Electoral Bonds | ১২ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ডের অর্ধেকাংশই গিয়েছে বিজেপিতে! ফের সঠিক ভাবে বন্ডের তথ্য প্রকাশ করার নির্দেশ সুপ্রিমের!
লোকসভা ২০২৪ নির্বাচনের আগেই নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করলো নির্বাচন কমিশন। ১২ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকার ইলেকটোরাল বন্ডের অর্ধেকাংশেই গিয়েছে বিজেপি-র ঝুলিতে। তবে সঠিকভাবে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি বলে ফের রিপোর্ট চাইলো শীর্ষ আদালত।
'সুপ্রিম' ধমকের পর নির্বাচন কমিশনকে ১৩ই মার্চ, বুধবার নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bonds) সংক্রান্ত তথ্য হস্তান্তর করে এসবিআই (SBI)। এবার সেই তথ্যই লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ এর তারিখ (lok sabha election 2024 date) ঘোষণার আগে জনসমক্ষে আনলো কমিশন। রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলের নজরই সেই বন্ডের তথ্যের দিকে। ইলেক্টরাল বন্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১২ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকার ইলেকটোরাল বন্ডের অর্ধেকাংশেই গিয়েছে বিজেপি-র ঝুলিতে। এই মোট অর্থের এক তৃতীয়াংশে ভাঙানো হয়েছিল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়। এদিকে ১,৩৬৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনে শীর্ষে মার্টিন সান্তিয়াগোর সংস্থা ‘ফিউচার গেমিং অ্যান্ড হোটেল সার্ভিসেস’। দেখে নেওয়া যাক লোকসভা ২০২৪ (Lok Sabha 2024) নির্বাচনের আগে পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ড কে বেশি ভাঙিয়েছে।
নির্বাচনী বন্ড থেকে কোন দল কত টাকা পেয়েছে? । How Much Money has Any Party Received from Electoral Bonds ?
নির্বাচন কমিশনের প্রকাশ করা নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প (electoral bonds scheme) সংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় বছর ধরে অর্থাৎ যে সময় থেকে নির্বাচনী বন্ড স্কিম চালু হয়েছে, অধিকাংশ ফান্ড গিয়েছে বিজেপি-র খাতে। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় জনতা পার্টি মোট ৬ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা নির্বাচনী বন্ড মারফত পেয়েছে। এই হিসেব ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে কংগ্রেস। নির্বাচনী বন্ড থেকে প্রাপ্ত মূল্য ১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা। জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bonds) মারফত সংগৃহীত মোট অর্থের পরিমাণ ১৬ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা।
এক নজরে নির্বাচনী বন্ড থেকে লাভবান দলের তালিকা –
বিজেপি - ৬ হাজার ৫৬৫ কোটি
কংগ্রেস- ১ হাজার ১২৩ কোটি
তৃণমূল - ১ হাজার ৯৩ কোটি
বিজু জনতা দল (ওড়িশার শাসক দল) - ৭৭৪ কোটি
ডিএমকে (তামিলনাড়ুর শাসক দল) - ৬১৭ কোটি
বিআরএস - ৩৮৪ কোটি
YSRCP - ৩৮২ কোটি
তেলুগু দেশম পার্টি - ১৪৭ কোটি
শিবসেনা - ১০১ কোটি
আপ- ৯৪ কোটি
এনসিপি - ৬৪ কোটি
জিডিএস - ৪৯ কোটি
জিডিইউ - ২৪ কোটি
এসপি - ১৪ কোটি
নির্বাচনী বন্ড থেকে কোন দল কত টাকা ভাঙিয়েছে দেখুন বিস্তারিত - https://rb.gy/zlhpi3
প্রকাশিত নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প (electoral bonds scheme) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থ বর্ষের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বিজেপি ১৭.১ শতাংশ অনুদান বেশি পেয়েছে। নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অনুদান বাবদ ৬০,৬০,৫১,১১,০০০ টাকা পেয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস ২০২২-২৩ সালে মোট ৭৯.৯ কোটি টাকা অনুদান পায়। ২১-২২ সালের তুলনায় যা ১৬.৩ শতাংশ কম। ২১-২২ সালে কংগ্রেস ৯৫.৪ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছিল। এখনও পর্যন্ত সিপিআইএম (CPIM) নির্বাচনী বন্ড মারফত কোনও অনুদান গ্রহণ করেনি। বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে বাম দলটি।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য তুলে দিতে হবে এসবিআইকে। ধমক খেয়েই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য জমা দেয় স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। গত ৬ তারিখের মধ্যেই ওই তথ্য জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে। যদিও আরও সময় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছিল ব্যাঙ্ক। সব কিছু খতিয়ে দেখার জন্য ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চেয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ক। কিন্তু সোমবার সেই আবেদন নাকচ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ। নির্দেশ মেনেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই তথ্য জমা দিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। যা লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ এর তারিখ (lok sabha election 2024 date) ঘোষণার আগেই জনসমক্ষে আনলো নির্বাচন কমিশন।
তবে লোকসভা ২০২৪ (Lok Sabha 2024) নির্বাচনের আগে প্রকাশিত তথ্যে সন্তুষ্ট নয় শীর্ষ আদলত। এই আবহে এসবিআই-কে নোটিশ পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। সাংবিধানিক বেঞ্চ আজ বলে, আগের নির্দেশে এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল যে কে, কবে কত টাকার বন্ড কিনেছিল, এবং সেই বন্ড কোন রাজনৈতিক দল পেয়েছে, তা প্রকাশ করতে হবে। সেই সংক্রান্ত তথ্য বিশদে দেওয়া হয়নি। এই আবহে ১৮ মার্চের মধ্যে এসবিআই-এর থেকে জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে। শীর্ষ আদালতের কথায়, ঠিক ভাবে নির্দেশ মানেনি এসবিআই। এই আবহে ফের সঠিক ভাবে এই তথ্য প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।