Rath Yatra 2024 | এক সময়ে তিনটে নয়, টানা হত ছয়টি রথ! জানুন রথযাত্রা উৎসব সম্পর্কে অজানা তথ্য!
সপ্তাহের শেষে পুরী থেকে শুরু করে বাংলার মাহেশ-সহ দেশের নানান জায়গায় ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে রথযাত্রা। উল্লেখ্য, এই বছর বিশেষ শুভ যোগে রথযাত্রা পালিত হতে চলেছে। ৫৩ বছর পর এমন যোগ পড়েছে রথযাত্রার দিনে।কথিত আছে, রথের রশি স্পর্শ করা বা ছুঁতে পাওয়া অত্যন্ত ভাগ্যের। কারণ প্রাচীন প্রথা মেনে, রথের মধ্যে অধিষ্ঠিত থাকে তেত্রিশ কোটি দেবদেবী। তাই রথের পাশাপাশি রশি স্পর্শ করলে তেত্রিশ কোটি দেবদেবীকে স্পর্শ করার সমান ।
আজ, শুভ রথযাত্রা ২০২৪ (Rath Yatra 2024)। সপ্তাহের শেষে পুরী থেকে শুরু করে বাংলার মাহেশ-সহ দেশের নানান জায়গায় ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে রথযাত্রা। উল্লেখ্য, এই বছর বিশেষ শুভ যোগে রথযাত্রা পালিত হতে চলেছে। ৫৩ বছর পর এমন যোগ পড়েছে রথযাত্রার দিনে।
২০২৪ রথযাত্রার তিথি ও তারিখ :
রথযাত্রা ২০২৪ এর তারিখ (Rath Yatra 2024 date) পড়েছে ৭ জুলাই রবিবার।একটি পঞ্জিকামত অনুসারে আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি পড়ছে, ৬ জুলাই অর্থাৎ ২১ এ আষাঢ় ১৪৩১ এ আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি শুরু। শনিবার ৬ জুলাই ভোররাত ৪-০৪ মিনিটে তিথি শুরু হচ্ছে। আর তিথিই শেষ হচ্ছে ৭ জুলাই অর্থাৎ ২২ আষাঢ়, ১৪৩১ এ। রথযাত্রা ২০২৪ এর তারিখ (Rath Yatra 2024 date) ৭ জুলাই রবিবার ৪.৩৩ মিনিটে শেষ হবে তিথি। একটি মতে বলা হচ্ছে, শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি ৭ জুলাই ভোর রাত ৪ টে ২৬ মিনিটে শুরু হবে। আর সেই তিথি শেষ হবে ৮ জুলাই ভোর ৪ টে ৫৯ মিনিটে। উদয়া তিথি অনুসারে রথযাত্রা পালিত হবে ৭ জুলাই। উল্টো রথ ২০২৪- রথযাত্রার উল্টোরথ পড়ছে ১৬ জুলাই। এদিকে, রথযাত্রা ঘিরে পুরীর মন্দিরে যে পর পর অনুষ্ঠান রয়েছে এবং সেই অনুষ্ঠানের নেপথ্যে যে তারিখ রয়েছে, তা দেখে নেওয়া যাক। দেবদেবীর 'সুনাবেশ' উপলক্ষ্যে বহুদা যাত্রা১৫ জুলাই। দেবদেবীকে সোনার গয়না পরিয়ে সুনাবেশ পালিত হবে ১৬ জুলাই। এক বিশেষ পানীয় দেবদেবীকে অর্পণ করার উৎসব ‘অধর পানা’ পালিত হবে ১৮ জুলাই। এরপর রথযাত্রার সমাপন দিবস নিলাদ্রী বিজে পালিত হবে ১৯ জুলাই।
জগন্নাথ রথযাত্রার গল্প :
একাধিক জগন্নাথ রথযাত্রার গল্প (jagannath rath yatra story) প্রচলিত আছে।কথিত আছে, রথের রশি স্পর্শ করা বা ছুঁতে পাওয়া অত্যন্ত ভাগ্যের। এই রশি ছুঁলে শতজন্মের পাপ একনিমেষে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় বলে মনে করা হয়। কারণ প্রাচীন প্রথা মেনে, রথের মধ্যে অধিষ্ঠিত থাকে তেত্রিশ কোটি দেবদেবী। তাই রথের পাশাপাশি রশি স্পর্শ করলে তেত্রিশ কোটি দেবদেবীকে স্পর্শ করার সমান। জগন্নাথ রথযাত্রার গল্প (jagannath rath yatra story) অনুযায়ী, প্রায় সাতশো বছর আগে রথযাত্রা পালিত হত দুটি পৃথক ভাগে। এমনকি সেই সময় তিনটে নয়, ছয়টি রথ টানা হত। জানা যায়, সেই সময় পুরীর মন্দির থেকে জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলভদ্রকে নিয়ে তিনটি রথে করে গুণ্ডিচা মন্দিরের দিকে নিয়ে যাওয়া হত। কিন্তু মাসির বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে পড়ত একটি বিশাল বলাগুণ্ডি নালা। মন্দির থেকে তিনটি রথ ওই নালার পার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হত, তারপর জগন্নাথ, বলভদ্র ও বোন সুভদ্রার মূর্তি রথ থেকে নামিয়ে নালা পার করানো হত। নালার অপরপ্রান্তে অপেক্ষারত সাজানো তিনটি রথে বসিয়ে আবার টানা হত। নিয়ে যাওয়া হত গুন্ডিচা মন্দিরের দিকে। তবে একটা সময় পর সেই নালা বুজিয়ে দেওয়া হয়। রাজা কেশরী নরসিংহ পুরীর রাজ্যভার গ্রহণের পর এই বলাগুণ্ডি নালা বুজিয়ে দেওয়া দেন। আর সেই সময়ের পর থেকেই রথযাত্রা তিনটি রথেই পালিত হয়।
এছাড়াও পুরীর রথযাত্রা নিয়ে একাধিক গল্প বেশ প্রচলিত আছে যা অবিশ্বাস্য হলেও বেশ মজার। যেমন– রথের দিন প্রতি বছর বৃষ্টি হয়। এখনও পর্যন্ত একটি বছরও কাটেনি, যে সময় রথের দিন বৃষ্টি হয়নি। রথ নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য-প্রস্তর মাপগুলি হাতেই নেওয়া হয়। গজ-ফিতের কোনও কিছু ব্যবহার করা হয় না। শুধু তাই নয়, পেরেক, পিন বা নাটবল্টু থেকে শুরু করে কোনও ধাতুর কিছু ব্যবহার করা হয় না। তিনটি রথ যেমন নিম কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়,তেমনি তিনটি রথের ভিতরে থাকে প্রায় ২০৮ কেজি সোনা দিয়ে সজ্জিত।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গেও ধুমধাম করে পালন করা হয় রথযাত্রার উৎসব। পুরীর রথ যাত্রা উত্সব বাংলায় সূচনা করেন মহাপ্রভু চৈতন্যদেব। নীলাচল থেকে প্রথম রথযাত্রার ধারা বাংলায় নিয়ে আসেন তিনি। এরপর থেকেই ওড়িশার পাশাপাশি বাংলাতেও রথের উত্সব প্রচলন শুরু হয়।
- Related topics -
- পুজো ও উৎসব
- রথযাত্রা
- পুরী
- জগন্নাথ মন্দির