Winter Face Mask | শীতে ক্রিম লাগানোর পরও ত্বক থাকছে শুষ্ক? শীতের ফেস মাস্ক লাগিয়ে আদ্রতা বজায় রাখার সঙ্গে উজ্জ্বল করুন ত্বক!
প্রাকৃতিক উপায়ে বানানো শীতের ফেস মাস্ক ত্বক আদ্র রাখার সঙ্গে ত্বক করে উজ্জ্বল। দেখুন কীভাবে বানাবেন ফেস মাস্ক।
শীতের আমেজে শুষ্ক ত্বকের সমস্যায় ভুগে থাকেন সকলেই। শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বকের অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে যায়। আবার একগাদা টাকা দিয়ে কেনা ময়শ্চারাইজার অনেক সময় ত্বকের সমস্যা আরও বাড়ায়। এই সময়ে ত্বক আদ্র রাখার জন্য সবাই নানারকমের ক্রিম মেখে থাকেন। তবে অনেকক্ষেত্রে তাতেও ত্বক শুষ্কতার সমস্যা দূর হয়না। এক্ষেত্রে ত্বকের আদ্রতা বাড়িয়ে ত্বক উজ্জ্বল করে তুলতে বেশ কার্যকরী ফেস মাস্ক (Face Mask)।
শীতকালে ত্বকের বাড়তি সুরক্ষা নিতে শীতের ফেস মাস্ক (Winter Face Mask) বেশ ভালো কাজ করে। তবে এটা মাথায় রাখা দরকার, গ্রীষ্ম ও শীতকালের ফেস মাস্ক আলাদা হয়। কারণ দুই ঋতু-আবহাওয়া ভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে আমাদের ত্বকে। শীতকালে আবহাওয়া রুক্ষ হয়ে যাওয়ার জন্য এই ঋতুতে এমন ফেস মাস্ক (Face Mask) ব্যবহার কোরতে হবে যা ত্বককে আদ্র রাখে। উল্লেখ্য, বাজারচলতি ফেসপ্যাক সেই রূপ ফল দিতে পারে না, যা হোমমেড ফেসপ্যাক পারে। প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক ত্বকের জেল্লা বাড়াতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি ত্বককে নরম ও কোমল করে তুলবে। দেখে নিন কীভাবে বিভিন্ন উপায়ে বানাবেন শীতের ফেস মাস্ক (Winter Face Mask)।
কুমড়োর ফেস মাস্ক :
কুমড়োর মধ্যে থাকা ভিটমিন এ (vitamin A), ই (vitamin E), সি (vitamin C) ও প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। এই উপাদান দিয়ে তৈরী ফেসমাস্ক বানানোর জন্য প্রথমে দুই টেবল চামচ কুমড়োর পিউরির সঙ্গে আধ চা চামচ মধু ও আধ চা চামচ দুধ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এবার এই মাস্ক ১০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। এরপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার এই মাস্ক ব্যবহার করলে দারুণ উজ্জ্বল দেখাবে ত্বক।
কলা এবং মাখন:
শীতকালে ত্বককে মোলায়েম রাখতে এই মাস্কের জুড়ি মেলা ভার। এই মাস্ক বানানোর জন্য প্রথমে কলা এবং মাখনকে ভাল করে মিশিয়ে নিন। তারপর মুখে মিশ্রণটি লাগিয়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। শীতকালে ত্বককে আদ্র রাখবে এই ফেস মাস্ক।
অ্যালোভেরা জেল এবং আমন্ড ওয়েল:
আমন্ড ওয়েল বা বাদামের তেল এবং অ্যালোভেরা জেল, দুই উপাদান ত্বকের দুর্দান্ত ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। তাই এই দুই উপাদানের মিশ্রনও ত্বকের জন্য অসাধারণ ফেস মাস্কের কাজ করবে।
চকোলেট এবং মধু :
চকোলেট খেতে প্রায় সবারই ভালো লাগে। তবে কেবল সুস্বাদের জন্যই নয়, এই চকলেট দিয়ে তৈরী করা যায় ফেসমাস্কও। ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারি চকোলেট। এই ফেসমাস্ক বানানোর জন্য প্রথমে ৪-৫ টি চকোলেটের টুকরোকে গলিয়ে নিন। এরপর এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে নিন। শীতের রুক্ষতা গায়েব হবে এই ফেসমাস্কের দ্বারা।
