Train Cancel | প্রবল বৃষ্টির জেরে রেললাইনে ধস! ব্যাহত ৫ জোড়া লোকাল ট্রেন! মেরামতি হলেও চিন্তায় রেল!
মঙ্গলবার থেকে লাগাতার বৃষ্টির জেরে কাঁকুড়গাছি রেল কেবিনের কাছে রেললাইনে ধস। কর্মব্যস্ত দিনে সাত সকালেই ব্যাহত হয় একাধিক ট্রেন। চরম ভোগান্তিতে পড়েন অফিস কর্মীরা।
অতি গভীর নিম্নচাপের জেরে রাতভর লাগাতার বর্ষণে ভিজেছে শহর কলকাতা (Kolkata)। প্রচন্ড তাপ থেকে কিছুটা স্বস্তি মিললেও বৃষ্টির জেরে এদিন সাত সকালেই চরম ভোগান্তিতে পড়লেন নিত্য ট্রেন যাত্রীরা। প্রবল বৃষ্টির জেরে ধসে গিয়েছে শিলায়দহ (Sealdah ) রেললাইনের পাশের মাটি। ব্যাহত হয় শিয়ালদহ মেন লাইনের ট্রেন চলাচল।
বর্তমানে বেশ যানজট দেখা দিচ্ছে কলকাতার রাস্তায়। এদিকে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই লাগাতার বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন শহর। যার ফলে রাস্তাঘাটে চলাচলে আরও বেড়েছে অসুবিধা। এই অবস্থায় ট্রেনেও নয়া ভোগান্তির জন্য কর্মব্যস্ত দিনে কপালে ভাঁজ পড়ে অফিস কর্মীদের। বুধবার সকালে প্রত্যেক স্টেশনেই দেখা গেল ট্রেন যাত্রীদের ভিড়। ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন শিয়ালদহ - নৈহাটি (Sealdah - Naihati) শাখার যাত্রীরা। এদিন সকাল থেকে এখনও পর্যন্ত রেললাইনে ধসের জেরে বাতিল হয়েছে ৫ জোড়া লোকাল ট্রেন!
এদিকে রেল সূত্রে খবর, গতকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টির জন্য শিয়ালদহ এবং বিধাননগর (Bidhannagar) স্টেশনের মাঝে আপ লাইনের ধারে ধস নামে। জানা গিয়েছে, সকাল ৫টা ৪৫ মিনিট নাগাদ কাঁকুড়গাছি রেল কেবিনের (Kankurgachi Rail Cabin) কাছে এই ধস নেমে বিপত্তি ঘটে। অন্যান্য দিনের মতোই এদিনও নির্দিষ্ট সময়ে শিয়ালদহ থেকে সমস্ত লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু কিছুটা পথ পেরোতেই ধসের কারণে থেমে যায় ট্রেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় শিয়ালদহ - নৈহাটি অর্থাৎ মেন লাইনের ট্রেন চলাচল। শিয়ালদহ - বিধাননগরের মাঝের লাইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লোকাল ট্রেন বাদেও বেশ কিছু ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ট্রেনও চলে এই লাইনে।
জানা গিয়েছে, কাঁকুড়গাছি রেল কেবিনের কাছে যেখানে এই ধস নামে তার পাশেই চলছিল নির্মাণ কাজ। এর জন্য খোঁড়া হয়েছিল গর্ত। রেললাইনের পাশে মাটিও কাটা হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু সারা রাত লাগাতার বৃষ্টির জেরে জল ভরে গর্ত হয়ে যায়। যার জেরে রেললাইনের পাশে মাটি আলগা হয়ে বিপত্তি ঘটে। যদিও ধসের খবর মিলতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বালির বস্তা ও মাটি ফেলে রেললাইন মেরামতির কাজ শুরু হয়। এরপর সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় শেষপর্যন্ত ধস সারিয়ে ফেললেন রেল কর্মীরা। তার পর ঘণ্টায় দশ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল শুরু করা হয়। ধস মেরামতির পর ট্রেনের ভার লাইন নিতে পারছে কিনা কিংবা ট্রেন চলাচলের ফলে লাইন বেঁকে যাচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা শুরু হয়। এই পরীক্ষা সফল হলেই পূর্ণ গতিতে রেল চলাচল শুরু হবে। রেল আধিকারিকদের আশা, অফিসে যাওয়ার সময় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হলেও অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে ট্রেন যাত্রায় সমস্যা হবে না।
কিন্তু, রেললাইনের ধস সারানো হলেও এখনই চিন্তামুক্ত নন রেল আধিকারিকরা।কারণ হাওয়া অফিস সূত্রে খবর বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত লাগাতার মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হবে। ফলে এর জেরে আবারও রেললাইনে বিপত্তি ঘটতে পারে। ইতিমধ্যেই গতরাতের বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমে গিয়েছে। রবীন্দ্র সরণী (Rabindra Sarani), সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ (Central Avenue), কলেজ স্ট্রিট (College Street), বেহালা (Behala), পার্ক সার্কাসের (Behala) বিভিন্ন জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জানা গিয়েছে, উত্তর ও দক্ষিণ মিলিয়ে কলকাতায় ৫৫টি রাস্তায় জল জমে রয়েছে। বেশিরভাগ রাস্তাতেই গোড়ালি সমান জল জমেছে।