Independence Day 2023 | বুর্জ খলিফায় দেখা গেলোনা পাক পতাকা! ফুটে ওঠে তিরঙ্গা! স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী!
রাত ১২টা বাজতেই বুর্জ খলিফাতে ফুটে উঠলো ভারতের জাতীয় পতাকা। বেজে ওঠে জাতীয় সঙ্গীত। পতাকা উত্তোলন করে দেশবাসীর জন্য ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গোটা দেশ সেজে উঠেছে স্বাধীনতার ৭৬ বছর (Independence Day Of India) পূর্ণতার উৎসবে। ভারতের (India) সব রাজ্যের, সব শহরের, সব গ্রামর অলিতে গলিতে আজ সকালে দেশের পতাকা উত্তোলন করে উদযাপন করা হয় ভারতের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস। ঘড়ি ধরে ঠিক সাড়ে সাতটায় লালকেল্লায় (Red Fort) দেশ-বিদেশের অতিথিদের উপস্থিতিতে তেরঙ্গা উত্তোলন করেন দেশের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi)। সকাল সাড়ে দশটা কলকাতার রেড রোডে (Red Road in Kolkata) জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee)।
এদিন লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে অনুষ্ঠানের জন্য আগের থেকেই কড়া নিরাপত্তা মোতায়নের ব্যবস্থা করা হয়। ১৫ই আগস্ট মঙ্গলবার সকাল সাতটা নাগাদ লালকেল্লায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী মোদি। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে 'গার্ড অফ অনার' (Guard of Honour) দিয়ে সম্মান জানান ভারতীয় তিন সেনাবাহিনী। জাতীয় সংগীত (National Anthem Of India) গেয়ে শুরু করা হয় পতাকা উত্তোলনী উৎসব। কপ্টার থেকে করা হয় পুষ্প বৃষ্টি। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার পর দেশবাসীর জন্য ভাষণ (Independence Day Speech) দেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের যুবসমাজের প্রসঙ্গ উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। যুবসমাজকেই দেশের শক্তি বলে অভিহিত করলেন তিনি। সেই সঙ্গে আগামী এক হাজার বছরের পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশ যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই এক হাজার বছর পরে সোনালি ইতিহাস হিসাবে লেখা থাকবে। লালকেল্লার ভাষণে দেশবাসীকে গ্যারান্টি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রচুর ক্ষমতা নিয়ে এগিয়ে চলেছে ভারত। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে দেশ। সেই সঙ্গে তিনি জানান, মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা যথাসম্ভব কমানোর লক্ষ্য থাকবে সরকারের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত যখন কোনও কাজ করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় তখন সেই কাজ সম্পন্ন করেই থামে।
এদিন ভাষণে মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথাও উঠে আসে প্রধানমন্ত্রী মোদির মুখে। দেশজুড়ে ২ লক্ষ মহিলাকে লাখপতি করার জন্য ‘লাখপতি দিদি’ প্রকল্পের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। মহিলাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের কথাও জানালেন তিনি। নারীশক্তির নেতৃত্বেই ভারত এগিয়ে যাবে বলে আত্মবিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী। যেকোনও মূল্যেই ভারতের অখণ্ডতা রক্ষা করতে হবে বলে জানালেন তিনি।
এটা নতুন ভারত। এই ভারত হারে না, ক্লান্ত হয় না, থেমে যায় না।
অন্যদিকে, স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য সকাল দশটা নাগাদ কলকাতার রেড রোডে পৌঁছান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Subhash Chandra Bose) মূর্তিতে মাল্যদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর রেড রোডে পতাকা উত্তোলন করলেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। পুষ্পবৃষ্টি করে রাজ্য পুলিশের বিশেষ হেলিকপ্টার। অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ ক্যাপটেন কে এম রেড্ডি (Retired Group Captain KM Reddy) এই হেলিকপ্টার উড়িয়ে আনেন। পতাকা উত্তোলনের পর কৃতীদের হাতে পদক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর সাধারণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
উল্লেখ্য, ভারতের স্বাধীনতা দিবসে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন একাধিক রাষ্ট্রনেতা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (US President Joe Biden) থেকে শুরু করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Russian President Vladimir Putin) শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (French President Emmanuel Macron), প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও (former British Prime Minister Boris Johnson) ভারতের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছাবার্তা এসেছে মালদ্বীপ (Maldives), জাপান (Japan) ও নেপালের (Nepal) তরফ থেকেও।
প্রসঙ্গত, গতরাত ১২টার পরেই ভারতের পতাকা ফুটে ওঠে বুর্জ খলিফাতে (Burj Khalifa)। বেজে ওঠে ভারতের জাতীয় সঙ্গীতও। তবে তার আগের দিনই পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের (Pakistan's Independence Day) জন্য পতাকার আলোকসজ্জা দেখা যায়না বুর্জ খলিফাতে। নিজের দেশের পতাকা ওই ভবনে দেখার জন্য জড়ো হন বহু পাকিস্তানী। কিন্তু অবশেষে নিরাশ হতে হয় তাদের। এই বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, সন্ত্রাসবাদ, চরম আর্থিক সংকটের জেরে পশ্চিম এশিয়ার মুসলিম দেশগুলির সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক আর মধুর নেই। তবে কূটনীতির জেরে এই দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক হয়েছে সুমধুর। এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করেছে দেশ। এমনকি কয়েক মাস আগেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সফরে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফলত, এই আবহে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় বিল্ডিং বুর্জ খলিফায় ভারতের পতাকার আলোকসজ্জা ভারতীয়দের জন্য বেশ গর্বের বিষয়।