করেছিলেন। ২০১৪-র অস্ট্রেলিয়ান সুপার সিরিজের ফাইনালে, নেহওয়াল স্পেনের ক্যারোলিনা মারিনকে হারিয়ে বিজয়ীর শিরোপা লাভ করেন। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন চলাকালীন ফিটনেস ইস্যু এবং চোটের সমস্যার কারণে তিনি ২০১৪ কমনওয়েলথ গেমস থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন।

২০১৫ সালে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন নেহওয়াল ফাইনালে ক্যারোলিনা মেরানকে পরাজিত করে সৈয়দ মোদী ইন্টারন্যাশনাল জেতেন। তিনি অল ইংল্যান্ডের ফাইনালে পৌঁছান এবং প্রথম ভারতীয় মহিলা শাটলার হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। তবে ফাইনালে মারানের কাছে তিনি হেরে যান।২৯ শে মার্চ ২০১৫-তে, নেহওয়াল, রথনোক ইনটাননকে পরাজিত করে ইন্ডিয়া ওপেনে প্রথমবারের জন্য মহিলাদের একক শিরোপা লাভ করেন। ২ এপ্রিল সর্বশেষ বিডব্লিউএফ র‌্যাঙ্কিং প্রকাশিত হওয়ার পরে সাইনা নেহওয়াল বিশ্বের শীর্ষস্থানের অধিষ্ঠিত হওয়ার আশ্বাস পেয়েছিলেন যসর ফলে তিনি মহিলা বিভাগে এই কীর্তি অর্জনকারী প্রথম ভারতীয় খেলোয়াড় হিসাবে প্রতিপন্ন হয়েছিলেন । পরবর্তীকালে জাকার্তায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে নেহওয়াল দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন।

সাইনা নেহওয়াল ২০১৬ সালের শুরুর দিকে চোট পেয়েছিলেন তবে শেষ পর্যন্ত তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। তিনি ওয়াং শিক্সিয়ানকে হারিয়ে ব্যাডমিন্টন এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে উঠেছিলেন, তবে ওয়াং ইয়িহানের কাছে হেরে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছিলেন। ২০১৭ সালে নেহওয়াল পর্নপাউই ছোচুওয়ংকে ২২-২০, ২২-২০ স্কোর দিয়ে পরাজিত করে মালয়েশিয়া মাস্টার্স জিতেছিলেন । তবে চোটের কারণে সেই বছরের বেশিরভাগ সময় ভাল ফল করতে পারেননি তিনি; যদি ও পরে তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন । গ্লাসগোতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁর দ্বাদশ স্থান ছিল।

২০১৮ সালে সাইনা নেহওয়াল তাঁর অন্যতম বিশিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বী পি. ভি . সিন্ধুকে পরাজিত করার পরে কমনওয়েলথ গেমসের মহিলা একক ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্বর্ণ জিতেছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত মিক্সড টিম ইভেন্টে ভারতীয় দলকে আরও একটি স্বর্ণপদক দিয়েছিলেন। এরপরে তিনি এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন যা পুরো টুর্নামেন্টে তাঁর অর্জিত তৃতীয় পদক ছিল।

২০১৯ সালে তিনি ক্যারোলিনা মারিনের বিরুদ্ধে ইন্দোনেশিয়া মাস্টার্সের প্রথম বিডব্লিউএফ সুপার ৫০০ খেতাব অর্জন করেন।

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁর এই অবিশ্বাস্য ধারাবাহিক রেকর্ডটি শেষ হয়েছিল যখন মিয়া ব্লিচফেল্টের কাছে তিনি তিনটি প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে পরাজিত হয়ে গেছিলেন।

সাইনা ভারতের ব্যাডমিন্টনের ইতিহাসে শীর্ষস্থানীয় মহিলা এবং অন্যতম প্রতিভাবান এক খেলোয়াড় । ২০১২ সালে সাংবাদিক এবং সাবেক এনডিটিভি সম্পাদক টি. এস. সুধীর সাইনা নেহওয়ালের উপর একটি জীবনীগ্রন্থ রচনা করেছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবন এবং বিবাহ  | Personal & married life of Saina Nehwal

সাইনা নেহওয়াল এবং তার পরিবার বাড়িতে হরিয়ানভি ভাষায় কথা বলতেন। তিনি ফিল্মী বিনোদন জগতে, শাহরুখ খান এবং মহেশবাবুর ভক্ত । নেহওয়াল তাঁর জন্মস্থান হরিয়ানা রাজ্যে ব্যাডমিন্টন একাডেমি খোলার প্রক্রিয়ার কাজে বর্তমানে ব্যস্ত আছেন।তিনি ১৪ই ডিসেম্বর ২০১৮ এ এক বেসরকারি অনুষ্ঠানে সহকর্মী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় পারুপল্লী কাশ্যপের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। 

রাজনীতিতে প্রবেশ | Entering politics of Saina Nehwal

নেহওয়াল বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহের উপস্থিতিতে ২০ শে জানুয়ারি ২০২০ সালে দিল্লিতে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেন। তাঁর বোন আবু চন্দ্রনশু নেহওয়ালও এই দলে যোগ দিয়েছিলেন। বর্তমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একনিষ্ঠ এবং কঠোর পরিশ্রম ই সাইনা নেহওয়ালকে অনুপ্রাণিত করেছিল বিজেপিতে যোগদান করার জন্য। 