দুধ এবং মধু:
মধুর ফেস মাস্ক (Honey Face Mask) ত্বকের জন্য যে উপকারী তা কমবেশি সকলেই জাননেন। এই প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে নরম এবং আদ্র করে তোলে।মধুর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ কোনওরকম ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে ত্বককে রক্ষা করে।মধুর ফেস মাস্ক (Honey Face Mask) বানানোর জন্য দুধ এবং মধু মিশিয়ে একটি ফেস প্যাক বানান। এরপর তা মুখে, গলায় ভাল করে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। দুধ এবং মধু দুটোই ত্বকের নরম বজায় রাখতে ভীষণ উপকারী।
নারকেল তেল এবং মধু:
শীতে ত্বকের জন্য নারকেল তেলের বিকল্প নেই। প্রতিটি বাড়িতেই থাকা এই জিনিসটি একটি অসাধারণ ময়শ্চারাইজার। নারকেল তেলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে সেই ফেস প্যাক মুখে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। শীতে অন্য ময়শ্চারাইজার লাগবেই না।
পেঁপের ফেস মাস্ক :
পাকা পেঁপে খেলে একাধিক রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আর পাকা পেঁপে মুখে মাখলেও জেল্লা ফেটে পড়ে। ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে এবং ত্বককে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে পাকা পেঁপে। এক্ষেত্রে পাকা পেঁপে দিয়ে অনেকভাবে ফেসমাস্ক বানানো যায়। দেখে নিন কী কী উপায়ে পেঁপের ফেস মাস্ক (Papaya Face Mask) বানাবেন।
- মধু দিয়ে- শুষ্ক ত্বকে পাকা পেঁপের সঙ্গে মধু মিশিয়ে মাখতে পারেন। এতে ১ চামচ কাঁচা দুধ মেশাবেন। এই ফেসপ্যাক ত্বককে নরম ও মসৃণ করে তুলতে সাহায্য করে। পাশাপাশি দাগছোপ দূর করে।
- লেবুর রস দিয়ে - ব্রণর সমস্যা দূর করতে পাকা পেঁপের সঙ্গে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে মাখুন। এতে চন্দনের গুঁড়ো বা মুলতানি মাটিও মেশাতে পারেন। ১০-১৫ মিনিট রেখে সাধারণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- শসা ও কলার সঙ্গে - মুখে তরতাজা ভাব ফিরিয়ে আনতে ফলের ফেসপ্যাক সবচেয়ে ভাল। পাকা পেঁপে, শসা ও কলা একসঙ্গে পেস্ট করে মসৃণ ফেসপ্যাক বানিয়ে নিন। এটি ফেসপ্যাক ত্বকের অতিরিক্ত তেল পরিষ্কার করে জেল্লা বাড়িয়ে তোলে।
- ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে- ওপেন পোরসের সমস্যাও দূর করে পাকা পেঁপে। এই পেঁপের ফেস মাস্ক (Papaya Face Mask) বানানোর জন্য পেঁপের সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিন। এই ফেসপ্যাক মুখে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১ বার এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে কমবে ওপেন পোরস।
শীতকাল মানেই রুক্ষ ত্বকের সমস্যা। এই সময়ে ত্বক আদ্র না থাকলে ত্বক ফেটে যাওয়া, বলি রেখা পরে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। তাই এই সময়ে বিশেষ যত্ন একান্ত প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে যাদের দিনের বেশিরভাগটাই শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অফিসে কাটে তাদের ত্বক নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে সামান্য কারণে। তবে এই শীতে বরং ভরসা রাখুন ঘরোয়া উপকরণে। এতে ত্বক ভালো থাকবে এবং শীতের শুষ্কতা মোকাবিলায় খরচও কম পড়বে।