Independence Day | দেশকে স্বাধীন করতে বীরের মতোন লড়ে ইংরেজদের ঘুম কেড়ে ছিলেন ভারতের মহিলারা! জানুন মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা
আজ, ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস। গোটা দেশ জুড়ে পালন হচ্ছে এই দিন। ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। উত্তোলন করা হয় দেশের পতাকা। ২০০ বছরের ব্রিটিশদের অতাচারের ইতি ঘটাতে, ভারতবাসীকে মুক্তি দিতে নিজেদের প্রাণের মায়া ত্যাগ করতে পিছু হটেননি স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। তবে সাহসী সংগ্রামীরা যে শুধু পুরুষ ছিলেন তা কিন্তু নয়, দেশবাসীকে পরাধীনতা থেকে উদ্ধার করতে বীরের মতোন এগিয়ে এসেছিলেন অসংখ্য নারীরাও।
আজ, ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস। গোটা দেশ জুড়ে পালন হচ্ছে এই দিন। ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। উত্তোলন করা হয় দেশের পতাকা। ২০০ বছরের ব্রিটিশদের অতাচারের ইতি ঘটাতে, ভারতবাসীকে মুক্তি দিতে নিজেদের প্রাণের মায়া ত্যাগ করতে পিছু হটেননি স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। তবে সাহসী সংগ্রামীরা যে শুধু পুরুষ ছিলেন তা কিন্তু নয়, দেশবাসীকে পরাধীনতা থেকে উদ্ধার করতে বীরের মতোন এগিয়ে এসেছিলেন অসংখ্য নারীরাও। আজ স্বাধীনতা দিবসে দেখে নিন এমন কিছু নারীর কথা, যাঁরা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শত অত্যাচারের পরও ইংরেজদের কাছে হার মানেননি।
বীণা দাস । Bina Das :
বীণা দেবীর বাবা ছিলেন একাধারে শিক্ষক অন্যদিকে একজন সমাজসেবীও। তাই সমাজ তথা দেশের জন্য কিছু করা তাঁর রক্তেই বইছিল। ১৯৩২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশন হলে সেই সময়ের বাংলার গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনের উপর গুলি চালিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি।
সরোজিনী নায়ডু । Sarojini Naidu :
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সরোজিনী নায়ডু ছিলেন একজন সক্রিয় যোদ্ধা। সরোজিনী নায়ডুকে 'দ্য নাইটিঙ্গল অফ ইন্ডিয়া' নামেও ডাকা হয়। জাতির জনক মহাত্মা গাঁধীর সঙ্গে ডান্ডি পদযাত্রায় যোগ দেন তিনি। মহাত্মা গাঁধী গ্রেফতার হওয়ার পর ধারাসন সত্যাগ্রহে নেতৃত্ব দেন তিনি। উল্লেখ্য, সরোজিনী নায়ডু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি নির্বাচিত হন। এছাড়া ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপালও হন তিনি।
ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সায়গল । Captain Lakshmi Sehgal :
পেশায় চিকিৎসক ছিলেন ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সায়গল। কিন্তু সেই চাকরি ছেড়ে তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজের রানি ঝাঁসি রেজিমেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা হিসেবে আজাদ হিন্দ ফৌজের নারী সংগঠন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীও ছিলেন ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সায়গল।
ঝাঁসীর রানি লক্ষ্মীবাঈ । Rani Lakshmibai :
ইংরেজদের শাসনকালে ১৮৫৭ সালের ভারতীয় বিদ্রোহের অন্যতম পথিকৃত ছিলেন লক্ষ্মীবাঈ। ভারতের ইতিহাতে বিপ্লবী নেত্রী হিসেবে তিনি চিরস্মরণীয় ব্যক্তি। দেশের সাহসী নারীদের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয় তাঁকে।
অরুণা আসাফ আলী । Aruna Asaf Ali :
অরুণা আসফ আলী ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সংগ্রামী ও একজন সমাজকর্মী ছিলেন। অরুণা আসফ আলীকে আন্তঃরাষ্ট্রীয় বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালে জওহরলাল নেহরু পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯৯৭ সালে ভারত সরকার তাকে দেশের সর্ব্বোচ্চ সম্মান ভারত-রত্ন উপাধিতে সম্মানিত করে আর ১৯৬৪ সালে তাকে আন্তঃরাষ্ট্রীয় লেলিন শান্তি পুরস্কারেও বিভূষিত করা হয়। তিনি দিল্লীর প্রথম মহিলা মেয়র ছিলেন। তিনি জাতীয় মহিলা ফেডারেশনের সভানেত্রীও ছিলেন। তিনি জাতীয় মহিলা কনফারেন্সের সাথে জড়িত থাকার কারণে দিল্লী কংগ্রেস কমিটীর সভানেত্রী হন।
ননীবালা দেবী । Nanibala Devi :
ননীবালা দেবী ছিলেন প্রথম মহিলা রাজবন্দি। ১৯১৫ সালে আলিপুর জেলে বন্দি বিপ্লবী রামচন্দ্র মজুমদারের কাছ থেকে গোপন তথ্য নিয়ে আসার জন্য তাঁর স্ত্রীর পরিচয় দেখা করেন পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে। বিভিন্ন সময়ে পলাতক বিপ্লবীদের তিনি নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিতেন ননীবালা দেবী। পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় তিনি পালিয়ে গেলেও পরবর্তীতে ধরা পড়ে যান। ব্রিটিশ পুলিশ তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় গ্রেফতার করে বেনারসের জেলে পাঠায়। ভয়ঙ্কর অত্যাচার করা হয় তাঁর উপর। যদিও শত অত্যাচারের পরও বিপ্লবী সংগঠনের গুপ্ত কোনও খবর তাঁর থেকে বের করতে পারেনি পুলিশ।
আভা দে । Abha Dey :
আভা দে তাঁর সাহস ও শারীরিক শক্তির জোরে জীবনকে তুচ্ছ করে দেশের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আভা দে তাঁর বন্ধু কল্যাণী দাসের সঙ্গে ‘ছাত্রীসংঘ’তে যোগদান করেছিলেন। তিনি চরম সাহসী একজন মহিলা ছিলেন। তিনি এমন একজন নারী যিনি ইংরেজ পুলিশের ঘোড়ার লাগাম টেনে প্রতিরোধ জানিয়ে ছিলেন। আভা দে ১৯৩০ সালে নারী সত্যাগ্রহ সমিতির সঙ্গে যুক্ত হন। এরপর তিনি বেআইনি শোভাযাত্রা ও সভায় যোগদান করার অপরাধে গ্রেফতার হন এবং প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দী থাকেন।
স্বাধীনতা দিবস দিনটাকে গর্বের সঙ্গে পালন করে আসমুদ্রহিমাচল। সারা ভারতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্মরণ করা হয় দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। যাঁদের জন্য ইংরেজদের অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছিল আমাদের দেশ ভারতবর্ষ। দেশকে স্বাধীন করার পিছনে যে বিপ্লবীদের নাম করা হয়, তাঁদের মধ্যে বাদ থাকেন না নারীরাও। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীদের ভূমিকাও অনস্বীকার্য। দেশের জন্য তাঁরা উৎসর্গ করেছিলেন নিজেদের জীবনও। সেই স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শতকোটি প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানায় বেঙ্গলBYTE।
- Related topics -
- দেশ
- ভারত
- সাহিত্য
- স্বাধীনতা দিবস
- স্বাধীনতা সংগ্রামী