ভয়াবহ ভূমিকম্পের জেরে সম্পূর্ণ দ্বীপরাষ্ট্র কেঁপে উঠল, জারি করা হয়েছে সতর্কতা
শুক্রবার ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পুরো ওশিয়ানিয়া মহাদেশের টোঙ্গা দ্বীপরাষ্ট্র।
ভয়াবহ ভূমিকম্পের জেরে ওশিয়ানিয়া মহাদেশের টোঙ্গা দ্বীপরাষ্ট্রের বিশাল বিশাল বিল্ডিং হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে। এমনকি সুনামির আশঙ্কা থাকায় তৎক্ষণাৎ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক একটি আবহাওয়া সংস্থা সতর্কতা জারি করে জানিয়েছে, মিনিটের মধ্যে ঘটতে পারে সুনামি!
বিপজ্জনক সুনামি ঘটার আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা কী বলছে আসুন তা জেনে নেওয়া যাক
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল প্রশান্ত মহাসাগরের নীচে। ফলে এই ভূমিকম্পের ফলে সুনামি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। দ্বীপরাষ্ট্রের এই ভূমিকম্পের মাত্রাও ছিল অতিরিক্ত। প্রায় ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ায় সুনামির সতর্কতা জারি করে দেওয়া হয়। একটি আবহাওয়া সংস্থার বার্তায় বলায় হয়, টোঙ্গার কাছে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে, যার ফলে পুরো টোঙ্গা কেঁপে ওঠে। ভূমিকম্প এতটাই আতঙ্ক ছড়ায় যে সরকার পক্ষ সতর্কবার্তা জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, "সাগরের নীচেই ভূমিকম্প হওয়ায় টোঙ্গায় সুনামির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। টোঙ্গা থেকে ১৩০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগরের নীচে ছিল ওই ভূমিকম্পের উৎসস্থল। এরপর প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কতা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আমেরিকান সামোয়াতেও সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।" সেইসঙ্গে তারা আরও জানিয়েছে, ভূমিকম্পের এপিসেন্টার থেকে ৩০০ কিলোমিটারে ব্যাসার্ধ এলাকার মধ্যে আসতে পারে সুনামি তরঙ্গ। এই সুনামিপ্রবণ এলাকার মধ্যে রয়েছে নিউয়ে ও টোঙ্গা।
মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পটি হয়েছে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার নীচে। ভূমিকম্পের পর টোঙ্গাবাসী রাতের অন্ধকারে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে নিরাপদ এলাকার উদ্দেশে পাড়ি দেন। সুনামি সতর্কতার সাইরেন বাজানো হয়। গত জানুয়ারি মাসেও গোটা টোঙ্গা দ্বীপে সুনামি আছড়ে পড়েছিল। সেবার সুনামি হয়েছিল হুঙ্গা টোঙ্গা হাপাই নামে এক ডুবন্ত আগ্নেয়গিরিতে ভয়ঙ্কর অগ্ন্যুৎপাতের কারণে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, "টোঙ্গা প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অফ ফায়ার থেকে মাত্র ৩৭ মাইল দূরে অবস্থিত। প্রশান্ত মহাসাগরের ঘিরে রয়েছে টেকটোনিক প্লেট। এই বলয় এলাকায় প্রায়শই টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তারপর এখানে বহু আগ্নেয়গিরি অবস্থিত। সেই কারণে এই অঞ্চলই পৃথিবীর সবথেকে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা।"
টোঙ্গা সরকার জানিয়েছে, ভাভাউ দ্বীপের নিয়াফু শহরের প্রায় ২০০ কিলোমিটার পূর্বে ১০ কিলোমিটার গভীরতায় ভূমিকম্পটি হয়েছে। এর ফলে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে পুরো দেশেই। গত জানুয়ারির ঘটনার অভিজ্ঞতা থেকে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়। গতবার প্রশান্ত মহাসাগরের প্রধান দ্বীর টোঙ্গাটাপুতে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। ছাইয়ের একটি পুরু স্তর পড়ে দ্বীপের সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল।
- Related topics -
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ
- ভূমিকম্প
- ওশিয়ানিয়া
- সুনামি
- সতর্কবার্তা