কৃতিত্ব এবং সম্মাননা | Achievements and honors of Saina Nehwal

সাইনা নেহওয়াল ভারতের হয়ে ব্যাডমিন্টনে বেশ কয়েকটি মাইলস্টোন অর্জন করেছেন। তিনি একমাত্র ভারতীয়, যিনি প্রতিটি বিডব্লিউএফ-এর প্রধান পৃথক ইভেন্টে, অলিম্পিকস এ, বিডাব্লুএফ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ এবং বিডাব্লুএফ ওয়ার্ল্ড জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপগুলিতে কমপক্ষে একটি পদক জিতেছেন। তিনি অলিম্পিক পদক জয়ী প্রথম ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। বিডাব্লুএফএফ ওয়ার্ল্ড জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ এ তিনি একমাত্র ভারতীয় যিনি বিডব্লিউএফ ওয়ার্ল্ড জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন। ২০০৬ সালে, সাইনা নেহওয়াল প্রথম ভারতীয় মহিলা এবং ফোর স্টার টুর্নামেন্ট জয়ী সর্বকনিষ্ঠ এশিয়ান হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন। সুপার সিরিজের খেতাব অর্জনকারী প্রথম ভারতীয় হিসাবেও তাঁর গৌরব অনস্বীকার্য ।

২০০৯ সালে জাকার্তায় অনুষ্ঠিত ইন্দোনেশিয়া সুপার সিরিজ বা ইন্দোনেশিয়া ওপেনে শীর্ষস্থানীয় চীনা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ওয়াং লিন-কে পরাজিত করে সকলের মনোযোগ আকৃষ্ট করেছিলেন তিনি। ২০১৪ সালের 'উবের কাপে' তিনি ভারতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন এবং অপরাজিত ছিলেন। তাঁর ক্রীড়া প্রতিভা ভারতকে ব্রোঞ্জ পদক জিততে সহায়তা করেছিল আর সেটি ছিল বিডব্লিউএফ প্রধান দলের ইভেন্টে ভারতের জয় করা প্রথম পদক। কমনওয়েলথ গেমসে নেহওয়াল দুটি একক স্বর্ণপদক (২০১০ এবং ২০১৮) জিতে প্রথম বিজয়ী ভারতীয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন।একজন অন্যতম সফল ভারতীয় খেলোয়াড় হিসাবে বিবেচিত, সাইনা নেহওয়াল কে ব্যাডমিন্টনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য সর্বদা কৃতিত্ব দেওয়া হয়। ৭ই এপ্রিল বিশ্ব ব্যাডমিন্টন সংস্থার সর্বশেষ র‌্যাংকিং অনুসারে তিনি বিশ্বের ২ নং খেলোয়াড় হিসেবে বর্তমানে তালিকায় রয়েছেন। ভারতের ১ম খেলোয়াড় হিসেবে তিনি অলিম্পিক পদক জয় করেন।২০১৬ সালে, ভারত সরকার তাঁকে (ভারতের) তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরষ্কার - পদ্মভূষণ উপাধি তে সম্মানিত করেছেন। এর আগে, দেশের শীর্ষ দুটি ক্রীড়া সম্মান, রাজীব গান্ধী খেলা রত্ন এবং অর্জুন পুরষ্কার দিয়ে ভারত সরকার তাঁকে ভূষিত করেছিলেন। একজন দক্ষ ক্রীড়াবিদ হওয়ার সাথে সাথে নেহওয়াল একজন সমাজ সেবাবিদ এবং সর্বাধিক দাতব্য অ্যাথলিটদের তালিকায় তিনি ১৮ তম স্থান দখল করেছেন।

পরিশিষ্ট | Conclusion

অলিম্পিকের মঞ্চে ব্যাডমিন্টনে ভারতবর্ষকে প্রথম পদক এনে দেওয়া সাইনা নেহওয়ালের কৃতিত্ব অনস্বীকার্য । কেরিয়ার জীবনের বেশ কিছু সময়ে তিনি বহুবার পরাজিত হয়েছেন কিন্তু সেই পরাজয় তাকে থামিয়ে রাখেনি। তিনি আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন এবং দেশকে সম্মানীয় পদক উপহার দিয়ে দেশের মান কে বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছেন। এই প্রতিভা বান ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় সাইনা নেহওয়াল এর সম্মানে একটি বায়োপিক অর্থাৎ আত্মজীবনীমূলক চলচ্চিত্র তৈরি করা হচ্ছে যা ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের আরও অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা করা যায়।

প্রশ্নোত্তর - Frequently Asked Questions

প্রথম কোন ভারতীয় ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার ভারতকে অলিম্পিকস এ মেডেল এনে দিয়েছিল?

সাইনা নেহওয়াল

সাইনা নেহওয়াল এর জন্মস্থান কোথায় ?

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের হিসার শহরের একটি জাঠ পরিবারে সাইনা নেহওয়াল জন্মগ্রহণ করেছিলেন ।

ব্যাডমিন্টন ছাড়াও সাইনা নেহওয়াল কোন খেলাতে পারদর্শী ছিলেন ?

ক্যারাটে

সাইনা নেহওয়াল রাজনীতিতে কোন দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন?

ভারতীয় জনতা পার্টি

সাইনা নেহওয়ালের অর্জিত যেকোনো দুটি ভারতীয় পুরস্কারের নাম কী কী ?

রাজীব গান্ধী খেলা রত্ন এবং অর্জুন পুরষ্কার।

সাইনা নেহওয়ালের আত্মজীবনীমূলক চলচ্চিত্রে কে নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন ?

বলিউড অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়া