Kalyani JNM Hospital Alligation: ডায়ালিসিসের পর এইচআইভি আক্রান্ত ৬! গঠিত হল তদন্ত কমিটি
নামী সরকারি হাসপাতালে ডায়ালিসিস করানোর পর এইচআইভি আক্রান্ত একাধিক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ। তদন্তে গঠন করা হলো কমিটি।
ফের বিতর্কে সরকারি হাসপাতাল। এক চিকিৎসা করাতে গিয়ে অন্য রোগে একসঙ্গে আক্রান্ত ৬ জন! এরকমই অভিযোগের আঙুল উঠলো সরকারি হাসপাতালের বিরূদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো তোলপাড় পরিস্থিতি নদিয়ায়। তৈরী করা হলো তদন্ত কমিটিও।
সূত্রের খবর, কল্যাণীর জেএনএম (JNM Hospital) হাসপাতালে ডায়ালিসিস (Dialysis) করানোর পর এইচআইভি (HIV) আক্রান্ত হয়েছেন ছজন। রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নদিয়ার সরকারি হাসপাতাল কল্যাণীর জেএনএম-এ (Kalyani JNM Hospital) গত কয়েক বছর ধরে পিপিপি মডেলে (PPP Model) ডায়ালিসিস ইউনিটও চলছে। ১০টি শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিটে ৫টি বেড সাধারণ রোগীদের জন্য, ৪টি বেড হেপাটাইটিস আক্রান্ত রোগীর জন্য ও ১টি বেড এইচআইভি আক্রান্তদের জন্য ব্যবহার করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এইচআইভি আক্রান্তদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে ডায়ালিসিস ইউনিটে (Dialysis Unit) কোনও স্বাস্থ্যবিধিই মানা হয়নি। এমনকি একাধিক রোগীর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে একই সিরিঞ্জ (Syringe)। পাশাপাশি, যে যন্ত্রের সাহায্যে ডায়ালিসিস করা হয়, সেই যন্ত্রটিও নাকি ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় অবস্থার সৃষ্টি হয় নদিয়ায়। ইতিমধ্যেই ঘটনা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে মেডিকেল কলেজ (Medical College) কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে গঠন করা হয়েছে ৮ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। মঙ্গলবারই একটি প্রাইমারি রিপোর্ট স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় মারফত স্বাস্থ্য ভবনে (Health Department) পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালের (College of Medicine and JNM Hospital) প্রিন্সিপাল অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় (Abhijit Mukherjee)।
তিনি আরও জানান, যে ব্যক্তি এই অভিযোগ করেছেন তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সরাসরি অভিযোগ না করে স্বাস্থ্যভবনে অভিযোগ করেছেন। যার ফলে স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। জানা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অভিযোগেই বাকি পাঁচজনের নাম জানা গেছে। যারা প্রত্যেকেই কল্যাণীর জেএনএম হাসাপাতালে ডায়ালিসিস করার পরে এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছেন। কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালের প্রিন্সিপাল অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের আশ্বাস, ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে স্বাস্থ্য দফতরে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠানো হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কারও বয়স ৫০, তো কারও আবার ৫৪। আক্রান্তদের দাবি, ২০১৬-১৭ সাল থেকে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল ডায়ালিসিসি করান তারা। শুধু তাই নয়, তিন মাস অন্তর সেরোলজি (serology) পরীক্ষাও হয় তাদের। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট আগে নেগেটিভ ছিল এখন তা আসে পজিটিভ! তারওপর হাসপাতালের এই অপরিচ্ছন্নতা ও নিয়ম ভঙ্গতা দেখে মাথায় হাত। কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই মারণ রোগ এইচআইভিতে আক্রান্ত তারা।
রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড: সুহৃতা পাল জানান, কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। কীভাবে এই ঘটনা হল, কতজনের হল, আক্রান্তদের বর্তমানে কোথায় চিকিৎসা করা হচ্ছে আর হাসপাতালের ডায়ালিসিস সেন্টার থেকেই এই ঘটনা হয়েছে কিনা সব কিছুর রিপোর্ট দিতে হবে কমিটিকে। উপাচার্যের কথা অনুযায়ী, ওই ডায়ালিসিস কেন্দ্র পরিদর্শন করে স্বাস্থ্যভবন ও কেন্দ্রীয় সরকারের টিম আগেই কিছু পরামর্শ দিয়েছিল। যা হাসপাতাল মেনে চলার চেষ্টাও করেছে। অন্যদিকে, স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষকর্তা জানান, দোষ প্রমান হলে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে অভিযুক্ত সংস্থাকে।
প্রসঙ্গত, কল্যাণী মেডিক্যালের ডায়ালিসিস কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন ঘটনা নয়। এর আগেও পরিকাঠামোগত নানান অবহেলার কারণে একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়। যার ফলে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসেই হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যদপ্তরের স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং অ্যান্ড সেক্টর রিফর্মস সেলের (SPSRC) অফিসাররা। হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিল কেন্দ্রীয় সরকারের টিমও। তখনই পরিষেবা প্রদানকারী বেসরকারি সংস্থার কর্তাকে সতর্ক করা হয়।
- Related topics -
- রাজ্য
- সরকারি হাসপাতাল
- নদীয়া
- কল্যাণী
- জেএনএম হাসপাতাল
- ডায়ালিসিস
- এইচআইভি